মাটিরাঙ্গায় নিরাপত্তাবাহিনীর দিনব্যাপী চক্ষু চিকিৎসা শিবির

নিজস্ব প্রতিবেদক, মাটিরাঙ্গা:

পার্বত্য খাগড়াছড়ির জনবহুল উপজেলা মাটিরাঙ্গায় বছরের পর বছর চিকিৎসক সঙ্কটে নাকাল সরকারি স্বাস্থ্য সেবার পরিধি। তার ওপর চক্ষু চিকিৎসার সুবিধা প্রাপ্তি তো স্বপ্নেরও অতীত। সে কারণে চক্ষু চিকিৎসার জন্য সাধারণ মানুষকে অনেক টাকা ব্যয় করে ছুটতে হয় পাশের জেলা চট্টগ্রাম, ফেনী কিংবা কুমিল্লায়।

এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে পাহাড়ের চক্ষু চিকিৎসা বঞ্চিত সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে নিরাপত্তাবাহিনী।  বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও তৃতীয় বারের মতো মাটিরাঙ্গা নিরাপত্তা জোনের উদ্যোগে স¦তস্ফূর্ত সাড়া দিয়েছে কুমিল্লাস্থ জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সমিতি ও হাসপাতাল। আর তাতে চোখের যত্ন এবং সময় মতো চিকিৎসা গ্রহণে সচেতনতা বাড়ছে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে।

রোববার(২১জানুয়ারি) ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথেই চিকিৎসা বঞ্চিত বিভিন্ন বয়সী সাধারণ মানুষ ভীড় করে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের নামুল্যে চক্ষু চিকিৎসা শিবির ক্যাম্পে। এর পরপরই বিনামুল্যে চক্ষু চিকিৎসা শিবির’র উদ্বোধন করেন মাটিরাঙ্গা জোন অধিনায়ক লে. কর্নেল কাজী মো. শামশের উদ্দিন পিএসসি-জি। এসময় কুমিল্লাস্থ জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সমিতি ও হাসপাতাল’র স্পেশাল ম্যানেজার এবং প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম-সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।

বিনামুল্যে চক্ষু চিকিৎসা সেবা আয়োজনের মধ্য দুপুর পর্যন্ত কয়েক হাজার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নানা বয়সী নারী-পুরুষ ও শিশু চোখের চিকিৎসা নিয়েছে। সকাল থেকে লাইনে দাঁড়ানো রোগীর সারি দেখেই বোঝা গেছে মাটিরাঙ্গার মানুষ কতোটা চক্ষু চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত। কুমিল্লাস্থ জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সমিতির দুইজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, চারজন চিকিৎসক এবং একজন সার্জন দিনভর কয়েক হাজার রোগীকে নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দিয়েছেন এ ক্যাম্পে।

জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সমিতি ও হাসপাতাল’র স্পেশাল ম্যানেজার এবং প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম-সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন সিদ্দিকী জানান, বছর জুড়েই দেশের নানা প্রান্তে জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সমিতি সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ডাকে সাড়া দিয়ে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা সেবা এবং অপারেশন সেবা দিয়ে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় মাটিরাঙ্গায় নিরাপত্তাবাহিনীর উদ্যোগে অংশগ্রহণ করেছে কুমিল্লাস্থ জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সমিতি ও হাসপাতাল।

জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সমিতি কুমিল্লার আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. হাসান আল বান্না বলেন, মাটিরাঙ্গার মতো প্রত্যন্ত পাহাড়ি জনপদে নিরাপত্তাবাহিনীর সহযোগিতায় রোগীদের ব্যাপক সাড়া দেখে তিনি সন্তুষ্ট। ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে বার বার এজনপদে সেবা দিতে পারলে ভালো লাগবে।

এদিকে নিরাপত্তাবাহিনীর এ আয়োজনের ধারাবাহিকতা দেখতে চান স্থানীয়রা এমনটাই জানিয়েছেন মাটিরাঙ্গা পৌরসভার কাউন্সিলর মো. শহীদুল ইসলাম সোহাগ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন