বৃহস্পতিবারের হরতাল নিয়ে খাগড়াছড়িতে ধূম্রজাল
হরতাল প্রত্যাহার করা হয়েছে- পৌর মেয়রের মাইকিংঃ হরতাল বহাল আছে- ৫ বাঙালী সংগঠন
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:
পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইনের সংশোধনী জাতীয় সংসদে পাশের প্রতিবাদে পাঁচ বাঙ্গালী সংগঠনের ডাকা বৃহস্পতিবারের হরতাল নিয়ে খাগড়াছড়িতে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। হরতাল প্রতাহারের ঘোষণা দিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে খাগড়াছড়ি শহরে মাইকিং করেছে খাগড়াছড়ি পৌর কর্তৃপক্ষ। তবে হরতাল বহাল আছে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে বাঙ্গালী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা।
হরতাল প্রত্যাহারের সত্যতা জানতে পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার নেতাদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি পৌর কাউন্সিলর আব্দুল মজিদ হরতাল প্রত্যাহারের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন।
এদিকে খাগড়াছড়ি পৌর মেয়র রফিকুল আলম বলেন, গত রাতে পৌরসভায় বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ, পৌর কর্মকর্তা এবং বাজার ব্যবসায়ী নেতাদের সাথে বৈঠক হয়েছে। এতে বাজার ব্যবসায়ী এবং স্থানীয়দের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে সকলের সিদ্ধান্তে হরতাল প্রত্যাহার করা হয়।
এদিকে সদর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির দফতর সম্পাদক মো. জামালউদ্দীন পার্বত্যনিউজকে জানিয়েছেন, সোমবার সন্ধ্যায় পৌরসভায় মেয়রের নেতৃত্বে একটি মিটিং হয়। সেখানে বাঙালী ছাত্র পরিষদ নেতা ও কাউন্সিলর আবদুল মজিদ, কাউন্সিলর মাসুম রানা, ছাত্র পরিষদ নেতা আসাদ, মাইনুদ্দীনসহ খাগড়াছড়ি জেলা বাঙালী ছাত্র পরিষদের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। মিটিং এ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে আমরা তাদের কাছে জানতে চাই, রাঙামাটি ও বান্দরবান বুধবারে হরতাল হলে খাগড়াছড়িতে বৃহস্পতিবার কেন? তারা এ প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। তখন আমরা খাগড়াছড়িতেও বুধবার হরতাল পালনের আহ্বান জানিয়ে বলি এতে আমরা সমর্থন দেবো। কিন্তু তারা তা কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত না থাকায় কিছু বলতে পারেন নি। তখন আমরা বৃহস্পতিবার হরতাল প্রত্যাহার করার আহ্বান জানালে তারা এতে সম্মতি জানান। পরে সবাই মিলে মেয়রকে মাইকিং করার অনুরোধ করলে তিনি তা করবেন বলে জানান।
তবে ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন পার্বত্য ছাত্র পরিষদের উপদেষ্টা ও পার্বত্য নাগরিক পরিষদের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলকাছ আল-মামুন ভূঁইয়া। তিনি বলেন, হরতাল ঘোষণা দিয়েছে পাঁচটি বাঙ্গালী সংগঠন। অন্য কেউ সেই হরতাল কিভাবে প্রত্যাহার করার ঘোষণা দিয়েছেন তা বোধগম্য নয়। হরতাল কর্মসূচী বহাল আছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, কিছু দালাল শ্রেণীর লোক বাঙ্গালীদের চলমান আন্দোলনকে নষ্ট করে দিতেই এ ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এতে করে বাঙ্গালীরা আরও বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এদিকে ৫ বাঙালী সংগঠনের পক্ষে পার্বত্য গণ পরিষদের মহাসচিবের পক্ষে পাঠানো এ বিবৃবিতে বলা হয়েছে, ১৯ অক্টোবর রোজ বুধবার রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল, আর ২০ অক্টোবর রোজ বৃহস্পতি বার খাগড়াছড়ি জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতালের কর্মসূচীতে কোন হের ফের করা হয়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ সন্তু লারমা সরকারী প্রটোকল ব্যাবহার করে বাঙালিদের আন্দোলনকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র করছে এবং কিছু দালাল মাঠে নামিয়েছে।বাঙালি নাম ধারী দালালদেরকে চিহ্নিত করুন । আন্দোলন থেকে পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ ও পার্বত্য নাগরিক পরিষদ কখনো পিছে হটবেনা । পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের কোন নেতা এখানে জড়িত প্রমাণ পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
উল্লেখ্য, গত ১৬ অক্টোবর রবিবার বৌদ্ধদের প্রবারণা পূর্ণিমার দিনে ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে ৫ বাঙালী সংগঠন তাদের হরতাল কর্মসূচী প্রত্যাহার করে নতুন এই কর্মসূচী ঘোষণা করেছিল।