মহেশখালীর কালারমারছড়ার চিংড়িঘেরে লুটপাটের অভিযোগ
মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তারেক শরীফের মালিকানাধীন তিনটি চিংড়িঘেরে চিহ্নিত সন্ত্রাসীর লুটপাট চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, সন্ত্রাসীরা দুইদিন ধরে লুটপাট চালিয়েছে। নোনাছড়ির সেলিম চৌধুরীর ভাই রাসেল ও শওকতের নেতৃত্বে এই লুটপাট চালানো হয়েছে। সন্ত্রাসীরা ঘোনার বিপুল পরিমাণ মাছ ও জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে গেছে।
চেয়ারম্যান তারেক শরীফ অভিযোগ করেছেন, এই লুটপাটে ইন্ধন ও সন্ত্রাসীদের ইন্ধন দিচ্ছেন কালারমারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নূরুল হক।
চেয়ারম্যান তারেক জানান, তিনি গত ১০ দিন ধরে পরিষদের কাজে ঢাকায় ছিলেন। এই সময়ে গত ১৫ দিন আগে যোগদান করা কালারমারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নূরুল হককে বশে নিয়ে তার প্রতিপক্ষ সেলিম চৌধুরী তার বাহিনীর লোকজন দিয়ে তারেক শরীফের মালিকানাধীন আস্টজইন্ন্যা ঘোনা, পনেরজইন্ন্যা ঘোনা ও ছোটঘোনা লুটপাট চালায়।
মঙ্গলবার বিকালে সেলিম চৌধুরীর ভাই রাসেল ও শওকতের নেতৃত্বে ৫০/৬০ জনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী ওই ঘোনাগুলোতে হামলা করে। এ সময় সন্ত্রাসীরা গুলি ছুঁড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং ঘোনার শ্রমিকদের ব্যাপক মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। পরে ঘোনার মাছ ও জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। পরদিন বুধবার বিকালেও একইভাবে ঘোনায় হামলায় চালায় সন্ত্রাসীরা। ঠিক ওই সময় কালারমারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নূরুল হক সেলিম চৌধুরীর নোনাছড়ির অফিসে তার সাথে বৈঠক করছিলেন বলে অভিযোগ তারেক চেয়ারম্যানের।
চেয়ারম্যান তারেক শরীফ অভিযোগ করে বলেন, কালারমারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নূরুল হক ঘোনা দখলে ইন্ধন দিয়ে ক্ষান্ত হয়নি। আশ্চর্য্যজনক হলেও সত্য, বৃহস্পতিবার বিকালে পুলিশ পাহারায় নোনাছড়ি থেকে সন্ত্রাসী রাসেল ও শওকতকে পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে আসেন ফাঁড়ির ইনচার্জ নূরুল হক। সেখানে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করেন তারা। পরে তাদেরকে পুলিশ পাহারায় নোনাছড়ি দিয়ে আসা হয়।
চেয়ারম্যান তারেক বলেন, দাগী সন্ত্রাসী রাসেল আমার বাবা ওসমান গণি হত্যা মামলার শীর্ষ আসামী। এছাড়াও রাসেল ও শওকত দু’জনই যুবলীগ নেতা রিদুয়ান হত্যা মামলাসহ ৭/৮ টি মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি। এমন সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয় দিয়ে প্রকাশ্যে তাদের সাথে বৈঠক করায় ফাঁড়ির ইনচার্জ নূরুল হকের ভূমিকায় এলাকার মানুষ আশ্চর্য্য ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন। অতীতেও সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয় দাতা এমন কিছু পুলিশ কর্মকর্তার কারণে কালারমারছড়ায় অনেক অঘটন ঘটেছে। ফাঁড়ি ইনচাজের সন্ত্রাসীদের পক্ষাবলম্বনের কারণে আমার পিতা খুন হয়েছেন। আমরা এই পরিস্থিতি আর দেখতে চাই না। তাই অতি দ্রুত কালারমারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নূরুল হককে সরিয়ে নেয়ার জন্য আমি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। না হলে সন্ত্রাসীরা আবারো বড় কোনো অঘটন ঘটাবে।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে নবনিযুক্ত কালারমারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নূরুল হক রেগে গিয়ে বলেন, ‘আমি এখানে তারেক চেয়ারম্যানের চাকরি করতে আসিনি। আমি একজন দারোগা । সে আমাকে ফোন করতে পারে না?।’ তবে তিনি সন্ত্রাসীদের সাথে বৈঠকের বিষয়টি এড়িয়ে যান।’
মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধর বলেন, এই বিষয়টি চেয়ারম্যান আমাকে মৌখিক ভাবে বলেছেন, বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।