parbattanews

পেকুয়ায় বৃদ্ধা মাকে নির্যাতন করে ঘর ছাড়া করলো পুত্র!

কক্সবাজারের পেকুয়ায় স্বামীহারা বৃদ্ধা লায়লা বেগম নামের এক মাকে নির্যাতন করে ঘর থেকে বের করে দিলেন জন্মদাতা পুত্র।

পরে খবর পেয়ে অপর ছেলে আলাউদ্দিন এসে স্থানীয়দের সহায়তায় মাকে উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

২৭ আগস্ট বিকালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর পূর্ব গোঁয়াখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সে ওই এলাকার মৃত আবু তাহেরের স্ত্রী।

স্থানীয় সূত্র জানাযায়, স্বামীহারা বৃদ্ধা স্ত্রী লায়লা বেগম ৫ ছেলে ও ৩ মেয়ের জননী। বৃদ্ধা স্বামী আবু তাহের মারা যাওয়ার পর সন্তানদের মানুষ করতে বহু কষ্ট করেছেন সে। স্বামী থাকা অবস্থায় তিন মেয়ের বিয়ে এবং তিন ছেলেকে বিয়ে করিয়েছেন। অপর এক ছেলে নিজ ইচ্ছায় বিয়ে করলেও ছোট ছেলে এখনো অবিবাহিত অবস্থায় আছেন।

স্বামী হারা এ জননী নিজের সুঃখের কথা না ভেবে স্বামীর স্মৃতির জন্য সুখ দুঃখের ভাগীদার হয়ে স্বামীর ভিটায় থেকে যান। বহু কষ্টে জমানো টাকা জমা রাখেন ছেলে মাঈন উদ্দিনের কাছে। কারণ এ ছেলেটি পেকুয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মচারী হিসাবে কর্মরত আছে। সেই সুবাদে মাকে দেখাশুনার কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনিই জমানো সব টাকা মায়ের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে ঘর থেকে বের করে দিলেন। বড় ছেলে আবদুল লতিফ মিয়া নেশাগ্রস্ত হয়ে মাকে বকাঝকা করেছেন আর মারধর করেছেন। তারপরও সহ্য করে গেছেন। কখনো কোন অভিযোগ ছিলনা। জয়নাল আবদীন নামে এক ছেলে মাকে সব সময় বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার জন্য চাপসৃষ্টি করলেও স্বামীর ভিটা ছাড়া কোথাও যাবেন না তিনি।

তার মধ্যে আলাউদ্দিন আলো নামে এক ছেলে নিজ ব্যবসার কারণে চকরিয়ার বদরখালীতে অবস্থান করলেও মায়ের ভরণপোষণ ঠিকমত দেয়া ও খবরাখবর সব সময় রাখায় তার প্রতি কোন অভিযোগ নাই মায়ের। ছোট ছেলে আজম উদ্দিন বর্তমানে শিক্ষার্থী হলেও মায়ের দেখাশুনা করে থাকেন। এত শত দুঃখ আর কষ্ট সহ্য করে স্বামীর ভিটায় থাকার চেষ্টা করলেও ২৭ আগস্ট (শুক্রবার) বিকালের দিকে তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন ৩ ঔরসজাত ছেলে লতিফ, মাঈন ও জয়নাল।

এদিকে অসহায় লায়লা বেগম কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং বলেন, ছেলে মঈন উদ্দিনের কাছে আমি ১ লক্ষ ৫১ হাজার টাকা জমা রাখি। পরবর্তীতে টাকা গুলো ফেরত চাইলে বসতভিটা থেকে আমাকে উচ্ছেদ করতে নানা সময় গালিগালাজ করে। এক পর্যায়ে দুপুরে ছেলে লতিফ ও মাঈন উদ্দিন আমাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। তারা আমার ছোট ছেলে আজমকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে নির্দেশ দেয়। না হয় প্রকাশ্যে প্রাণে হত্যার হুমকি দেয়। এমনকি তারা আমার কাছে থাকা ভোটার আইডি কার্ড বয়স্ক ভাতার কার্ডসহ যাবতীয় কাগজ পত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। আমি এই সন্তানের বিচার চাই।

এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার দাবি করে হতভাগী বৃদ্ধা মা লায়লা বেগম বাদী হয়ে ৩ ছেলের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে মাইন উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করার হলে সে কোনকিছু মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

এ প্রসঙ্গে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুর রহমান মজুমদার অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা জানিয়ে তিনি বলেন, মায়ের উপর নির্যাতনকারী ছেলের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Exit mobile version