parbattanews

ব্রিকসের সম্প্রসারণ চায় চীন, ভারত-ব্রাজিলের আপত্তি

পুরো বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব কাটিয়ে ব্রাজিল, ভারত, চীন, রাশিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে গঠিত জোট ব্রিকসের পরিধি বাড়াতে চেষ্টা চালাচ্ছে চীন। বিশ্বের পাঁচ বৃহৎ দেশকে নিয়ে গঠিত এ জোটে যোগ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ, সৌদি আরব, ইরান, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলো।

তবে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ শুক্রবার (২৮ জুলাই) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিকস জোটে ‘দ্রুত সময়ে’ নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টিতে আপত্তি জানিয়েছে ভারত ও ব্রাজিল।

নাম না প্রকাশের শর্তে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আগস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানসবার্গে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ব্রিকসের শীর্ষ সম্মেলন। এর আগে জোটের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে একাধিক প্রস্তুতিমূলক বৈঠক হয়েছে। চীন এসব বৈঠকে বরাবরই জোট সম্প্রসারণের ওপর জোর দিয়েছে। কিন্তু ভারত ও ব্রাজিলের পক্ষ থেকে চীনের প্রস্তাব নিয়ে বারবার আপত্তি তোলা হয়েছে।

ওই কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, চীন ব্রিকস জোটে ইন্দোনেশিয়া ও সৌদি আরবকে জোটভুক্ত করার বিষয়ে বারবার চাপ দিয়ে আসছিল। কিন্তু ব্রাজিল ও ভারত চীনের চাপের সামনে মাথা নত করেনি। জোটের আসন্ন সম্মেলনে বাংলাদেশেরও জোটভুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে ব্রিকসের এ কর্মকর্তা সৌদি ও ইন্দোনেশিয়ার কথা বললেও বাংলাদেশের বিষয়ে কোনো কথা বলেননি।

এই দেশ দুটি ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি দেশই ব্রিকসের সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ভয় হলো, জোটের সম্প্রসারণের মধ্য দিয়ে তারা পশ্চিমা বিশ্বের প্রভাব হ্রাস করার প্রচেষ্টা চালাতে পারে। ব্রাজিল পশ্চিমা বিশ্বের এ অবস্থানকে আমলে নিয়েই তড়িঘড়ি জোট সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। আর ভারত চায়, নির্দিষ্ট নিয়মনীতি ও আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই একটি দেশ জোটের সদস্য হোক।

তবে এ বিষয়ে আগস্টের ২২ থেকে ২৪ তারিখ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সম্মেলনেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা সূত্র।

জোটের সদস্য বাড়ানোর বিষয়ে বিরোধিতা থাকলেও, ভারত ও ব্রাজিল চায় আরও বেশি দেশকে ‘পর্যবেক্ষক’ মর্যাদা দেওয়া হোক। তবে জোটের অন্যতম সদস্য ও বর্তমান সভাপতি দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা নতুন সদস্যপদ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা না করার পক্ষে। তবে দেশটি সরাসরি চীনের বিরোধিতা করেনি।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত বছর ব্রিকস নেতাদের বৈঠকে সদস্যপদ সম্প্রসারণের অনুমোদন দেওয়া হয়। জোটের পাঁচ দেশের রাজনৈতিক ঐকমত্য এটি। এরই মধ্যে আমরা সদস্য দেশগুলোর মধ্যে একটি সাধারণ মুদ্রায় বাণিজ্য চালু করার বিষয়ে আলোচনা করেছি। যদিও সে বিষয়ে তেমন কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।

জানা যায়, এবারের সম্মেলনে ভার্চুয়ালি অংশ নেবেনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রুশ প্রেসিডেন্টের সশরীরে অংশ না নেওয়ার কারণ হলো, যাতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে তার বিরুদ্ধে জারি করা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করতে না হয়। সূত্র: এনডিটিভি

Exit mobile version