parbattanews

ভাসানচর পরিদর্শন করে আসা রোহিঙ্গা নেতারা নিরব

টেকনাফ থেকে ভাসানচর পরির্দশনে যাচ্ছেন রোহিঙ্গা নেতারা

ভাসানচর পরিদর্শন শেষে ক্যাম্পে ফিরে এসে সাধারণ রোহিঙ্গাদের মাঝে ভাসানচরের পরিবেশ সম্পর্কে জানানো ও উদ্ধুদ্ধ করার কথা থাকলেও নিরব ভূমিকা পালন করছে রোহিঙ্গা নেতারা। বিশেষ করে ক্যাম্পে অবস্থানকারী স্বশস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের ভয়ে আতঙ্কে এসব রোহিঙ্গা নেতারা মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা বলে সুত্র জানিয়েছেন।

গত মঙ্গলবার বিকেলে ভাসানচর পরিদর্শন করে ফিরে আসা ৪০ সদস্যের রোহিঙ্গারা স্ব -স্ব ক্যাম্পে গিয়ে সেখানকার সুযোগ-সুবিধা ও অবকাঠামো সম্পর্কে ক্যাম্পে জানানোর কথা বললেও বুধবার বিকেল পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গার সাথেও কথা বলেনি।

ভাসানচর পরিদর্শন করে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বালুখালী ১নং ক্যাম্পের এক রোহিঙ্গা নেতা বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় আমরা ভাসানচর পরিদর্শন করেছি। সেখানকার পরিবেশ দেখেছি। রোহিঙ্গাদের জন্য নির্মিত আবাসন প্রকল্প দেখে ভালো লেগেছে। তবে ক্যাম্পে ফিরে এসে এ বিষয়ে রোহিঙ্গাদের বুঝানোর মতো কোন পরিস্থিতি নেই। কারণ ক্যাম্পে সশস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ত চাপ প্রয়োগ করে আসছে। তিনি এও বলেন যে, ভাসানচর পরিদর্শন শেষে একদিন গত হলে গেলেও কোন রোহিঙ্গা আমাদের নিকট থেকে কোন তথ্য জানতে আগ্রহ প্রকাশ করেনি।

রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধি দলের সদস্য নুর আলমও বলেন, ভাসানচরের চারপাশের বাঁধ ঘুরে দেখে সার্বিক পরিবেশ ভালো লেগেছে। সেখানে রোহিঙ্গাদের জন্য সরকারের গড়ে তোলা অবকাঠামো আমাদের পছন্দ হয়েছে। কিন্তু সাধারণ রোহিঙ্গারা সেখানে যাবে কিনা তাদের বিষয়৷

বুধবার ভাসানচর পরিদর্শন করা অনেকের কাছে মতামত জানতে চাওয়া হলে তারা নাম প্রকাশ করার কথা বলেন আবার কেউ বিষয়টি এড়িয়ে যান, অনেকের মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন।

ভাসানচর পরিদর্শন করে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে বালুখালী ক্যাম্প-,৯ এর ব্লক আই-টু এর বাসিন্দা নূর আলম, বালুখালী ক্যাম্প-১০ এর ব্লক জি ২২্#৩৯;র নূর মোহাম্মদ, ক্যাম্প ১১ এর হেড মাঝি মোঃ ওসমান, ব্লকমাঝি দিল মোহাম্মদ ও গোল ফারাজ, ক্যাম্প ১২ ময়নার ঘোনা হেডমাঝি আব্দুর রহিম, ব্লক মাঝি নূর হোসাইন ও নূর জাহান, ক্যাম্প ১৯ বার্মাপাড়া  হেডমাঝি মুজি উল্লাহ, ব্লকমাঝি মোঃ হাবিবুর রহমান,নূর মোস্তফা ও মো: রফিক ছাড়াও উখিয়া- টেকনাফে ৪০জন রোহিঙ্গা নেতা রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মাহবুব আলম তালুকদার বলেছেন, ভাসানচর পরিদর্শন করে আসা রোহিঙ্গা নেতারা ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের সেখানকার পরিবেশ সম্পর্কে বুঝাবেন। এক্ষেত্রে শতভাগ রোহিঙ্গা ভাসানচরে যেতে রাজি নাও হতে পারে। তবে কাউকে জোর করে পাঠানো হবে না। রাজি সাপেক্ষে দ্রুত সময়ের মধ্যে এক লক্ষ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ভাসানচর পরিদর্শন করা রোহিঙ্গাদের বাধাগ্রস্থ করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বিষয়টি অবগত নন বলে জানান।

ক্যাম্প-৮, ৯ ও ১০ এর ইনচার্জ আবু সালেহ মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ বলেন, ভাসানচর যেতে সাধারণ রোহিঙ্গাদের বাধাগ্রস্থ করার ব্যাপারে কোন তথ্য এখনো পায়নি। তথ্য পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার হবে।

উল্লেখ্য যে, গত শনিবার সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতায় উখিয়া-টেকনাফ থেকে ৪০জন রোহিঙ্গা নেতাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় নৌবাহিনী, পুলিশসহ অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের কর্মকর্তারা সাথে ছিলেন।

Exit mobile version