ভাসানচর পরিদর্শন শেষে ক্যাম্পে ফিরেছে রোহিঙ্গা নেতারা

fec-image

ভাসানচর ঘুরে শিবিরে ফিরে এসেছে ৪০ সদস্যের রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দল। সেখানের পরিবেশ বসবাসের উপযোগী কি না, তা দেখে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উখিয়া বালুখালী টিভি রিলে কেন্দ্র সংলগ্ন ট্রানজিট ক্যাম্প পৌঁছান। সেখান থেকে উখিয়া-টেকনাফে স্ব স্ব শরাণার্থী শিবিরে ফিরেছেন এসব নেতারা। পরে নিজ নিজ কমিউনিটির কাছে ভাসানচরে তৈরি করা আবাসন ব্যবস্থাপনাগুলো তুলে ধরবেন এবং অন্তত প্রতি ক্যাম্প থেকে কিছু কিছু রোহিঙ্গা পরিবার যাতে ভাসানচরে যেতে রাজি হয় সেটি বোঝানোর চেষ্টা চালাবেন।

ভাসানচর দেখতে যাওয়া উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্প-, ৯ এর ব্লক আই-টু এর বাসিন্দা নূর আলম, বালুখালী ক্যাম্প-১০ এর ব্লক জি ২২’র নূর মোহাম্মদ, ক্যাম্প ১১ এর হেড মাঝি মো. ওসমান, ব্লকমাঝি দিল মোহাম্মদ ও গোল ফারাজ, ক্যাম্প ১২ ময়নার ঘোনা হেডমাঝি আব্দুর রহিম, ব্লকমাঝি নূর হোসাইন ও নূর জাহান, ক্যাম্প ১৯ বর্মপারা হেডমাঝি মুজি উল্লাহ, ব্লকমাঝি মো. হাবিবুর রহমান, নূর মোস্তফা ও মো. রফিকসহ অন্যান্য রোহিঙ্গা নেতারা বিকেল ৬টার দিকে স্ব স্ব ঘরে ফিরেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে৷

মঙ্গলবার রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ট্রানজিট ক্যাম্পে জড়ো হওয়া ৪০ রোহিঙ্গা নেতারা ভাসানচরে বিষয়ে এমন অভিমত ব্যক্ত করে গণমাধ্যমকে বলেন, সোমবার দ্বিতীয় দিনে সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ভাসানচরে গরু, ছাগল, মুরগীর খামার, ভাসানচরের চারপাশের বাঁধ ঘুরে দেখে সার্বিক পরিবেশ ভালো লেগেছে। সেখানে রোহিঙ্গাদের জন্য সরকারের গড়ে তোলা অবকাঠামোগুলো মজবুত ও সুন্দর। এগুলো আমাদের পছন্দ হয়েছে। আমরা বিষয়টি শিবিরে বসবাসকারি রোহিঙ্গাদের জানানো।

সরকার ঘিঞ্জি শরণার্থী শিবির থেকে কমপক্ষে এক লাখ রোহিঙ্গাকে মেঘনা নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেগে ওঠা ওই দ্বীপে পাঠানোর অংশ হিসেবে এই উদ্যোগ নেয়। এজন্য রোহিঙ্গা নেতাদের একটি দলকে সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতায় গত শনিবার উখিয়া-টেকনাফ থেকে ৪০জন রোহিঙ্গা নেতাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় তাদের সঙ্গে ছিলেন নৌবাহিনী, পুলিশসহ অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।

শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, প্রতিনিধিদলের সকলে উখিয়া-টেকনাফ বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হেড মাঝি, মাঝি ও মসজিদের ইমাম। তারা ভাসানচর আবাসন প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন। সেখানে থাকা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে জেনেছেন, এখন তা রোহিঙ্গাদের কাছে সেখানকার পরিবেশ পরিস্থিতির সম্পর্কে তুলে ধরবেন। রোহিঙ্গারা রাজি হলে যেকোনো সময় তাদের ভাসানচরে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন আরআরআরসি মাহবুবুল আলম তালুকদার।

উল্লেখ্যে ২০১৭ সালের আগস্টের পরে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয় উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি শিবিরে। ঘনবসতিপূর্ণ ঘিঞ্জি ক্যাম্পে রোহিঙ্গারা নানা রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় সরকার ভাসানচরে স্থানান্তরে সিদ্ধান্ত নেয়।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ক্যাম্পে, পরিদর্শন, ভাসানচর
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন