মাটিরাঙ্গার ‘জলপাহাড়’ বিনোদনপ্রেমীদের ঠিকানা

09.07.2016_ZALPAHAR. Pic-02 (1)

সিনিয়র রিপোর্টার :

পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরকে ঘিরে রোদ-বৃষ্টির মিতালীকে উপেক্ষা করে মাটিরাঙ্গার বিনোদনপ্রেমী মানুষের ঢল নেমছে বিনোদন কেন্দ্র জলপাহাড়ে। গত দুই দিন টিপটিপ বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই মানুষ ভীড় করে ঘরের কাছেই একমাত্র বিনোদন পার্ক জলপাহাড়ে।

পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরকে কেন্দ্র করে বাড়তি আনন্দ দিতে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলা সদরের একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র ‘জলপাহাড়’ নতুন নতুন রাইড সংযোজন করেছে। আর এসব রাইড বিনোদন প্রেমীদের মধ্যে বাড়তি আনন্দের সৃষ্টি করেছে।

বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বিকালে মাটিরাঙ্গা উপজেলা সদরের বুকে পাহাড় আর জলের সমন্বয়ে গড়ে তোলা জলপাহাড়ে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন বয়সীদের উপচেপড়া ভীড়। লোকে লোকরন্য যেন জলপাহাড়। শিশুদের সঙ্গে বড়রাও যেন আনন্দে একাকার হয়ে গেছে। বেশিরভাগ লোকজনই ব্যস্ত ছিল ঘুরে-ফিরে ছবি তোলায়। বিভিন্ন পেশায় ব্যস্ত বাবা-মায়ের সঙ্গে ঘুরতে বের হয়ে বাঁধভাঙা আনন্দে মেতেছে এখানকার শিশু-কিশোররা। ছোটদের আনন্দ ছুঁয়েছে বড়দেরও।

ঈদকে সামনে রেখে হর্স রাইডার ( ঘোড়া চক্কর) ও মনো রেল ( বৈদ্যুতিক ট্রেন) জলপাহাড়ের আকর্ষণকে বহুগুন বাড়িয়ে বলে মনে করেন জলপাহাড়ে বিনোদনের জন্য ছুটে আসা দর্শনার্থীরা। নামামত্র শুভেচ্ছা মুল্য দিয়েই শিশুরা এ দুটি রাইড উপভোগ করার সুযোগ দিচ্ছে জলপাহাড় কর্তৃপক্ষ।

পাহাড়ীদের ঝুম ঘরের আদলে তৈরী দুটি ঘরের পাশাপাশি বিনোদনপ্রেমীদের আড্ডার জন্য তৈরী করা হয়েছে একাধিক গোলঘর। যা জলপাহাড়ে নতুন অবয়ব তৈরী করেছে। পুর্বের সব স্থাপনার পাশাপাশি চারদিকে জল বেস্টিত দ্বীপের মধ্যে মানসম্মত ও সু-স্বাদু খাবারের আয়োজন নিয়ে চালু করা হয়েছে ‘জলনীড় রেস্তোরা’। যা দর্শনার্থীদের জন্য বাড়তি সুবিধা সৃষ্টি করেছে। জলনীড়ের খাবারের ম্যানুতে চটপটি, হালিম, ফুচকা, চা, কপি, কোমল পানিয়সহ সকল প্রকার বিরিয়ানী দর্শনার্থীদের সেখানে দীর্ঘ সময় অবস্থানের সুযোগ তৈরী করে দিয়েছে।

দর্শনার্থীদের সকল চাহিদার কথা বিবেচনায় রেখেই আরও নতুন নতুন রাইড ও উন্নত মানের খাবার সরবরাহের বিষয়টি ভাবছি উল্লেখ করে জলপাহাড়ের ইজারাদার দিলীপ কুমার সাহা জানান, ভবিষ্যতে আরও কিছু জলঘর ও একটি ঝুলন্ত ব্রীজ নির্মানের পরিকল্পনা রয়েছে ।

বিনোদনমুলক পার্ক জলপাহাড়ের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোসহ জলপাহাড়কে পুর্নাঙ্গ পর্যটন স্পটে পরিনত করার দাবীর বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মো: শামছুল হক বলেন, জলপাহাড় উপজেলা পরিষদের সম্পত্তি। তারপরেও আমরা এর উন্নয়নে সম্ভব সবটুকু করবো। জলপাহাড়ে বিনোদনপ্রেমীদের ব্যাপক উপস্থিতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি জলপাহাড়ের স্বপ্নদ্রষ্টা মাটিরাঙ্গা সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মনিরুজ্জামান বকাউল‘র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, বলেন তার একটি উদ্যোগের কারনেই মাটিরাঙ্গা বিশাল জনগোষ্ঠি ছোট্ট পরিসরে হলেও বিনোদনের সুযোগ পেয়েছে।

জলপাহাড়ের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়ে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম মশিউর রহমান বলেন, এখানে দর্শনার্থীদের থাকার জন্য রেষ্ট হাউজ করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি জলপাহাড়ের পাশাপাশি মাটিরাঙ্গার বিনোদন কেন্দ্রগুলোর সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হযেছে। আগামী ঈদ-উল-আযহার আগেই মানুষ এর সুবিধা পাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন