মণিপুরের হিংসার রেশ এ বার পড়শি মেঘালয়েও, দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ শিলংয়ে, আটক ১৬

fec-image

মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ের কাছে নোংরাম হিল অঞ্চলে কুকি এবং মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় মোট ১৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

এখনও শান্ত হয়নি মণিপুর। কিন্তু সে রাজ্যের হিংসার রেশ এ বার এসে পৌঁছল পড়শি রাজ্য মেঘালয়েও। মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ের কাছে নোংরাম হিল অঞ্চলে কুকি এবং মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় মোট ১৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। নতুন করে অশান্তির ঘটনা এড়াতে মেঘালয় পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, কেউ আইন হাতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করলে চরম পদক্ষেপ করতে বাধ্য হবে তারা।

মণিপুরি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর তরফে বুধবার আন্দোলনকারী মেইতেই জনগোষ্ঠীর দাবির বিরোধিতা করে একটি মিছিল বার করা হয়েছিল। সেখান থেকেই মণিপুরের ৮টি জেলায় হিংসা ছড়ায় বলে অভিযোগ। সম্প্রতি মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছে। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেখান থেকেই সংঘাতের সূচনা।

মূলত সমতল এলাকার বাসিন্দা মেইতেইরা মণিপুরের বৃহত্তম জনগোষ্ঠী। অন্য দিকে, কুকি, অঙ্গামি, লুসাই, নাগা, থাড়োয়াসের মতো প্রায় ৩০টি জনজাতি গোষ্ঠীর বাস পাহাড়ি এলাকায়। তাদের আশঙ্কা, জনজাতির মর্যাদা পেলেই পাহাড়ি এলাকার জমিতে হাত বাড়াবে মেইতেইরা। এখন জনজাতির মর্যাদা না পাওয়ায় তারা ওই জমি কিনতে পারে না।

অন্য দিকে, মেইতেইদের দাবি, ১৯৪৯ সালে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মণিপুর সংযুক্ত হওয়ার আগে তাঁরা জনজাতি হিসাবে গণ্য হতেন। কিন্তু সংযুক্তিকরণের পর সেই পরিচয় হারান তাঁরা। ফলে জনজাতি জমির অধিকার, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সাংবিধানিক রক্ষাকবচও হারিয়েছেন। যে কারণে আজ নিজভূমেই কোণঠাসা তাঁরা।

১৯৫২ সালে মণিপুরের মোট জনসংখ্যার ৫১ শতাংশ যেখানে মেইতেই ছিল, ২০১১ সালের জনশুমারিতে তা ৪৪ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে। মণিপুরের হিংসা প্রশমনে আধা সেনা এবং অসম রাইফেলসের আধিকারিকদের মোতায়েন করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের সঙ্গে দফায় দফায় পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

সরকারি তরফে হতাহতের খবর জানানো না হলেও বেসরকারি একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, নতুন করে ছড়ানো হিংসায় ১৬ জন মারা গিয়েছেন।

সূত্র: আনন্দ বাজার পত্রিকা

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন