মাইকেল চাকমা আয়না ঘরে থাকার নাটক করেছিলো : মনোগীত জুম্ম

fec-image

পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউপিডিএফের সশস্ত্র গ্রুপের কমান্ডার মাইকেল চাকমা আয়না ঘরে থাকার নাটক করেছিলো বলে মন্তব্য করেছেন জেএসএস’র সাবেক সহসভাপতি খাগড়াছড়ির দীঘিনালার বাসিন্দা করুনালঙ্কর ভান্তে ওরফে মনোগীত জুম্ম। যিনি মনোগীত জুম্ম নামে নয়াদিল্লিতে বসবাস করেন।

গতকাল ১০ অক্টোবর মনোগীত জুম্ম তার ফেইসবুক পেইজে এক স্ট্যাটাসে বলেন, ‘মাইকেল চাকমাও ডিবি পুলিশ ও র‌্যাব দ্বারা গুম হওয়ার পর আয়না ঘরে থাকার নাটক করেছিলো। এমনকি তার জন্য ভিক্ষু-সংঘ আমন্ত্রণ করে সাপ্তাহিক ক্রিয়ারও আয়োজন করা হয়েছিলো। কিন্তু ৫ বছর পরে আত্মগোপন থেকে বের হওয়ার পর দেখা গেল যে, তার গায়ে বিন্দুমাত্র আঘাতের চিহ্নও নেই। বরং তেল তেল্ল্যে পোক্তা বা খুবই হৃষ্টপুষ্ট বা মোটাসোটা বা স্বাস্থ্যসম্পন্ন অবস্থায় বের হল।’

স্ট্যাটাসের শুরুতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করা, নিজের অনিষ্ট করে পরের ক্ষতি করা, আলোড়নকে দিয়ে আরো এক গণ্ডগোলের আলোড়ন তুলতে ব্যর্থ** রাঙামাটি সদরে রাঙামাটি সরকারী কলেজে প্রথম বর্ষে পড়ুয়া আলোড়ন চাকমা (২৩) কি নিখোঁজ? নাকি আত্মগোপনে? নাকি ইউপিডিএফ (প্রসিত)-এর সামরিক শাখায় যোগদান? নাকি খাগড়াছড়ির মতো রাঙামাটিতেও গণ্ডগোল তোলার জন্য ইউপিডিএফ (প্রসিত)-এর ফঁন্দি?’

এসব বিষয়ে প্রশ্ন তুলে ৪টি পয়েন্টে তার মন্তব্য তুলে ধরে একই সাথে প্রশ্ন রাখেন।

প্রথম পয়েন্টে তিনি উল্লেখ করেন, এক সময় ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। সেই রিপোর্টটি ইউপিডিএফ (প্রসিত)-এর নিজেদের কর্মীদেরকে গোপনে এবং বিভিন্ন অজুহাতে হত্যা করার পর অন্যদেরকে দোষ দেওয়ার কাহিনী তুলে ধরেছে তারা। তাহলে কি বিপক্ষ দলে কাজ করার দায়ে আলোড়ন চাকমাকেও হত্যা করার পর ইউপিডিএফ (প্রসিত)-এর অন্যদেরকে দোষ দিচ্ছে, নয় কি?’

দ্বিতীয় পয়েন্টে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আলোড়ন চাকমা রাঙামাটি সরকারী কলেজে পড়া-শুনা করতে আসার কারণে ইউপিডিএফ (প্রসিত)-এর খুবই সন্দেহ ও শত্রুর তালিকায় ছিল, নয় কি?’

তৃতীয় পয়েন্টে তিনি উল্লেখ করেন, ‘তথ্য মোতাবেক ইউপিডিএফ (প্রসিত)-এর সামরিক শাখা পিএলএ’র মধ্যে চরম সশস্ত্র কর্মীর সংকট চলছে। তাহলে আলোড়ন চাকমাকেও ইউপিডিএফ (প্রসিত)-এর সামরিক শাখায় যোগদানের জন্য বাধ্য করা হয়েছে, নয় কি?’

শেষ পয়েন্টে তিনি মাইকেল চাকমার আয়না ঘর নাটক উল্লেখ করে বলেন, ‘মাইকেল চাকমাও ডিবি পুলিশ ও র‌্যাব দ্বারা গুম হওয়ার পর “আয়না ঘরে” থাকার নাটক করেছিলো। এমনকি তা’র জন্য ভিক্ষু-সংঘ আমন্ত্রণ করে সপ্তাহিক ক্রিয়ারও আয়োজন করা হয়েছিলো। কিন্তু ৫ বছর পরে আত্মগোপন থেকে বের হওয়ার পর দেখা গেল যে, তার গায়ে বিন্দুমাত্র আঘাতের চিহ্নও নেই, বরং তেল তেল্ল্যে পোক্তা বা খুবই হৃষ্টপুষ্ট বা মোটাসোটা বা স্বাস্থ্যসম্পন্ন অবস্থায় বের হল। তাহলে আলোড়ন চাকমাও কি মাইকেল চাকমার মতো নাটক করতেছে? অর্থাৎ ইউপিডিএফ (প্রসিত)-এর “নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করা” — নিজের অনিষ্ট করে পরের ক্ষতি করার নীতি বুঝতে বাকী থাকলো না।’

শেষে তিনি তার স্ট্যাটাসে বলেন, ‘বস্তুতঃ আলোড়ন চাকমার তথাকথিত অপহরণ নাটকের বিষয়টি সামনে এনে খাগড়াছড়ির মতো রাঙামাটিতেও আরো একটি গণ্ডগোলের আলোড়ন তুলতে চেয়েছিল ইউপিডিএফ (প্রসিত)। কিন্তু রাঙামাটি আর বান্দরবান জেলার সকল প্রকার প্রশাসন, রাজনৈতিক দলগুলো, সাধারণ জনগণ এবং ছাত্র ও যুবক সমাজ রাজনৈতিকভাবে দূরদৃষ্টি ও সচেতনতার কারণে রাঙামাটিতে ইউপিডিএফ (প্রসিত)-এর নোঙরা রাজনীতি ব্যর্থ হলো।’

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন