parbattanews

বিজুকে ঘিরে পাহাড়ে উৎসবের মেলা

Rangamati Biju mela pic1

স্টাফ রিপোর্টার:

পার্বত্যাঞ্চলের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ১৪টি নৃগোষ্ঠীদের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব বিজুকে ঘিরে উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে পাহাড়ি জনপদ। রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান- এই পার্বত্য তিন জেলা এখন যেন উৎসবের নগরী। পাহাড়ের সব জায়গায় বইছে আনন্দের বন্যা। সৃষ্টি হয়েছে পাহাড়ি-বাঙালিসহ সব ধর্ম, বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সম্প্রীতির মিলন ক্ষেত্র। বসানো হয়েছে মেলা আর উৎসবের আসর। মেলায় চলছে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য-সঙ্গীত, খেলাধুলা এবং কৃষ্টি-সংস্কৃতি ও পণ্য প্রদর্শনী।

এবার উৎসবটিকে ঘিরে রাঙামাটির জেলা, উপজেলা ও গ্রাম ভিত্তিক আয়োজন করা হয়েছে নানা আয়োজন। রাঙামাটি উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট আয়োজিত ৩ দিনব্যাপী পার্বত্য সাংস্কৃতিক উৎসব ও মেলা শুরু হয়েছে।

শনিবার বিকাল ৪টায় রাঙামাটি পার্বত্য জেলার সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার ফিতা কেটে এ মেলা উদ্বোধন করেন।

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকামর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক সামসুল আরেফিন, রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট ভারপাপ্ত পরিচালক রুনেল চাকমা প্রমুখ।

                                                                       

এদিকে ৩ দিনব্যাপী পার্বত্য সাংস্কৃতিক উৎসব ও মেলাকে আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপন করতে ব্যাপক ও বর্ণিল কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। মেলা উদ্ধোধনের পর বিকেল সাড়ে ৪টায় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, ৫টায় শিশু কিশোরদের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন খেলাধুলা প্রতিযোগিতা। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় পাহাড়িদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পরিবেশনা করবেন, মারমা, খিয়াং, লুসাই ম্রো ও চাক। এছড়া রাত ৮টায় চাকমা নাটক চান্দবী পরিবেশন হবে।

আগামীকাল রবিবার বিকাল ৩টায় আবারও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন খেলাধুলা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা ও পাংখোয়া শিল্পীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সোমবার বিকাল ৪টায় ঐতিহ্যবাহী পাজন রান্না প্রতিযোগিতার মধ্যদিয়ে শেষ হবে তিন দিনব্যাপী পার্বত্য সাংস্কৃতিক উৎসব ও মেলা।

প্রসঙ্গত, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ১১ভাষাভাষী ১৪টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু-সাংগ্রাইন-বৈসু-বিষুকে ঘিরে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

পাহাড়ের জাতিগোষ্ঠীদের নিজস্ব নিয়মে বৈসাবী পালন করে থাকে। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির সংমিশ্রণে বৈসাবী এক বৈচিত্রময় রূপ ধারণ করে। নানান কর্মসূচির মাধ্যমে বৈসাবী আনন্দে মেতে ওঠে অঞ্চলের পাহাড়ী-বাঙালীরা।

জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পর ১৯৯৮ সালে প্রথম ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের সাংস্কৃতিক উৎসব ও মেলা শুরু করা হয়। সে থেকে আজ পর্যন্ত এ প্রথা চালু রয়েছে। প্রতি বাছর চৈত্র মাসে পাহাড়ে বিভিন্ন উৎসবের মধ্যে দিয়ে বাংলা বর্ষবরণ ও বৈসাবি উৎসব পালন হয়ে থাকে।

Exit mobile version