parbattanews

মণিপুর সংকট নিরসনে মিয়ানমারের প্রাক্তন সেনা অফিসার নেকটার সাঞ্জেবামকে নিয়োগ

২০১৫ সালে মণিপুরের চান্ডেলে সেনার কনভয়ের উপরে হামলা চালায় জঙ্গিরা। তার জবাবে মিয়ানমারে জঙ্গিদের শিবিরে হামলা চালায় ভারতীয় সেনা। হিংসা বিধ্বস্ত মণিপুর সামলাতে এবার মিয়ানমারে জঙ্গি শিবির ধ্বংসের অভিযানের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রাক্তন সেনা অফিসার নেকটার সাঞ্জেবামকে নিয়োগ করল এন বীরেন সিংহের সরকার।

২০১৫ সালে মণিপুরের চান্ডেলে সেনার কনভয়ের উপরে হামলা চালায় জঙ্গিরা। তার জবাবে মায়ানমারে জঙ্গিদের শিবিরে হামলা চালায় ভারতীয় সেনা। তাতে অন্তত ১২০ জন জঙ্গি নিহত হয় বলে দাবি ভারত সরকারের। সেই অভিযানেরই নেতৃত্ব দেন প্রাক্তন কর্নেল নেকটার। সেই সময়ে ২১ নম্বর প্যারা রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন তিনি। কীর্তি চক্র ও শৌর্য চক্রে সম্মানিত এই সেনা অফিসার গত বছরে সেনা থেকে স্বেচ্ছাবসর নিয়েছিলেন। তাঁকে ৫ বছরের জন্য মণিপুর পুলিশের সিনিয়র সুপার পদে নিয়োগ করা হয়েছে।

মণিপুর স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রে খবর, তাঁর জন্যই সিনিয়র সুপার (কমব্যাট) পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের পরে গত সপ্তাহে রাজ্যপাল তা অনুমোদন করেন। স্বরাষ্ট্র সূত্রের মতে, মিয়ানমারে থেকে মণিপুরে জঙ্গিদের অস্ত্র সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে মিয়ানমারে ও উত্তর-পূর্বে জঙ্গি দমন অভিযানের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন নেকটারের অভিজ্ঞতা মণিপুর সরকারের কাজে লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু মেইতেই জনগোষ্ঠীর প্রাক্তন সেনা অফিসারকে মণিপুর সরকার এসএসপি পদে নিযুক্ত করায় কুকিদের মধ্যে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে৷ তাঁদের আশঙ্কা, কুকি ঐক্যে বিভাজন ধরানোর চেষ্টা করবেন নেকটার। তাঁরা সামাজিক মাধ্যমের সাহায্যে ভারত সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কেন্দ্র আগেই সিআরপি-র প্রাক্তন প্রধান কুলদীপ সিংহকে রাজ্যের পরামর্শদাতা পদে নিয়োগ করেছে। মণিপুরের ডিজিপি পদ থেকে পি ডাঙেলেকে সরিয়ে রাজীব সিংহকে নিয়োগ করা হয়েছে। তবে তাতে অবস্থার বিশেষ হেরফের হয়নি।

বস্তুত এখন মণিপুর কার্যত মেইতেই ও কুকি অধ্যুষিত এলাকায় বিভক্ত। চূড়াচাঁদপুর ও বিষ্ণুপুর জেলার সীমানাই রাজ্যের দুই প্রধান জনগোষ্ঠীর বিভাজন রেখা। এর মধ্যেও মেইতেই অধ্যুষিত ইম্ফলে ৫টি কুকি পরিবার বাস করছিল। শুক্রবার তাদের সরিয়ে দিয়েছে বাহিনী।

কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের বক্তব্য, ‘‘এর ফলে মেইতেই অধ্যুষিত ইম্ফল উপত্যকা থেকে একটি জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করার কাজ (এথনিক ক্লিনজ়িং) সম্পন্ন হল। একটি রাজ্য সরকারের নেতৃত্বে জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করার কাজ চলছে। কেন্দ্র দাবি করছে রাজ্য সংবিধান মেনেই কাজ করছে। এর চেয়ে বেশি লজ্জার আর কী হতে পারে।’’

Exit mobile version