ভান্তের সাথে মতবিরোধের কারনে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী ভান্তকে মন্দির ছাড়া
মানিকছড়ি সংবাদদাতা:
মানিকছড়ির ঐতিহ্যবাহী মহামুনি পাহাড়ের ‘বিশ্বশান্তি রাজ মহামুনি বৌদ্ধ চৈত্যা মন্দিরের ধর্মীয় গুরু উত্তমা মহাথেরো’ প্রকাশ থৈইচিমং এর মতবিরোধের কারণে পূজারীদের একটি পক্ষ রবিবার রাতে প্রথমে ভান্তকে মন্দির থেকে বের করে দেয়। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় ভোরে অর্ধশতাধিক শিক্ষানুবিস ভান্তকেও বের করে দেওয়ার ঘটনায় ভক্তদের মাঝে উত্তেজনা বাড়ছে। বিকালে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শিক্ষার্থীদের মন্দিরে প্রবেশ করানো হয়েছে।
মন্দির সূত্রে জানা গেছে, মংরাজ আবাসস্থল মানিকছড়ির ঐতিহ্যবাহী মহামুনি পাহাড়ের চূড়ায় ১৮৮৩ সালে ‘বিশ্বশান্তি রাজ মহামুনি বৌদ্ধ চৈত্যা মন্দির’ প্রতিষ্ঠা হয়। গত কয়েক বছর ধরে এ মন্দিরে ধর্মীয় শিক্ষানুবিস হিসাবে স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে পড়ালেখা করছিল। স্থানীয় কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক উত্তমা মহাথেরো’ প্রকাশ থৈইচিমং নিজ অর্থায়নে প্রায় ৬০-৭০ জন ছাত্রকে নিয়মিত এখানে ধর্মীয় পড়ালেখা শিখাতো। সম্প্রতি ভান্তে উত্তমা মহাথেরো’ প্রকাশ থৈইচিমং এর সাথে এলাকার কিছু উপজাতীদের মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। যার ফলে গত রবিবার রাতে রাজপাড়ার কতিপয় ব্যক্তিরা মন্দিরে গিয়ে ভান্তকে বের করে দেয়। নিরুপায় হয়ে ভান্তে সকালে এলাকা ছেড়ে চলে যায়। তাৎক্ষণিক শিক্ষার্থীরা এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে এক পর্যায়ে সকল শিক্ষার্থীকেও মন্দির থেকে বের হয়ে যেতে হয়! নিরুপায় হয়ে শিক্ষার্থীরা মন্দির থেকে বের হয়ে খোলা আকাশের নীচে অবস্থান নেন। দীর্ঘ সময় ধরে এসব শিক্ষার্থীরা মানবতর জীবন-যাপন করলেও দুপুর পর্যন্ত ওদের পাশে কেউই এগিয়ে আসেনি! । এ খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় প্রথমে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। এ সময়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী না খেয়ে থাকায় অসুস্থ হয়ে পড়ছিল।
শিক্ষার্থী উচিংনু মারমা (১৪), ইন্দ্র বংশ ভিক্ষু ধ্যান(১৮) সাংবাদিকদের জানান, ভান্তের সাথে স্থানীয়দের মতবিরোধ থাকতে পারে। বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা (ভান্তে) শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয়দের বিরোধ থাকার কথা নয়। তবুও তারা ভোর রাতে মন্দিরে এসে আমাদেরকে অমানবিকভাবে কাপড়-চোপড়, বই-খাতা নিয়ে বের করে দিয়েছেন। আমরা ঘটনার বিচার দাবী করছি।
এ খবর পেয়ে বিকাল ৩ টার দিকে উপজেলা চেয়ারম্যান ম্রাগ্য মারমা ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম ফারুক ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং শিক্ষার্থীদের শান্ত্বনা দিয়ে মন্দিরে অবস্থানের সুযোগ করে দেন। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান ম্রাগ্য মারমা সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি অমানবিক। এ ঘটনা যারা ঘটিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।