parbattanews

ভবিষ্যতে মিয়ানমার এ ধরনের ঘটনা ঘটালে কঠোর প্রত্যুত্তর দেওয়া হবে- ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ আহমেদ

মিজানুর রহমানের লাশ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে

naikoncori Bjb pic-1.6

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৩১ ব্যাটালিয়নের রিজিওন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ আহাম্মদ আলী মন্তব্য করেছেন, মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটাল তাদের কাছে এর জবাব চাওয়া হবে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে মিয়ানমার এ ধরনের ঘটনার কঠোর প্রত্যুত্তর দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। রবিবার দুপুর বিজিবির ৩১ ব্যাটালিয়নের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মিয়ানমারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ আহাম্মদ আলী বলেন, আমরা ততক্ষণ পর্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চাই যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কোনো ক্ষতি না হবে। নিজেদের ক্ষতি করে আমরা বন্ধুত্ব পছন্দ করি না। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটানো হলে কঠোর প্রত্যুত্তর দেয়া হবে মিয়ানমারকে।

তিনি বলেন, কেন তারা এ ধরনের ঘটনা ঘটালো এ জন্য তাদের জবাবদিহি করতে হবে। ৫ জুন দুই দেশের সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ের পতাকা বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বৈঠকে তাদের কাছে এ বিষয়ে জবাব চাওয়া হবে। তিনি বলেন, এ ঘটনার পর তারা অনেক নাটক করেছে। অনেক প্রপাগান্ডা করেছে। কেন তারা এ রকম করলো তার জবাব চাইবো।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিজিবির রিজিওন কমান্ডার বলেন, সীমান্তের নিরাপত্তায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি। ইতিমধ্যে সীমান্তের চেকপোস্টগুলোতে শক্তি বৃদ্ধি করা হয়েছে। আমাদের পর্যাপ্ত সরঞ্জাম ও প্রস্তুতি আছে। মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, শুক্রবার ও শনিবার আমাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিল এর প্রত্যুত্তর (বিজিপি) তারা পেয়েছে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ আহাম্মদ বলেন, আপনারা ওদের (বিজিপি) সঙ্গে সে দেশের জনগণের সর্ম্পক বিবেচনা করুন, মানসিকতা পর্যালোচনা করুন, তাহলে জবাব পেয়ে যাবেন। আমি মনে করি এ ঘটনা তাদের মানসিকতার প্রতিফলন ও অভ্যন্তরীণ বিষয়। বিজিপি কাপুরুষোচিত কাজ করেছে বলেও মন্তব্য করে তিনি বলেন, যে দুর্গম এলাকায় ওরা (বিজিপি) আমাদের নিহত বিজিবি সদস্যের লাশ হস্তান্তর করেছে সেখান থেকে লাশটি ৩১ ব্যাটালিয়ন কার্যালয়ে আনতে ১২ ঘণ্টা সময় লেগেছে।

এ সময় নিহত বিজিবির নায়েক মো. মিজানুর রহমানের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিজিবির ৩১ ব্যাটালিয়ন কার্যালয় মাঠে নিহত মিজানুরের লাশ নিয়ে আসা হয়। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার সকাল ৯টার দিকে ফের নাইক্ষংছড়ি ৩১ ব্যাটালিয়ন মাঠে আনা হবে। সেখানে জানাজা শেষে হেলিকপ্টারে করে কুমিল্লায় গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হবে মিজানের লাশ।

এদিকে এখনো বান্দারবান সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে স্থানীয় সূত্র জানায়। সীমান্তে গোলাগুলি বন্ধ হলেও এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

এর আগে শনিবার সকালে সীমান্তে গুলিবর্ষণ ও বিজিবি সদস্যের লাশ ফেরত না দেয়ায় ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত মিউ মিন্ট থানকে ফের তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়। গত বৃহস্পতিবারও তাকে তলব করা হয়েছিল।

বিজিবির উপর মায়ানমারের সীমান্ত পুলিশ বাহিনীর গুলিবর্ষনের পর বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে উত্তেজনা ক্রমশই বাড়ছে। সীমান্তের তুমব্রু, ঘুনধুম, আশারতলি এলাকায় মায়ানমারের সেনাবাহিনী রণ সজ্জায় সজ্জিত হয়ে অবস্থান নিয়েছে। এতে সীমান্তে বসবাসকারী লোকজনদের মধ্যে আতংক উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইনফেন্টি বিভাগের একটি দল বিজিবিকে সহায়তা দিতে নাইক্ষংছড়িতে অবস্থান নিয়েছে। সীমান্তের একটি সূত্র জানায়, মিয়ানমার সীমান্তের তুমব্রু-ভেন্ডুলা (নাইক্ষ্যংছড়ির বিপরীতে),বলিবাজার থেকে মংডু শহর পর্যন্ত প্রায় ৯০ কিলোমিটার সীমান্তে অস্ত্রশস্ত্র মজুদ করছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সেখানে রোহিঙ্গা নাগরিকদের নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের  ১৮৮ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে।

Exit mobile version