parbattanews

বিলুপ্তির পথে পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী হাল-পালুনি

ফাইল ছবি

আষাঢ় মাসের সাত তারিখ, পাহাড়ে এক সময় জমজমাটের ছিলো ঐতিহ্যবাহী হাল-পালুনি। এ দিনে কৃষকেরা জমিনে কোন কাজ না করে সম্পূর্ন বিরতিতে থাকে। কিন্তু কালের বিবর্তণে দিনটির ঐতিহ্য প্রায় বিলুপ্তির পথে।

এই নিয়ে কথা হয় আচাই মহাজন পাড়ার ইন্দু বিকাশ চাকমা, টিএন্ডটি টিলার নাগজ্যা চাকমা, অভিরঞ্জন ত্রিপুরা, জ্যোতিষ বসু ত্রিপুরা ও শান্তি জীবন চাকমা সাথে। তারা জানায়, এক সময় গরু দিয়ে নাঙ্গল জোয়ালের মাধ্যমেই হাল চাষ হতো। সারা বছর হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের কারণে কৃষক ও গরু উভয়েই হয়ে পড়তো ক্লান্ত। সেই ক্লান্তি দূর করতেই আষাঢ় মাসের সাত তারিখ পালিত হয় হাল-পালুনি। যাকে চাকমা ও ত্রিপুরারা আল-পালুনি আর মারমারা বলে এফ্যাহ্লা।

এ দিনে নাঙ্গল ও জোয়ালকে পরিষ্কার করে ধোয়া, গরুকে ভালোভাবে গোসল করানো নিজেরাও পরিষ্কার হয়ে থাকে কর্ম বিরতিতে। কেউ কেউ একদিন, কেউ তিনদিন আবার কেউবা সাত দিনও হাল পালন করেন।

নাগজ্যা চাকমা জানান, এক সময়ে পাহাড়ে প্রচুর ভুট্টা চাষ হতো। এ দিনে ভুট্টা সিদ্ধ করে ঘরে ঘরে বিলিয়ে মজা করে খাওয়া হতো।

ইন্দু বিকাশ চাকমা জানায়, গরুর স্থলে মেশিনের প্রচলন আসলেও মেশিনকে ভালো করে ধোয়ার পাশাপাশি আজো হাল-পালুনি করা হয়। তবে পাহাড়ে এখনো বেশিরভাগ কৃষক আষাঢ়ের সাত তারিখটিকে গুরুত্বের সহিত পালন করে থাকে। এদিনে কেউ কেউ ধানের বীজ সংগ্রহের জন্য ধানকে পানিতে ভিজায়। তারা সকলে এই দিনটির ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মের মাঝে ভালোভাবে উপস্থাপনের কথা বলেন।

Exit mobile version