parbattanews

বিবাহিত স্ত্রীকে সংসারে ফিরে পেতে চকরিয়ায় আদালতে স্বামীর ফরিয়াদ

দুই পরিবারের সম্মতিতে ২০১৮ সালের ৩ আগস্ট ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক সামাজিক রীতি অনুসরণ করে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে নিকাহ রেজিষ্ট্রারমুলে উন্মে আশরাফুল রাসপিকে বিয়ে করেছিলেন স্বামী হেফাজ উদ্দিন।

বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে সংসার পেতে ছিলেন জীবিকার প্রয়োজনে থাকা কর্মস্থল চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানাথীন আবাসিক এলাকায়। সেখানে সুখের সংসার অতিবাহিত হচ্ছিল নতুন যুগল হেফাজ উদ্দিন ও রাসপির দাম্পত্য জীবনে।

হেফাজ উদ্দিনের গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নে। তিনি ওই এলাকার শাহ আলমের ছেলে। অপরদিকে নববধু আশরাফুল রাসপির বাড়ি একই উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের বোডিংপাড়া গ্রামে। তিনি ওই এলাকার মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ’র মেয়ে।

ভুক্তভোগী হেফাজ উদ্দিন বলেছেন, বিয়ের পর চট্টগ্রামের ভাড়া বাসায় স্ত্রীকে নিয়ে সুখে চলছিল তাদের দাম্পত্য জীবন। সেখানে ৪-৫ মাস অতিবাহিত হবার একপর্যায়ে ২০১৯ সালের ২০ মার্চ তিনি কর্মস্থলে থাকাকালে না জানিয়ে বাসা থেকে বাপের বাড়ি চলে যান স্ত্রী রাসপি।

অবশ্য চলে যাওয়ার সময় বাসায় রক্ষিত নগদ দুই লাখ টাকা, বিয়ের সময় দেয়া পাঁচ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও কাপড়-চোপড়ও নিয়ে যান রাসপি। এরপর মুঠোফোনে স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন।
বাপের বাড়িতে চলে যাওয়ার ব্যাপারে অবগত হন হেফাজ উদ্দিন। ওইসময় ফোনে স্বামীকে বলেন কিছুদিন বেড়ানো শেষে চলে আসবো আমি।

স্বামীর হেফাজ উদ্দিন বলেন, প্রায় একমাস সময় অতিবাহিত হবার পর তিনি ওইসময় নিজে শশুর বাড়িতে স্ত্রীকে আনতে যান। আর কয়েকদিন পর আমি চলে আসবো জানালে স্বামী ফের চট্টগ্রামের কর্মস্থলে চলে যান। কিন্তু স্ত্রী কথামতো না আসায় তাকে আনতে এবার স্বামী হেফাজ উদ্দিন শাশুড় বাড়িতে পাঠান বাবা শাহ আলমসহ কয়েকজন আত্মীয়কে।

কিন্তু ওইদিনও স্ত্রী রাসপি বাবার বাড়ি থেকে আসতে রাজী নন। উল্টো তাঁর মা কোহিনুর আক্তার সাফ জানিয়ে দেন, তাঁর মেয়েকে আর হেফাজ উদ্দিনের সংসারে পাঠাবে না। তাকে তালাক দিতে হবে। নইলে স্বামী হেফাজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুক আইনে মামলা দেয়া হবে। এ ধরণের হুমকির প্রেক্ষিতে শশুর বাড়ি থেকে ফেরত আসতে বাধ্য হন আমার বাবা শাহ আলমসহ স্বজনরা।

স্বামী হেফাজ উদ্দিন বলেন, বাপের বাড়িতে চলে যাওয়া স্ত্রী আশরাফুল রাসপিকে ফেরত আনতে বারবার ধর্না দিয়েও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। পারিবারিক ও সামাজিকভাবেও অনেক চেষ্টা করেছেন।

সবকিছুতে ব্যর্থ হয়ে তিনি এবার আশ্রয় নিয়েছেন আদালতের কাছে। এ অবস্থায় স্ত্রীকে সংসারে ফিরে পেতে ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল স্বামী হেফাজ উদ্দিন বাদি হয়ে চকরিয়া পারিবারিক আদালতে একটি মামলা (নং ৫০/১৯) দায়ের করেছেন। বর্তমানে মামলাটি সমনজারি পর্যায়ে রয়েছে।

ভুক্তভোগী হেফাজ উদ্দিন দাবি করেছেন, আদালতের দারস্থ হবার পর জানতে পারেন বিবাহিত স্ত্রী উন্মে আশরাফুল রাসপিকে অন্যত্র বিয়ে দেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন পরিবার। সেইজন্য স্ত্রীকে তালাক দিতে তাকে বারবার নানাভাবে চাপ দেয়া হচ্ছে।

এদিকে চকরিয়ায় পারিবারিক আদালতে মামলা দেয়ার ঘটনাটি জানতে পেরে সর্বশেষ গতবছরের ২১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম শহরের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকাস্থ হেফাজ উদ্দিনের মালিকানাধীন সুছি টেইলাস দোকানে উপস্থিত হয়ে স্ত্রীর পক্ষহয়ে ভাড়াটে কিছু দুর্বৃত্ত প্রকাশ্যে হুমকি দেন হেফাজকে।

পাঁচদিনের মধ্যে স্ত্রী রাসপিকে তালাক দিবি, সাথে পাঁচলাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে বলে শাসায় তাকে। এ ঘটনার পর থেকে প্রাণের ভয়ে চট্টগ্রামের কর্মস্থল নিজের টেইলাস দোকান বন্ধ করে পালিয়ে গ্রামে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন হেফাজ উদ্দিন।

হুমকির এ ঘটনায় সর্বশেষ ২০১৯ সালের ১৬ অক্টোবর চট্টগ্রাম চীফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে চারজনের নাম উল্লেখ পুর্বক আরো ৪-৫জনকে অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে একটি জিডি (নং ৪৩০) দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী হেফাজ উদ্দিন।

Exit mobile version