মহেশখালীর ধলঘাটায় নির্মিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দর
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার বিছিন্ন দ্বীপ ধলঘাটায় নির্মিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দর।
বন্দরের কাজ চূড়ান্ত প্রক্রিয়ায় যাবার জন্য ২৭ আগস্ট মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জামিরুল ইসলাম, জেলা ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল মুবিন , চট্টগ্রাম বন্দরের সহকারী ম্যানেজার মোহাম্মদ শিহাব উদ্দীনের নেতৃত্বে সার্ভিয়ার কানুনগো সহ একটি টিম অধিগ্রহণ ভুক্ত জমি ক্যামরা দিয়ে ধারণ করে সকল তথ্য উপাত্ত নিয়ে বন্দরের কার্যক্রমের যাত্রা শুরু করেছেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ৪ ধারা নোটিশ প্রদান করার কথা রয়েছে।
জানা গেছে, ধলঘাটার নাছির মোহাম্মদ ডেইল, বনজামিরা পাড়া এবং হামিদখালী কিছু অংশ নিয়ে মোট ২৮৬ একর ভূমি অধীগ্রহণ করার কথা রয়েছে। তবে পর্যায়ক্রমে ১২০০ একর পর্যন্ত অধিগ্রহণ করা হবে বলে জানা গেছে। এটি নির্মিত হলে সিঙ্গাপুর নগরে পরিনত হবে ধলঘাটা।
তবে এলাকাবাসী জানান হতাসার কথা, নাছির মোহাম্মদ ডেইলের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, ধলঘাটায় বন্দর নির্মাণ হবে ভালো কথা, জমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে জেনো সাধারণ মানুষের কষ্টের কারণ না হয়।
তিনি আরো জানান, যেমন-জমির ন্যায্য মূল্য যদি বর্তমান বেচা কেনার দরে এক দেড় কোটি টাকা একর প্রতি না হয় তাহলে ভবিষ্যৎ এ মাথা গুজার ঠাঁই নিয়ে তারা চিন্তিত। চির জীবনের জন্য ভূমি ছেড়ে দিয়ে নিজেদের অধিগ্রহণের টাকা তুলতে গিয়ে কিছু দালাল চক্র এবং মিথ্যা মামলা জনিত কারণে সে ন্যায্য টাকা আর হাতের নাগালে আসেনা সেই পূর্ব অভিজ্ঞতা সাধারণ জনগণের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার বয়ে বেড়াচ্ছে।
২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত দি আরা জরিপ বেশ প্রশ্ন বিদ্ধ। কারণ অধিকাংশ বিএস খতিয়ান মালিকের নামে দি আরা না হয়ে অন্যজনের নামে হয়ে গেছে। ফলে মূল মালিক সেই টাকা তুলতে গিয়ে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই দি আরা জরিপ বাতিলের জন্য প্রশ্ন তুলছেন জনগণ।
জমির অনেক মালিক জানান, অধিকাংশ জমির মালিকের নামে দি আরা না হয়ে অন্যের নামে হয়ে গেছে। তাদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি এখন থেকেই আপনারা দি আরার জন্য মামলা করে দেন। কারণ সরকারের নতুন নীতিমালা অনুযায়ী ৪ ধারা নোটিশ প্রদান করা হলে কোন ধরনের মামলা গ্রহণ করা হবেনা।
সূত্রে জানা গেছে, সমুদ্র বন্দর পাশাপাশি বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ধলঘাটা থেকে কোহেলিয়া নদীর উপর ব্রীজ স্থাপন করে একটি সড়ক বদরখালী হয়ে চট্টগ্রাম পথে একটি চারলেইন বিশিষ্ট সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনাও হয়ে গেছে। এতে করে ধলঘাটার সাথে অন্যান্য ইউনিয়ন, উপজেলা এবং জেলায় যাতায়াত করতে সহজ হয়ে যাবে সাথে সাথে ব্যবসা বাণিজ্য ও জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন হবে। বন্দর প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি ধলঘাটা মানুষের প্রাণের দাবি টেকসই বেড়িবাঁধ এর নিশ্চয়তা প্রদান করেছেন তারা।
ধলঘাটার চেয়ারম্যান কামরুল হাসান জানান, আমার ধলঘাটায় সরকারের সুদৃষ্টি পড়েছে ফলে আর অবহেলিত দ্বীপ থাকবেনা। এর পাশাপাশি জমির ন্যায়্য মুল্য নিশ্চিতকরণ সহ চাকরীর নিশ্চয়তা প্রদানের জন্য একটি কারিগরি স্কুল ও কলেজ নির্মাণ করা হবে এবং গ্রামের সকল শাখা রাস্তা গুলোকে যোগাযোগের জন্য উন্নতমানের সংস্কার করা হবে বলে বন্দর কর্তৃপক্ষরা আমাদের জানিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন , সবধরনের পেশাজীবীদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের নিশ্চয়তা প্রদান করার কথা বলছেন,
নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় একটি নগর গড়ে তুলবেন যার মধ্যে থাকবে স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মার্কেট এবং নানান উন্নতমানের বিনোদনের ব্যবস্থা।
স্থানীয়রা জানান, বন্দর কর্তৃপক্ষের দেওয়া প্রতিশ্রুতি গুলি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে আমরা ধলঘাটাবাসী হতে যাচ্ছি বিশ্বের দ্বিতীয় সিঙ্গাপুর শহরের গর্বিত নাগরিক।
মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জামিরুল ইসলাম জানান, আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দর নির্মাণের লক্ষে ইতিমধ্যে সরকারের প্রতিনিধি দলসহ জমি পরিদর্শণ ও বন্দরের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দর।