প্রেমের টানে জাত-ধর্ম ত্যাগ: বাঙালি-মুসলিম থেকে হলেন মারমা-বৌদ্ধ

fec-image

খাগড়াছড়ির গুইমারায় নাক্রা মারমার প্রেমের টানে জাত-ধর্ম ত্যাগ করে বাঙালি-মুসলিম থেকে মারমা-বৌদ্ধ হলেন শরিফুল ইসলাম লাতু (৪৬)। নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে হলফনামা পরিবর্তন করেন তার নাম এখন অংসাথোয়াই মারমা।

শরিফুল ইসলাম লাতু গুইমারা উপজেলার মুসলিম পাড়া এলাকার মফিজুল ইসলামের বড় ছেলে। পারিবারিক জীবনে রয়েছে দুই মেয়ে, এক ছেলে।

জানা যায়, লাতুর প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকেই নাক্রা মারমার সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক। এরই ফাঁকে সে আরেকটি বিয়েও করেছিলেন। নাক্রা মারমার সাথে প্রেমের কারণে এক সপ্তাহ টেকেনি সে বিয়ে। ২য় স্ত্রী চলে যাওয়ার পর দুজনের প্রেম আরো গভীর হয়।

অপর দিকে নাক্রা মারমা (৩৭) চার সন্তানের জননী। এর আগে বিয়ে হয়েছে দুইটি। আগরে দুই স্বামী মারা গিয়েছে। গত ২৭ অক্টোবর খাগড়াছড়িতে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে তারা দু’জন বিবাহের বিষয়টি হলফনামা করে এবং লাতু মিয়া হলফনামার মাধ্যমে ধর্মান্তরিত হয়।

শরিফুল ইসলাম লাতু বলেন, সে নিজের ইচ্ছায় ধর্মান্তরিত হয়েছে। ইসলাম ধর্ম ছেড়ে বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেছেন। ৪৬ বছর ইসলাম ধর্মে ছিলেন। বাকী জীবন বৌদ্ধ ধর্মে থেকে কাটাতে চান। বিষয়টি প্রশাসনসহ সকলকে তিনি অবগত করেছেন। কেউ তার প্রতি জোর করলে সে আত্মহত্যা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

স্থানীয় পাড়া কারবারি ইন্দ্রমনি চাকমা বলেন, লাতু স্বেচ্ছায় ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম ছেড়ে বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেছেন। তাকে কেউ জোর করেনি।বাকী জীবন সে বৌদ্ধ ধর্মে থাকতে চেয়েছে। এটা তার স্বাধীনতা।

পাড়া কারবারি কান্দি মারমা বলেন, ‘হলফনামার মাধ্যমে দুজনে বিয়ে করেছে। এখনো বৌদ্ধ ধর্মে মারমাদের রীতিনীতি অনুযায়ী বিয়ের অনুষ্ঠান হয়নি। তবে মুসলিম সমাজের সর্দার ও এলাকার গণ্যমান্যদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। আমরা মুসলিম সমাজের লোকদের বলেছি, আপনারা পারলে আপনাদের লোককে নিজ ধর্মে ফিরিয়ে নিতে পারেন। এতে মারমাদের কোন আপত্তি নেই। বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। আমরা সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী।’

অপরদিকে মুসলিমপাড়া সমাজের সর্দার মো. মোস্তফা বলেন, ‘নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে হলফনামা করে বিয়ে এবং ধর্মান্তরিত হয়েছে লাতু মিয়া। বিষয়টি আমাদের অবগত করেছে। আমরা এখানে পাহাড়ি-বাঙালি বসবাস করি। এজন্য সামাজিকভাবে আমরা বৈঠক করেছি। আমাদের মুসলিম এলাকার ছেলে ও পরিবারের সাথে সে যেন চলাফেরা না করে, সে বিষয়ে আমাদের এলাকাবাসীকে ইতিমধ্যেই দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ইসলাম ধর্ম, ধর্মান্তরিত
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন