মহেশখালী প্রতিনিধি:
মহেশখালীতে স্বামীর নির্যাতনে স্ত্রী মৃত সন্তান প্রসব করেছে। এঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে নির্যাতনের শিকার গৃহবধুর শ্বশুরকে আটক করেছে।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, ১০মাস পূর্বে মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালীর মুন্সির ডেইল গ্রামের জাফর আলমের মেয়ে কুলছুমা বেগমের সাথে বিয়ে হয় ছোট মহেশখালীর ইউনিয়নের খালের দক্ষিণ কুল উম্বনিয়া পাড়ার আবু বক্কর মিস্ত্রির ছেলে জয়নাল আবেদীনের। ৮ মাসের অন্তসত্বা কুলসুমার সাথে যৌতুক নিয়ে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সাথে প্রায় ঝগড়া লেগেই থাকতো। স্থানীয় লোকজন কয়েক বার সালিশী বৈঠকের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করে। গত রবিবার (২৮ এপ্রিল) রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথাকাটির এক পর্যায়ে স্বামী জয়নাল স্ত্রীকে টর্চ লাইট দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে।
এক পর্যায়ে নির্যাতনের শিকার কুলছুমা আত্মরক্ষার জন্য অন্য রুমে যেতে চাইলে জয়নাল পুনরায় তার তলপেটে পরপর লাথি দেয়। তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে প্রসব বেদনা সৃষ্টি হলে সোমবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় কুলছুমাকে মহেশখালী হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দ্রুত কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। কক্সবাজার নেওয়ার পথে মহেশখালী জেটিতে একটি মৃত সন্তান ভূমিষ্ঠ হয় নিযাতিত গৃহবধু কুলছুমার।
কুলছুমার শরীরের প্রচন্ড ব্যাথায় মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকালে মহেশখালী হাসপাতালে ভর্তি করে।
সংবাদ পেয়ে মহেশখালীর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে নির্যাতনে সহায়তার অপরাধে শ্বশুর আবু বক্কর মিস্ত্রিকে আটক করে।
এদিকে স্থানীয়দের সূত্রে আরও জানা যায়, ২ সপ্তাহ পূর্বে শ্বশুর বাড়ির লোকজন গর্ভবতী কুলছুমাকে গরম তেল দিয়ে শরীরে ঝলশে দেওয়ার চেষ্টা করে।
এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত মহেশখালী থানার সেকেন্ড অফিসার মঞ্জুরুল আলম ও এসআই নুরুন্নবী মৃত বাচ্চাটির সুরুতহাল রির্পোট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার মর্গে পাঠায়।
নির্যাতিত কুলছুমাকে দেখতে মহেশখালী হাসপাতলে ছুটে যান উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিনুয়ারা ছৈয়দ। নির্যাতিত কুলছুমা বাদি হয়ে মহেশখালী থানায় মঙ্গলবার (দুপুরে) এজাহার দায়ের করে।
মহেশখালী থানার অফিসার ইনর্চাজ প্রভাষ চন্দ্র ধর জানান, অপরাধীকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ঘটনার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা রুজু করা হচ্ছে।