parbattanews

বিবর্ণ-পরিত্যক্ত বান্দরবানের ‘নীল দিগন্ত পর্যটন’ স্পট

প্রবেশ পথে তালা, ভেতরে ছড়ানো ছিটানো আবর্জনা। দর্শনার্থীদের জন্য তৈরি স্থাপনাগুলো বিবর্ণ-পরিত্যক্ত। এমনই করুণ দশা নীল দিগন্ত পর্যটন কেন্দ্রের। ২০১৭ সনে জীবন নগর এলাকায় প্রায় সাড়ে তিন একর জায়গা জুড়ে এই পর্যটন কেন্দ্রটি গড়ে তোলে বান্দরবান জেলা প্রশাসন। এটি এখন অনেকটা পরিত্যক্ত!

বান্দরবানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের মধ্যে অধিকাংশ পর্যটক প্রাকৃতিক পরিবেশ আর জীবনের স্পন্দন পেতে ছুটে যান থানচি সড়কে। রেমাক্রি চিম্বুক, নীলগিরিসহ অন্যান্য পর্যটন স্পটের সাথে গত তিন বছর আগে যুক্ত হয়েছিল এই নীল দিগন্ত পর্যটন স্পটটি।

বান্দরবান থেকে ৫০কি.মি দূরে থানচি সড়কের জীবন নগর এলাকায় এটি অবস্থিত। কিন্তু সম্প্রতি এই পর্যটন স্পটটি হারাচ্ছে সৌন্দর্য। নানা কারণে অগোছালো হয়ে পড়েছে এই স্পট। দর্শনার্থীরা বেড়াতে গিয়েও প্রবেশ পথে তালা দেখে হতাশা নিয়ে ফিরছেন।

সরেজমিনে কথা হয় কুমিল্লা থেকে বেড়াতে আসা ইমতিয়াজ আহমেদের সঙ্গে। একটি ঔষুধ কোম্পানীতে চাকুরীরত এই পর্যটক স্বপরিবারে তিনদিনের ছুটিতে বান্দরবান ও কক্সবাজারে বেড়াতে আসেন। নীলগিরি দর্শন করতে পারলেও নীল দিগন্তে প্রবেশ করতে পারেননি তিনি। এই প্রসঙ্গে তিনি এই পার্বত্যনিউজকে জানান, বাইরে থেকে নীল দীগন্তের সৌন্দর্য বুঝা যায়। এই স্পটে দাঁড়ালে দূরের সারি সারি সবুজ পাহাড়ে মেঘের গড়াগড়ি যেকোন পর্যটককে আকৃষ্ট করে। কিন্তু এমন সৌন্দর্যময় স্পটটি কেন অগোছালোভাবে ফেলে রাখা হয়েছে সেই প্রশ্ন তারমতো অনেক পর্যটকের।

এদিকে সম্প্রতি থানচি সফরে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা। এই নিয়ে তিনি নিজের ফেইসবুক আইডিতে নীল দিগন্ত পর্যটন কেন্দ্রের কিছু ছবিও পোস্ট করেন। এতে তিনি লিখেছেন, বহু অর্থ ব্যয়ে পর্যটন কেন্দ্রটি সাবেক এক জেলা প্রশাসক তৈরি করেছিলেন। কিন্তু মাত্র তিন বছরে অযত্নে আর অবহেলায় এই স্পটটি পরিত্যক্ত হল বোধগম্য হচ্ছেনা।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের স্বভাবের কারণে আবর্জনা ও বর্জ্যে ভরে যাচ্ছে’। সাঙ্গু নদীতে এবং নদীর তীরে এবার লক্ষ্য করেছি বিরিয়ানির খালি প্যাকেট, প্লাস্টিকের বোতল, পরিত্যক্ত মাস্ক ইত্যাদি। নৈতিকতা বিবর্জিত মানুষের ছুড়ে ফেলা বর্জ্যে অচিরেই নষ্ট হয়ে যাবে পরিবেশ। এমন চিত্র দেখে তিনি থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান ও নির্বাহী কর্মকর্তাকে এবিষয়ে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করেছেন।

এই প্রসঙ্গে জানতে যোগাযোগ করা হলে থানচি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতাউল গণি ওসমানী বলেন, পর্যটকদের জন্য উপযোগী করে তোলা এবং পরিচালনার কিছু কারণে এই পর্যটন স্পটটি বন্ধ রাখা হয়েছে। যাতে পর্যটকরা বেড়াতে এসে দূর্ভোগে না পড়েন। তবে আগামী মাসের দিকে স্পটটি পরিষ্কার করে খুলে দেওয়া হবে।

Exit mobile version