parbattanews

ভূমি কমিশনকে কাজ করতে দিন কেউ বঞ্চিত হবে না- গওহর রিজভী

চজচজকস

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোর বাঙালিরা বঞ্চিত হবেন না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী বলেছেন, যাঁদের সেখানে বৈধ জমি আছে, তাঁদের কেউ বঞ্চিত হবেন না। এটা সরকারের একটা অঙ্গীকার।

তিনি বলেন, শান্তিচুক্তির ১৮ বছর পর পার্বত্য ভূমি কমিশন আইন সংশোধন পাশ হয়েছে। সেখানে অবিশ্বাস ও আস্থাহীনতা থাকায় এ সময় লেগেছে। এখন আইন হয়েছে, কমিশনের আহ্বানে ২৪ হাজার আবেদন পড়েছে। আমি চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেছি। এসব আদেনের নিষ্পত্তি করতে বেশী সময় লাগবে না। কমিশনকে কাজ করতে দিন। কেউ বঞ্চিত হবে না।

রাজধানীর ইস্কাটনে সোমবার বেলা একটায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে ‘প্রমোটিং কালচারাল ডাইভারসিটি অভ স্মল এথনিক গ্রুপস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।

বিস আয়োজিত প্রধান অতিথির বক্তব্যে গওহর রিজভী বলেন, ‘যাঁরা ভূমি কমিশন সংশোধন নিয়ে ভয়ের মাঝে আছেন, আমি পুনরায় বাঙালিদের নিশ্চিত করছি, আপনারা কেউই বঞ্চিত হবেন না। তাঁরাই বঞ্চিত হবেন, যাঁরা সেখানে অবৈধভাবে দখল করে আছেন।’

গওহর রিজভী বলেন, পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের আইন সংশোধনই হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোতে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে একমাত্র বড় বাধা। ভূমি কমিশন আইন বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলছে। এটা যখন হয়ে যাবে, তখন পার্বত্য জেলাগুলোর সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।

গওহর রিজভী আরও বলেন, ‘আমাদেরই আমাদের নৃগোষ্ঠীগুলোর সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য সুরক্ষিত করতে হবে। বৈচিত্র্য সমাজকে দূর্বল করে না বরং আরও শক্তিশালী করে। নান্দনিকতা, সৌন্দর্যের প্রেক্ষাপট, ন্যায়বিচারের প্রেক্ষাপট চিন্তা করুন, আমাদের দেশের বৈচিত্র্যকে প্রতিপালন করা হয়। যতক্ষণ আর যত দিন না পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলো মূলধারার সঙ্গে একীভূত করা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাজ তথা সোনার বাংলা গঠন করা যাবে না।’

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের বিকাশে একটি নীতিমালা করার সুপারিশ জানিয়ে তিনি বলেন, ব্যবহার হয় না বলে অনেক ক্ষুদ্র জাতির মাতৃভাষা বিলুপ্ত হয়েছে। এগুলো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের সংরক্ষণ করা উচিত। তিনি বৈসাবী উৎসবকে গণমাধ্যমে প্রচার, উপজাতীয় সাংস্কৃতিক টিম পাঠানো, উপজাতীয় সাংস্কৃতিক পলিসি করার সুপারিশ করেন মূল প্রবন্ধে।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা। তিনি িএ অনুষ্ঠানের সভাপতিত্বও করেন। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, মানবেতিহাসে সংস্কৃতিগত পার্থক্যের কারণে অনেক বছর ধরেই মানুষের মধ্যে বৈষম্য বিদ্যমান। ভুল-বোঝাবুঝির কারণে অনেক সম্পদ ও অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। এর জন্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে মূল্যায়ন ও উন্নত করতে হবে।

সেমিনারে বিআইআইএসএসের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম আবদুর রহমান, মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) অনুপ কুমার চাকমা, রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশের (রিব) নির্বাহী পরিচালক মেঘনা গুহঠাকুরতা, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ফারুক সোবহান, সাবেক নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন, মে. জে, অব. জীবন কানাই দাশ প্রমুখ বক্তব্য দেন।

Exit mobile version