parbattanews

বিলুপ্তপ্রায় ‘রেংমিটচ্য’ ভাষা রক্ষায় সেনাবাহিনীর উদ্যোগে আলীকদমে স্কুল নির্মাণ

পার্বত্য চট্টগ্রামে বিলুপ্তপ্রায় রেংমিটচ্য ভাষা রক্ষায় উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশে সেনাবাহিনী। পাহাড়ে শিক্ষার উন্নয়ন, সেই সাথে রেংমিটচ্য ভাষা রক্ষায় পার্বত্য বান্দরবান জেলার আলীকদমের দুর্গম ক্রাংসি পাড়ায় একটি স্কুল নির্মাণ করেছে সেনাবাহিনী। স্কুলটিতে শিক্ষার্থীদের বাংলা ভাষার পাশাপাশি রেংমিটচ্য ভাষার শিক্ষা দেওয়া হবে।

রোববার (১০ মার্চ) সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে স্কুলটির উদ্বোধন করেন বান্দরবান রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম মহিউদ্দিন আহমেদ। এ সময় নবাগত রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মেহেদী হাসান, আলীকদম সেনা জোনের কমান্ডার লে. কর্নেল মো. শওকাতুল মোনায়েম, আলীকদম থানার অফিসার ইনর্চাজ ওসি খন্দকার তবিদুর রহমানসহ এলাকার জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করে সেনাবাহিনী। বর্তমানে স্কুলটিতে ৪০ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে এবং চারজন শিক্ষক রয়েছে।

এবার একুশে ফেব্রুয়ারি মহান মাতৃভাষা দিবসে পাহাড়ের বিলুপ্তপ্রায় রেংমিটচ্য ভাষা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি নজরে আসলে বিলুপ্তপ্রায় এ ভাষাটি রক্ষায় এগিয়ে আসে সেনাবাহিনী।

এ বিষয়ে বান্দরবান সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, সেনাবাহিনী পাহাড়ে জনসাধারণের নিরাপত্তা প্রদানের পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য সামাজিক সুরক্ষা নিয়ে কাজ করে থাকে। এরই অংশ হিসেবে দুর্গম এলাকায় শিক্ষার মান উন্নয়ন, সেই সাথে বিলুপ্তপ্রায় একটি ভাষা রক্ষায় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

বর্তমানে বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে দুর্গম ক্রাংসি পাড়ায় রেংমিটচ্য জাতির বসবাস। এই জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৭ জন আলীকদমে বাকি ২ জন নাইক্ষ্যংছড়িতে বসবাস করেন। এ ভাষায় মোট ৯ জন ব্যক্তি কথা বলতে পারেন। এদের সবারই বয়স ৬০ বছরের ওপরে। এদের মৃত্যু হলে এ ভাষাটিও বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা তাদের।

পাহাড়ের ম্রো সম্প্রদায়ের সাথে সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্যে রেংমিটচ্যদের মিল থাকায় বর্তমানে তাদের ভাষা এখন বিলুপ্তির পথে। প্রান্তিক এই জনগোষ্ঠী নিয়ে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে তথ্য উঠে আসে। ভাষাটি রক্ষায় এখন সেখানে সেনাবাহিনীর উদ্যোগে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এতে করে বিলুপ্তপ্রায় এই ভাষাটি রক্ষা পাবে বলে আশা স্থানীয়দের।

Exit mobile version