parbattanews

বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পথে লংগদু উপজেলা চেয়ারম্যান

স্টাফ রিপোর্টার:

রাঙ্গামাটি জেলার লংগদুতে আওয়ামী লীগ থেকে একক প্রার্থী নিশ্চিত করার ব্যাপারে একটি সমঝোতা বৈঠক হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং রাঙ্গামাটি আসনের সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদারের বাসবভনে শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে লংগদুতে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী নিশ্চিত করার ব্যাপারে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র।

অন্যদিকে লংগদুতে  আওয়ামী লীগের বাইরে অন্য কোনো প্রার্থী না থাকায় বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় পরবর্তী উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আব্দুল বারেক সরকারের নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৮ মার্চ। এদিন ১৭টি জেলার ১২৯টি উপজেলার নির্বাচন হবে। পার্বত্য তিন জেলার সব উপজেলা নির্বাচনও এ ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ, জমাদান এবং বাছাই প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। লংগদু উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে এবার প্রার্থী হয়েছেন তিনজন। তিনজনই আওয়ামী লীগের।

আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নৌকা মার্কায় প্রার্থী হয়েছেন লংগদু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাইনীমুখ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক সরকার। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী এবং মাইনীমুখ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হাজী ফয়েজুল আজিম এবং লংগদু উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সভাপতি এবং গুলশাখালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রহিমও প্রার্থী হয়েছেন।

দলের মনোনীত প্রার্থী বারেক সরকারের পক্ষে হাজী ফয়েজুল আজিম এবং আব্দুর রহিমের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ব্যাপারে রাজি করাতে জেলা কমিটির পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সকালে দীপংকর তালুকদারের বাসায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেলার রাজনীতিতে দাদা খ্যাত আওয়ামী লীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদার দলের স্বার্থে নিজেদের মধ্যকার দূরত্ব মিটিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করার নির্দেশনা প্রদান করেছেন। প্রকাশ্যে ঘোষণা না দিলেও দলের প্রার্থীর পক্ষে অপর দুই প্রার্থী প্রাথমিকভাবে নিজেদের মনোনয়ন প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে ২৫ ফেব্রুয়ারি লংগদুতে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভার মাধ্যমে। সেখানে জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাজী মুছা মাতাব্বর উপস্থিত থেকে সমঝোতার বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।

আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী আব্দুল বারেক সরকার এ প্রসঙ্গে বলেন, বিদ্রোহী দুই প্রার্থীসহ আমাদের সাথে জেলা সভাপতি বাবু দীপংকর তালুকদার কথা বলেছেন। বিদ্রোহী প্রার্থী না হয়ে সকলকে দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে বলেছেন। তবে তাদের কর্মীদের কিছু কথা তো থাকতেই পারে। সেসব নিয়ে ২৫ তারিখের বর্ধিত সভায় আলোচনা হওয়ার পরই তারা তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন বলে আশা করি।

উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী লংগদু আওয়ামী লীগের সিনিয়র সভাপতি আব্দুর রহিম বৈঠকের কথা নিশ্চিত করে বলেন, আমাদের ডেকে এমপি মহোদয় কথা বলেছেন, দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার কথাও বলেছেন। আমরাও আমাদের কথা বলেছি, কর্মীদের যথাযত মূল্যায়ন করা হলে সমঝোতা হতেই পারে। তবে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে ২৫ তারিখের বর্ধিত সভায়। অপর প্রার্থী হাজী ফয়েজুল আজিমের মোবাইল নম্বরটি বন্ধ থাকায় তার মতামত নেয়া যায়নি।

বৈঠকে উপস্থিত থাকা রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের সদস্য এবং লংগদু আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জানে আলমও প্রাথমিক সমঝোতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আশা করছেন, শেষ পর্যন্ত লংগদুতে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থীই থাকবে। আর যেহেতু আওয়ামী লীগের বাইরে আর কেউ প্রার্থী নেই। তাই লংগদুতে এবার বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পথে রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী।

লংগদুতে দলের একক প্রার্থী থাকাটা শতভাগ নিশ্চিত মনে করে ২৫ ফেব্রুয়ারির বর্ধিত সভাকে শুধু আনুষ্ঠানিকতা বলে দাবি করেছেন রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মুছা মাতাব্বর। তিনি বলেন, দলে নেতাকর্মীদের মধ্যে কিছুটা বিরোধ থাকতেই পারে। কিন্তু শুক্রবারের বৈঠকের পর সেসব আর থাকবে না। বর্ধিত সভায় সকলের মতামতের ভিত্তিতেই অন্য দুই প্রার্থী তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করবেন।

Exit mobile version