parbattanews

বিজিবি একটি দক্ষ, চৌকষ এবং প্রশিক্ষিত বাহিনী: বিএসএফ মহাপরিচালক

নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান:

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের ‘বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড কলেজ’ এর ৯০তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বাইতুল ইজ্জতে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী’র (বিএসএফ) প্রধান শ্রী কে কে শর্মা, আইপিএস।

কুচকাওয়াজ উপভোগ করেন চট্টগ্রাম অঞ্চলের সামরিক ও বিজিবির উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ, স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসন ও পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ, বোমাং সার্কেলর রাজা প্রকৌশলী উচপ্রু চৌধুরীসহ গণ্যমান্য/স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ এবং নবীন সৈনিকদের অভিভাবকবৃন্দ।

বিএসএফের মহাপরিচালক তার বক্তৃতায় গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। একইসঙ্গে তিনি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সকল বীর শহীদদেরকে, স্বাধীনতা যুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ, শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক নুর মোহাম্মদ শেখ এবং মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদানের জন্য এ বাহিনীর আটজন বীর উত্তম, ৩২ জন বীর বিক্রম এবং ৭৭ জন বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিতদেরও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।

তিনি বিজিবি বাহিনীকে একটি দক্ষ, চৌকষ এবং প্রশিক্ষিত বাহিনী হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, একটি বলিষ্ঠ ও দক্ষ বাহিনী গড়ে তোলার জন্য সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন কঠোর প্রশিক্ষণ, সৎ চরিত্র, মানসিক দৃঢ়তা, অধ্যবসায়, শৃঙ্খলাবোধ এবং সঠিক নেতৃত্ব।

সৈনিক জীবনে আনুগত্য, শৃঙ্খলা, ধর্মীয় বিশ্বাস, মানবিক এবং নৈতিক মূল্যবোধের অনুশীলনের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন বিএসএফ মহাপরিচালক। তিনি সকলকে সর্বদা উর্দ্ধতন কর্মকর্তার আদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও আনুগত্যশীল থাকার এবং নিজেদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বসুলভ মনোভাব বজায় রাখার উপদেশ দেন।

নবীন সৈনিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, শৃঙ্খলা হচ্ছে সৈনিকের মূল পরিচিতি। আদেশ ও কর্তব্য পালনে যে কখনো পিছপা হয় না সেই প্রকৃত সৈনিক। সততা, বুদ্ধিমত্তা, নিভর্রযোগ্যতা, আনুগত্য, তেজ ও উদ্দীপনা একটি বাহিনীর শৃঙ্খলা ও পেশাগত দক্ষতার মাপকাঠি। নবীন সৈনিকদের দৃপ্ত পদক্ষেপ আজকের এই সমাপনী কুচকাওয়াজের মাধ্যমে তারই প্রতিফলন হয়েছে।

নবীন নারী সৈনিকদের উদ্দেশে শ্রী কে কে শর্মা বলেন, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে মহিয়সী নারীদের অংশগ্রহণ, অবদান ও আত্মত্যাগ অবিস্মরণীয়। আজ নারীরা বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যথাযথ যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতার স্বাক্ষর রাখছেন। তিনি বিজিবিতে অন্তর্ভুক্ত নবীণ নারী সৈনিকদের জীবন গড়ার দৃপ্ত শপথে বলীয়ান হয়ে কঠোর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যোগ্য বিজিবি সদস্যে পরিণত হওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি ৯০তম রিক্রুট ব্যাচের ৪৩৩ জন নবীন সৈনিকদের মধ্যে বিষয়ভিত্তিক ১ম স্থান অর্জনকারী ও সর্ববিষয়ে শ্রেষ্ঠ নবীন সৈনিক এর মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। এর মধ্য ৯৭ জন নারী সৈনিক রয়েছে। ৩’য় ব্যাচে এই ৯৭ জন নারী সৈনিক অংশ নিয়েছে। এর আগে নারী সৈনিকদের আরো দুটি ব্যাচ এই কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বের হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের আগস্টে বিএসএফ এর আমন্ত্রণে বিএসএফ প্রশিক্ষণ একাডেমীতে প্রধান অতিথি হিসেবে তাদের প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন বিজিবির তৎকালীন মহাপরিচালক। এরই ধাবাহিকতায় দুই দেশের বন্ধুত্বের নিদর্শন স্বরূপ এবার বিএসএফ মহাপরিচালক আমন্ত্রিত হয়ে বিজিবি প্রশিক্ষণ সেন্টারে সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করলেন।

Exit mobile version