parbattanews

মহেশখালীতে এসএসসি পরীক্ষা দিলেন হাত-পা বিহীন সালাহ উদ্দিন

মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়ায় সামান্য পায়ের কব্জি দিয়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে অদম্য এক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী। দুই হাত -পা বিহীন সালাহ উদ্দিন নামের ওই শিক্ষার্থী বেঞ্চের উপর খাতা রেখে পা দিয়ে লিখে তিনি এবারে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।তার অদম্য শক্তি তাঁকে এখন পর্যন্ত আটকে রাখতে পারেনি।

সে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের উত্তর নলবিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের ছাত্র। গত ১৫ নভেম্বর (সোমবার) ২য় দিনের পরীক্ষায় তার ভেন্যু
উপজেলার ইউনুছখালি নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে পায়ের শুধু মাত্র থাকা দুইটি কব্জি দিয়ে কলম ধরে পরীক্ষার উত্তর লিখিছেন।

জানা যায়, মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের উত্তর নলবিলা গ্রামের দিনমজুর মোহাম্মদ জালাল আহমদের ছেলে সালাহ উদ্দিন জন্মগতভাবে দুই হাত ও পা বিহীন। জন্মগতভাবে ছেলেটির দু’টা হাত- পা না থাকলেও লেখাপড়ায় সে বেশ মেধাবী। এ কারণে পরিবার থেকে তাকে সব রকম সহযোগিতা করা হচ্ছে। পা দিয়ে কলম চালিয়ে স্বপ্ন পূরণের যুদ্ধে ছেলেটি এগিয়ে চলছে। সালাহ উদ্দিনের বাবা পেশায় একজন শ্রমিক। মা আয়েশা বেগম একজন গৃহিনী। মা-বাবা, দুই’ভাই ও চার’বোন তাদের সংসার। মোটামোটি বাবার সামান্য আয়ে চলে সংসার ও সালাহ উদ্দিনের লেখাপড়া।

সালাহ উদ্দিন জানান, ছোট বেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি তার ভীষণ আগ্রহ। অভাবের সংসার হলেও মা-বাবা তাকে কখনও লেখাপড়া করা থেকে বিরত থাকতে বলেননি। সাধ্যের মধ্যে থেকেই যতটুকু পারেন তারা তার পেছনে ব্যয় করেন।

তিনি আরও জানিয়েছেন প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে অনুষ্ঠিত পরীক্ষা তার খুব ভাল হয়েছে। সে আরও জানায়, হাইস্কুলে সে বিনা বেতনে পড়ালেখা করা হয়। তাকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড দেয়া হয়েছে। কিন্তু সবকিছুর ঊর্ধ্বমুখির বাজারে বাবার পক্ষে তার পড়াশোনার খরচ যোগ দেওয়াটা অনেকটা কঠিন হয়ে পড়েছে। এসএসসি ও এইচএসসিতে ভাল ফলাফল করতে পারলে সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবে। সেখানে পড়াশোনা করবে। তার পড়াশোনার বিষয় হবে  মানবিক। স্বপ্ন পূরণে হিসাবে মানবিক বিষয় নিয়েই বহুদূর এগিয়ে যেতে চায় প্রতিবন্ধী মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন।

কালারমারছড়া উত্তরনলবিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল আলম বলেন, ছাত্র ও ছেলে হিসেবে প্রতিবন্ধী সালাহ উদ্দিন খুবই ভালো। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিনা বেতনে তাকে লেখাপড়া সুযোগ সুবিধাসহ নানা রকম সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও তার খোঁজ নিয়ে থাকি সুখে দুঃখে। আশা রাখি সে এবার ভাল ফলাফল করবে।

Exit mobile version