parbattanews

ভূয়া ভিডিও দিয়ে লামা পৌর নির্বাচনে ধানের শীষের মনোনয়ন পাওয়ার অভিযোগঃ ৫জনের বিরুদ্ধে মামলা

বান্দরবানের লামার বিএনপি দলীয় সাবেক পৌর মেয়র আমির হোসেন নিজ দলের নেতাদের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) রাত ৮টায় উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

ব্যক্তিগত চরিত্র হনন, বানোয়াট নোংরা ভিডিও দ্বারা ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন ও দলীয় মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে দুষ্কৃতকারীদের আইনের আওতায় আনার অভিযোগে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আমির হোসেন বলেন, দলের বিরুদ্ধে আমার কোন অভিযোগ নেই। দল লামা পৌরসভা নির্বাচনের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে, আমি তা মেনে নিয়েছি। কিন্তু লামা বিএনপির নামধারী ৫ জনের করা মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগের কারণে আমার সামাজিক সম্মান চরমভাবে হেয় হয়েছে।

তিনি বলেন, গত ১০ অক্টোবর লামা বিএনপির নামধারী ৫ জন কর্তৃক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে করা মিথ্যা অভিযোগে বিষয়ে আইনী বিচার দাবি করছি।  এদিকে, ২২ ডিসেম্বর অভিযুক্ত পাঁচজনের বিরুদ্ধে লামা উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন আমির হোসেন।

বিবাদীরা হল, মোঃ আব্দুর বর, এম. রুহুল আমিন, মোঃ সাইফুদ্দিন, আবু তাহের ও আরিফ চৌধুরী। মিথ্যা ভিডিও প্রদর্শন করে দলীয় মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত করার বিচার দাবি করে মামলায় ৩ কোটি টাকার মানহানির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে উল্লেখিত ভিডিও চিত্রের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমির হােসেন বলেন, আমার ব্যক্তিগত চরিত্র হনন করা, অসত্য, মিথ্যা, বানােয়াট নােংরা ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করার প্রতিবাদ ও দোষীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সাংবাদিক সম্মেলন। আমি ১৯৮২ সাল থেকে ছাত্রদল, ১৯৮৮ সাল থেকে যুবদল এবং ১৯৯২ সাল থেকে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও ২০১৪ সাল থেকে অদ্যবধি পর্যন্ত বিএনপির সভাপতি আছি। আমি লামা পৌরসভা বিএনপির মনােনয়ন প্রত্যাশী ছিলাম। মাম্যাচিং ও জাবেদ রেজার নােংরা, মিথ্যা ও বানােয়াট তথ্য প্রদান করে আমাকে মনােনয়ন বঞ্চিত করে। আমি স্বর্ণপদক প্রাপ্ত একজন সাবেক মেয়র ও লামা সদর ইউ.পি চেয়ারম্যান ছিলাম। গত পৌরসভা নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ছিলাম।

তিনি বলেন, সাচিং প্রু জেরীর নেতৃত্বে লামা উপজেলা এবং পৌর বিএনপি ও সকল অঙ্গ-সংগঠনের মতামত নিয়ে লামা পৌরসভার মেয়র প্রার্থী হিসাবে আমাকে মনােনিত করে। আমাকে লামা পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড বিএনপির নেতৃবৃন্দ মনােয়নের জন্য সুপারিশ করেছেন। আমার মনােনয়ন পত্র পৌর বিএনপির সভাপতি পদত্যাগ করায় সহ-সভাপতি আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক গােলাম ছরােয়ার মৃত্যুবরণ করায় সহ-সাধারণ সম্পাদক ১ দেলােয়ার হােসেন রফিক ও সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল ইসলাম মনােনয় পত্রে সুপারিশ করে।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, মনােনয়নপত্রের সাথে ৯টি ওয়ার্ড বিএনপি-র রেজুলেশন, পৌর বিএনপি ও উপজেলা বিএনপির স্বাক্ষরিত রেজুলেশন মনােনয়নপত্রের সাথে বিএনপি-র কেন্দ্রীয় গুলশান কার্যালয়ে জমা দিয়েছি।

আমি গত ১৫ ডিসেম্বর ২০২০ইং তারিখ বিএনপির মহাসচিবের নিকট দেখা করেছি এবং বান্দরবান জেলা বিএনপি-র বিতর্কিত কমিটির বিষয়ে আলাপ করেছি। জেলা কমিটির ২১ জন সদস্যের মধ্যে কমিটি থেকে ১৪ জন পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছে, উক্ত কমিটিতে আমি সহ-সভাপতি ছিলাম। মাম্যাচিং ও জাবেদ রেজা ষড়যন্ত্র করে তাদের সমর্থিত লােক দ্বারা আমাকে মনােনয়ন পত্র থেকে বঞ্চিত করে। অযােগ্য অথর্ব প্রার্থী দিয়ে আওয়ামী প্রার্থীকে জয় পাইয়ে দিতে পিছনের দরজা দিয়ে গােপনে আতাত করে বিশেষ সুবিধা নিয়েছে মর্মে আমার বিশ্বাস।

মিথ্যা, বানােয়াট ভাবে ব্যক্তি চরিত্র হনন করে আমাকে মনােনয়ন বঞ্চিত করে। যে নােংরা ভিডিও প্রদর্শন করা হয়েছে উক্ত ভিডিওর সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নাই এবং আমার নয়।

সংবাদ সম্মেলনে লামা উপজেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

Exit mobile version