parbattanews

ভূমি কমিশনে তিন পার্বত্য জেলা থেকে যোগ্য বাঙালীদের নিয়োগ দিন- পার্বত্য বাঙালী ছাত্র পরিষদ

pbcp-cu

বিজ্ঞপ্তি:
শুক্রবার বিতর্কিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ১৯৯৭ বাতিলের দাবিতে এক বিশাল মানব বন্ধন করেছে পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ একাংশের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ও চট্টগ্রাম মহানগরী শাখা।

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়(চবি) শাখার সভাপতি খোরশেদ আলম ফিরোজের সভাপতিত্বে মানব বন্ধনটি দুপুর ২.০০ ঘটিকায় সময় শুরু হয়ে ৩.০০ ঘটিকা পর্যন্ত অবস্থান নেয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ একাংশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোঃ শাব্বির আহম্মদ।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, ২ ডিসেম্বর ১৯৯৭খ্রি. যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি করা হয়েছে তা কার্যকর হলে গোটা পার্বত্য চট্টগ্রামের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদসহ তিনটি পার্বত্য জেলা পরিষদের হাতে। ফলে, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে বাঙালি উচ্ছেদ করার নিরঙ্কুশ ক্ষমতা পেয়ে যাবে পার্বত্য জনসংহতি সমিতির সভাপতি সন্তু লারমা।

আর “পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন (সংশোধনী) আইন -২০১৬” ব্যবহার করে সন্তু লারমা কোন বাঙালি পরিবারকে পার্বত্য চট্টগ্রমে তার ভিটামাটি থেকে উচ্ছেদ করলেও কোন আইন আদালত কিংবা রাষ্ট্রের প্রতিকার করার ক্ষমতা থাকবে না।

তিনি আরও বলেন, ভূমি কমিশন আইনে ১৬ নং অনুচ্ছেদে বলা আছে যে, “ধারা ৬(১) এ বর্ণিত কোন বিষয়ে দাখিলকৃত আবেদনের উপর কমিশনের প্রদত্ত সিদ্ধান্ত দেওয়ানী আদালতের ডিক্রী বলিয়া গণ্য হইবে, তবে উক্ত সিদ্ধান্তের বিরোদ্ধে কোন আদালত বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষের নিকট আপিল বা রিভিশন দায়ের বা উহার বৈধতা বা যথার্থতা সম্পর্কে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।” এ অবস্থায় পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত লক্ষ লক্ষ বাঙালি পরিবার তাদের ভিটেমাটি হারানোর আশঙ্কা রয়েছে।

নেতৃবৃন্দ “পার্বত্য ভূমি কমিশন (সংশোধন) আইন-২০১৬”এর তীব্র সমালোচনা করেন, তারা দাবি তোলেন এ কমিশনে তিন জেলা থেকে যোগ্য পার্বত্য বাঙালিদেরকে কমিশনের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করার। এ সময় তারা উল্লেখ্য করেন উক্ত কমিশনে বাঙালি প্রতিনিধি না থাকায় কমিশনের সিদ্ধান্ত ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ তৌহিদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামকে রাজনৈতিকভাবে উত্তপ্ত করে রাখতে ও অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে অর্থাৎ বাঙালিদেরকে অন্ধকারে নিমজ্জ্বিত রেখে এক চেটিয়াভাবে উপজাতিদেরকে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে একটি কুচক্রীমহল। এর ফলে বাঙালি জনগোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে পিছিয়ে যাচ্ছে।

সভাপতির বক্তৃতায় খোরশেদ আলম ফিরোজ বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ১৯৭১ সালে আমদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা এই অঞ্চলকে শত্রু মুক্ত করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন। এখানে স্বাধীনভাবে বসবাস করার সাংবিধানিক অধিকার বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের রয়েছে। আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা হয়েও শিক্ষা, চাকুরি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া এক তরফাভাবে উপজাতীদের খবর ছেপে এটাই প্রমাণ করতে চাইছে যে, পার্বত্য চট্টগ্রামে কোন বাঙালির বসবাস নেই কিন্তু তারা ভাল করেই জানেন পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠী স্থায়ী বাঙালি। সুতরাং এ অঞ্চলের সকল সুযোগ সুবিধা জনসংখ্যা অনুপাতে দিতে হবে।

অন্যান্য বক্তারা, অভিলম্বে ভূমি কমিশন আইন সংশোধন করে জনসংখ্যা আনুপাতে বাঙালি প্রতিনিধি নিয়োগ করার পাশাপাশি বিতর্কিত ধারাগুলো বাতিল দাবি জানান। অন্যথায়, তিন পার্বত্য জেলায় কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামকে অচল করে সরকারকে বাধ্য করা হবে।

উক্ত অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মনির হোসেন, খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ মাঈন উদ্দীন, চবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ হারুন-আর-রশীদ, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মোঃ আতাউর রহমান, সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল করিম, তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক মোঃ আব্দূল হামিদ, প্রচার সম্পাদক মোঃ ইখতিয়ার ইদ্দীন ইমন, সহ-প্রচার সম্পাদক মোঃ আব্দুল কাদের সিয়াম, অর্থ সম্পাদক মোঃ ইমরান হোসাইন, সহ অর্থ সম্পাদক মোঃ নাঈমসহ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম মহানগরীর অসংখ্য নেতৃবৃন্দ।

Exit mobile version