parbattanews

ভারী বর্ষণে বান্দরবান-থানচি সড়ক দেবে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

অব্যাহত টানা ভারী বৃষ্টির কারণে বান্দরবান-থানচি সড়কের কার্পেটিং দেবে কয়েক স্থানে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে জেলা সদরের সাথে থানচি উপজেলা সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এছাড়াও বিদ্যুৎতের খুটি সড়কের নিচে পড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। গত ১৫ দিন বিদ্যুৎ নেই, মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই, ইন্টারনেট নেই। ফলে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। গত ১ আগস্ট থেকে ভারী বৃষ্টিতে এ অবস্থার সৃস্টি হয়েছে।

বর্তমানে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে, সরকারি আশ্রয় শিবির থেকে বাড়ি ফিড়তে শুরু করেছে মানুষজন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভারী বৃষ্টি ও বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও বান্দরবান-থানচি সড়কে ডাক বাংলো, এলাকার ২০০ মিটারের মতো পাহাড় ধসে সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়েছে, একই স্থানে তিনটি বিদ্যুৎতের খুটি সড়কের নিচে পড়ে গেছে। এছাড়া জীবন নগর, গ্যালেঙ্গা ঝিড়ি উপরে কালা পাহাড়, দাকছৈ পাড়া, শিলা ঝিড়ি, বিদ্যামনি পাড়াসহ খন্দ খন্দ ভাবে প্রায় ৩-৪ কিলোমিটার রাস্তায় কার্পেটিং ধাবিয়ে সড়কের গর্তের সৃষ্টি হয়েছে ।

এদিকে থানচি আলিকদম উপজেলা অভ্যন্তরীণ সড়কে ২৭ কিলোমিটার অংম্পুং ম্রো পাড়া স্থানে পাহাড় থেকে বিশালাকার পাথর ধসে পড়ে সড়ক যানবাহন চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তাই হালকা, ভারী, সিএনজি, মোটরসাইকেল চলাচল করার সম্ভব ও হচ্ছে না।

সম্প্রতি পায়ে হেঁটে সড়ক পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মুহা. আবুল মনসুর। এসময় পিআইও মোহাম্মদ সূজন মিয়া, মংপ্রু হেডম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন।

বুধবার সকাল থেকে সড়কে পাহাড় থেকে ধসে পড়া মাটি সড়ানোর কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা ফায়ার ডিফেন্সের কর্মকর্তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, থানচি উপজেলা সদর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরত্বে বিদ্যমনি পাড়া ও দিংতে পাড়া মাঝামাঝি স্থানের প্রায় দেড় কিলোমিটার খন্দ খন্দ ভাবে সড়কে উপর কার্পেটিং দেবে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। শিলা ঝিড়ি মেনরোয়া পাড়া এলাকাও একইভাবে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও থানচি উপজেলা পরিষদের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খামলাই ম্রো বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছরে এভাবে ভারী ও টানা বৃষ্টি হয় নি এবং বান্দরবান-থানচি সড়কে এমন ক্ষতি হয়েছে প্রতিয়মাণ হয় নি। ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানান তিনি।

বিদ্যামনি পাড়া বাসিন্দা পিয়ুর চন্দ্র ত্রিপুরা ৫০ বলেন, গত রবিবার রাতে ধুমকেতুর মতো করে বিকট শব্দ হয়েছে। আমরা মনে করছি পাহাড় ধসে পড়েছে, কিন্তু না। সোমবার সকালে গিয়ে দেখি এক কিলোমিটারের মতো রাস্তায় কার্পেটিং করা পিছ ঢালাই দেবে গিয়েছে এবং সড়কে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

ম্রো নেতারা জানান, টানা ভারী বর্ষণে থানচি-বান্দরবানে সড়কে পোরা বাংলা এলাকার সড়কের মাটি ধসে ২০০ গজের মতো সড়কটি বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ফলে সড়কের পোরা বাংলার এলাকার জীবন নগর, ক্যাপ্রু পাড়া, নিল দিগন্ত, এ্যাম্পু পাড়াসহ ২ শতাধিক ম্রো পাড়ায় হাজার হাজার মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য আনা-নেয়ার সম্ভব না হলে খাদ্য সঙ্কটের সম্ভাবনা রয়েছে ।

তারা আরও জানান, সেনাবাহিনীর একটি টিম ইতোমধ্যে সড়ক মেরামতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিচ্ছিন্ন হওয়ার সড়কের অপর একটি পাহাড় থেকে ইউটার্ন দিয়ে সড়ক নতুন করে নির্মাণ ছাড়া সম্ভাবনা নেই। ইউটার্ন দিয়ে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছে ঐ নেতারা। অতি শ্রীঘ্রই মেরামতের কাজ শুরু করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

Exit mobile version