ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে ১২ দিন, জীবিত উদ্ধার

fec-image

তুরস্ক ও সিরিয়ায় শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর এখনো উদ্ধারকাজ চলছে। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে পাওয়া যাচ্ছে মরদেহ। কোথাও কোথাও ধ্বংসস্তূপের নিচে মিলছে জীবিত মানুষের সন্ধানও। শক্তিশালী ওই ভূমিকম্পের ১২তম দিনে এসে গতকাল শুক্রবার তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে ৪৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি তীব্র শীতের মধ্যে প্রায় ২৭৮ ঘণ্টা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে ছিলেন।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, উদ্ধার হওয়া ওই ব্যক্তির নাম হাকান ইয়াসিনওগলু। সিরিয়ার সীমান্তসংলগ্ন তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় হাতা প্রদেশে তাঁর বাড়ি।
হাকানকে উদ্ধারের ছোট একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

তাতে দেখা যায়, ধসে পড়া একটি ভবনের ভেতর থেকে স্ট্রেচারে করে হাকানকে বের করে আনছেন উদ্ধারকর্মীরা। এ সময় হাকানের গায়ে সোনালি রঙের একটি জ্যাকেট ছিল। তিনি যাতে পড়ে না যান, সে জন্য স্ট্রেচারের সঙ্গে তাঁকে বেঁধে রাখা হয়েছিল।
পরে উদ্ধারকর্মীরা হাকানকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যান। তিনি এখন চিকিৎসাধীন। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে হাকানের মুখ দেখা যায়নি।

গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার তুরস্কে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ১৪ বছরের এক বালকসহ কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতে গতকাল জানিয়েছেন, তুরস্কে ভূকম্পনপীড়িত অন্তত ২০০টি জায়গায় এখনো উদ্ধারকাজ চলছে।

৬ ফেব্রুয়ারি ভোরে তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। ভূমিকম্পে নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ৪৪ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। এর মধ্য তুরস্কেই মৃত মানুষের সংখ্যা ৩৮ হাজার ছাড়িয়েছে। দুই দেশে এখনো উদ্ধারকাজ চলছে। এ কারণে মৃত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কখনো কখনো তাপমাত্রা নেমে আসছে হিমাঙ্কের নিচে। তীব্র শীত থেকে বাঁচতে আগুন পোহাচ্ছেন ভূমিকম্পের ফলে গৃহহীন মানুষেরা। গতকাল তুরস্কের কাহরামানমারাসে
ভূকম্পনপীড়িত তুরস্কের ১০টি অঞ্চলে ৩ মাসের জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। এসব এলাকায় যথাসময়ে যথেষ্ট ত্রাণ না পৌঁছানোয় খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে তীব্র শীত। ক্ষুধা ও তীব্র শীতে কষ্ট পাচ্ছে অসংখ্য মানুষ। পরিস্থিতি এমন যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছে, ভূমিকম্পে যারা বেঁচে গেছে, তাদেরও অনেকে মারা যেতে পারে আশ্রয়, খাবার, সুপেয় পানি ও জ্বালানির অভাবে।

তুরস্কের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, দেশটিতে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে—এমন মানুষের সংখ্যা ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি। আর সিরিয়ায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক এল-মোস্তাফা বেনলামিল জানান, দেশটিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এক কোটির বেশি মানুষ। সংস্থাটির আশঙ্কা, দুই দেশে মৃত মানুষের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়াতে পারে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: উদ্ধার, চাপা, জীবিত
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন