মহাসেন বাংলাদেশ ছেড়ে ত্রিপুরায়: ১৬ জনের মৃত্যু

Coxs tree

ডেস্ক নিউজ: 

বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের ও সমুদ্রের বুকে থাকা চরাঞ্চলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও প্রাণহানি ঘটিয়ে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মহাসেন চলে গেছে ভারতের ত্রিপুরায়। সেখানে স্থলে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শাহ আলম। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’ দুর্বল হয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে গেছে । মহাসেন বাংলাদেশের উপকূল ছেড়ে যাওয়ায় এর প্রভাবে আর কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই।

তবে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম, মংলা সমুদ্রবন্দর ও কক্সবাজার এলাকায় ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে, সকালে যা ছিলো ৭ নম্বর।

শাহ আলম মহাসেন দুর্বল হওয়ার কারণ হিসেবে বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের যেসব এলাকা দিয়ে ঘূর্ণিঝড় মহাসেন অতিক্রম করেছে সেসব সকাল থেকে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এ কারণে সময়ের সাথে সাথে এটি দুর্বল হয়ে পড়ে।

ক্ষয়ক্ষতি বেশি হতো যদি জোয়ারের সময় যদি ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলের কাছে চলে আসত। এ ঘূর্ণিঝড়ের কারণে আগামী ২৪ ঘণ্টা দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হবে বলে জানান আবহাওয়া অধিদপ্তর।

দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় মহাসেনের তাণ্ডবে উপকূলীয় ৬ জেলায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বরগুনায় ৭, ভোলায় ৪, পটুয়াখালীতে ২, চাঁদপুর ২, পিরোজপুরে ১।

  বরগুনায় মহাসেনের তাণ্ডবে ৭ জনের মৃত্যুর হয়েছে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন বেতাগী উপজেলার পূর্ব রানীপুর গ্রামের সৈয়দ আলী (৭৫), বকুলতলী গ্রামের শিশু আমির হোসেন (৬), তালতলী উপজেলার ছোট আমখোলা গ্রামের চান মিয়া (৬০), বামনা উপজেলার বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুরা গ্রামের আনোয়ার হোসেন (৬০), একই ইউনিয়নের নাদিরা আক্তার (২৬) ও বামনা সদর ইউনিয়নের সফিপুর গ্রামের মোশাররফ হোসেন (৬৫) ও পাথরঘাটা উপজেলার ঘুটাবাছা গ্রামের হানুফা বেগম (২৫)। বরগুনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা প্রকাশ চন্দ্র বিশ্বাস ৭ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
 
ঘূর্ণিঝড়ে দুই শিশুসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন- লালমোহন উপজেলার ধলীগৌর নগরের মঙ্গল শিকদার এলাকার মো. আবুল কাশেম (৪৫), ঢালপরের আদর্শপাড়া গ্রামের মৃত ফজর আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম (৬৫), কুকরীর চর পতিলার শিশু নিপা (৮) ও চর মাদ্রাজের শিশু পারভেজ (৭)।

ঝড়ের কবলে পড়ে ২ জন নিহত হয়েছে। তারা হলেন- সদর উপজেলার আওলিয়াপুর ইউনিয়নের বলাইকাঠি গ্রামের মো. সিরাজ আকন্দ (৬০) ও গলাচিপা উপজেলার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মোছা. রিজিয়া পারভীন (৫০)।

চাঁদপুরের হাইমচরের চরাঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় মহাসেন আতংকে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন- হাইমচর উপজেলার দক্ষিণ চরকোড়ালিয়া এলাকার গণি কবিরাজের স্ত্রী জোবেদা বেগম (৫০) এবং একই এলাকার আবদুর রশিদ বাগ (৮৫)। হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেনের’ প্রভাবে জেলার মঠবাড়িয়ার গ্রামে ১ জন মহিলা ঘর চাপা পড়ে মারা গেছেন। তারা নাম মনোয়ারা বেগম (৫৮)।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন