parbattanews

মহেশখালীর গর্ভবতী মহিলাদের পুষ্টি কার্যক্রমে দুর্নীতি

মহেশখালীর কালারমারছড়া ইউনিয়নে ১,২ নং ওয়ার্ড়ে ডাব্লিউএফপি’র মা ও শিশুর পুষ্টি পরিস্থিতি উন্নয়ন কর্মসূচি (আইএমসিএন) গর্ভবতী প্রসূতি মহিলা ও ৬-৫৯ মাস বয়সি শিশুদের জন্য বরাদ্ধকৃত পুষ্টিকার্যক্রমে চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

এক গর্ভবতী মহিলা অভিযোগ করেন, কালারমারছড়া ইউনিয়নে ১,২ নং ওয়ার্ডে ডাব্লিউএফপি’র পুষ্টি কার্যক্রমের মাঠ কর্মী নাহিদা আকতার গর্ভবতী ও প্রসূতি মহিলাদের নামে পুষ্টিসমৃদ্ধ গম, সয়াবিন, চিনি, তেল এনে সে সব তাদের কে না দিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে দেন। এই পুষ্টির মালামাল বিক্রির বিরুদ্ধে অভিযোগ বক্সে একটি অভিযোগ লিখে জমা দেওয়ার পরামর্শও দিয়েছিলেন উত্তর নলবিলা সিসি প্রধান শেখ মুহাম্মদ টিটু। অভিযোগ বক্সে অভিযোগ জমা দেওয়ার পরেও কোনো প্রতিক্রিয়া হয়নি বলে জানান ঐ প্রসূতি মহিলা।

এ বিষয়ে আমরা অভিযুক্ত নাহিদা আকতারের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি পুষ্টির মালামাল বিক্রির বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন পুষ্টির বিক্রিত মালামালের টাকা তিনি একা নেন না। তার সাথে নিয়োজিত অন্যান্য মাঠকর্মীরাও সে টাকা ও বেচে যাওয়া মালামালের ভাগ নেন।

পারভিন আকতার নামে এক মহিলা অভিযোগ করেন পুষ্টি দেওয়ার কথা বলে তার ছেলের নাম ঠিকানা লিখে নিয়েছেন মাঠকর্মী নাহিদা আকতার ইসমত আরা ও শাহানু বেগম। কিন্তু পুষ্টির জন্য গেলে ছেলের স্বাস্থ্য ঠিক আছে এমন অজুহাতে কোনো পুষ্টিকর মালামাল দেয়নি। পরে প্রতি দু প্যাকেট এক’শ টাকা দরে পুষ্টিকর পণ্য কিনে ছেলেকে খা্ছইয়েছেন ঐ মহিলা। তিনি জানান প্রতি দু সপ্তাহ পর নাহিদা আকতার পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে পুষ্টির জন্য টাকা তুলেন এবং পুষ্টি বিতরণের দিন ঐ পুষ্টির প্যাকেট দেন। অবশিষ্ট পুষ্টির প্যাকেট বিক্রি করে দেন বিভিন্ন দোকানে।

সরেজমিন বিষয়টি তদন্ত করে জানা গেছে, নাহিদা আকতারসহ পুষ্টিকার্যক্রমে মাঠ পর্যায়ে নিযুক্ত কর্মীরা বেশ কয়েকমাস থেকে এই দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন এবং যারা পুষ্টি কিনেছেন তারা তা স্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে অভিযোগ বক্সে দেওয়া নাম্বারে যোগাযোগ করলে কেউ ফোন রিসিভ করেনি। দায়িত্বরত অফিসার নজরুল বলেন এই দুর্নীতির বিষয়ে তিনি অবগত নন। খুব দ্রুত এই মাঠ কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উত্তরনলবিলা সিসি প্রধান শেখ মোহাম্মদ টিটু জানান, পুষ্টির প্যাকেট বিক্রি তারা দীর্ঘদিন থেকে করে আসছে এ বিষয়ে অনেক মহিলা তার কাছে অভিযোগ করেছেন এবং তিনি তাদের কে অভিযোগ বক্সে অভিযোগপত্র দেওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন। তিনি বলেন, আনুমানিক এক’শ জন গর্ভবতী ও প্রসূতি মহিলা এবং দু’শর অধিক ৬-৫৯ মাস বয়সি শিশুদের জন্য সম্পূরক খাদ্য বরাদ্ধ দিয়ে থাকেন ডাব্লিউএফপি। কিন্তু তা বিতরণ করা হয় ১০-১৫ জন মহিলা ও ২০-২৫ জন শিশুর কাছে।ঐ এলাকার দায়িত্বরত স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে এ বিষয়ে তার কাছে বার বার অভিযোগ এসেছেন। এবং এর দ্রুত পদক্ষেপ চান তিনি।

স্থানীয় গর্ভবতী ও প্রসূতি মহিলাদের দাবী যারা পুষ্টির প্যাকেট বিক্রিসহ পুষ্টিকার্যক্রমে নানাভাবে দুর্নীতি করছেন সে সকল মাঠকর্মীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

Exit mobile version