বিলাইছড়ির দুই কিশোরীকে অভিভাবকের জিম্মায় দেয়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধি :
রাঙামাটির বিলাইছড়িতে নির্যাতিত দুই মারমা কিশোরীকে তাদের অভিভাবক নিজেদের জিম্মায় নিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এইচ এম জাহাঙ্গীর।

বৃহস্পতিবার (১৫ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অভিভাবকরা তাদের কিশোরীদের নিজ জিম্মায় নেন।

এ বিষয়ে রাঙামাটির ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা: নীহার রঞ্জন নন্দী জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই দুই কিশোরীর অভিভাবক ছাড়পত্রে স্বাক্ষর করে তাদের নিজ জিম্মায় নিয়ে নেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে রাঙামাটিতে একটি কথা মুখে মুখে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে যে চাকমা রাণী ইয়েন ইয়েনকে গুম করা  হয়েছে এবং মেয়ে দুটিতে অপহরণ করা হয়েছে। এ ঘটনাটি নিয়ে রাঙামাটিতে একটি মহল আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।

এ বিষয়ে রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এইচএম জাহাঙ্গীর বলেন, আমিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পেরে সরাসরি চাকমা রাণী ইয়েন ইয়েনের বাড়িতে যাই এবং তার সাথে কুশল বিনিময় করি। চাকমা রাণী ভাল আছেন এবং তিনি গুজবে কান না দেয়ার জন্য সকলকে আহ্বান জানান।

পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান, যারা এ ধরণের অরাজকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করতে চায় এমন একটি গোষ্ঠী কথিত ধর্ষণের শিকার দুই মারমা বোনের পাহারায় রাঙামাটি হাসপাতালে সার্বক্ষণিক ৫জন স্বেচ্ছাসেবক রেখেছিল। তাদের মাধ্যমে দুই বোনের সই নিয়ে আদালতে মামলা করে মেয়ে দুটিকে স্ব স্ব জিম্মায় যাওয়ার জন্য।

এদিকে তাদের এই ষড়যন্ত্রের খবর জানতে পেরে মেয়েটির বাবা মা মেয়ে দুটিকে নিজেদের জিম্মায় নেয়ার জন্য সিভিল সার্জনের কাছে আবেদন করে। বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা থাকায় সিভিল সার্জন মেয়েদের বাবা মায়ের আবেদন আদালতে পাঠায়। কিন্তু মেয়েদের বয়স নিশ্চিত না হওয়া ও মেডিকেল রিপোর্ট চুড়ান্ত না হওয়ায় আদালত বিষয়টিতে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত না দেয়ায় ঐ চক্রটি হাইকোর্টে মেয়েদের আবেদন রীট আকারে পেশ করে।

সূত্র জানিয়েছে, এদিকে বিষয়টি জানতে পেরে মেয়েটির বাবা মাও উচ্চ আদালতে পৃথক রীট করেন। উচ্চ আদালত মেয়েদের বাবা মাকে তাদের লিগ্যাল অভিভাবক সাব্যস্ত করে মেয়েদেরকে তাদের বাবা মায়ের জিম্মায় দেয়ার জন্য এবং একই সাথে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেয়। উচ্চ আদালতে রায় অনুযায়ী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মেয়ে দুটিকে তাদের পিতামাতার জিম্মায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হস্তান্তর করেছে।

সূত্র আরো জানিয়েছে, এসময় উক্ত মহলটি মেয়েদেরকে তাদের পিতা মাতার জিম্মায় না দিয়ে নিজেদের জিম্মায় নেয়ার জন্য চেষ্টা চালায় ও পুলিশের সাথে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ বহিরাগতদের সরিয়ে দিয়ে মেয়েদের তাদের পিতামাতার জিম্মায় তুলে দেয়। মেয়েরা বর্তমানে তাদের পিতামাতার জিম্মায় ভাল আছে বলেও সূত্রটি জানায়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন