parbattanews

মাটিরাঙ্গার বাঙ্গালী গ্রামে উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলা ও গুলিবর্ষণ: পাল্টা অভিযোগ ইউপিডিএফ’র

28051227

সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবীতে বাঙ্গালীদের বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ
মুজিবুর রহমান ভুইয়া, মাটিরাঙ্গা :

খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলাধীন সিমান্তবর্তী তাইন্দং-এর নোয়াপাড়া গ্রামে উজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্র্তৃক গুলি বর্ষণের খবর পাওয়া গেছে। এতে করে স্থানীয় বাঙ্গালীদের মধ্যে আতঙ্কের পাশাপাশি উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। নোয়াপাড়া গ্রামে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পবিার সকালে তাইন্দং বাজারে মিছিল ও সমাবেশ করেছে স্থানীয় বাঙ্গালীরা।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, গতকাল বৃধবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ২০/২২জন সশস্ত্র উপজাতীয় সন্ত্রাসী তাইন্দং নোয়াপাড়া গ্রামে প্রবেশ করে তাদের দাবীকৃত চাঁদা পরিশোধ না করায় সে গ্রামে বাঙ্গালীদের উপর হামলা করে। এতে করে বাঙ্গালীরা স্থানীয় মসজিদের মাইকে সন্ত্রাসীদের হামলা করার কথা জানালে বাঙ্গালীরা ঘর থেকে বেরিয়ে এসে সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করে। এক পর্যায়ে উপজাতীয় সশস্ত্র স্ত্রাসীরা নিরস্ত্র বাঙ্গালীদের উপর গুলিবর্ষন করে। এত কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সেখানকার পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে বলে স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার রাত পৌনে একটার দিকে ৭/৮জন সশস্ত্র উপজাতীয় সন্ত্রাসী তাইন্দং এর দক্ষিণ আছালং গ্রামে চাঁদার দাবীতে মো: ওসমান গণির বাড়িতে হামলা করে। এসময় সন্ত্রাসীরা সেখানে কয়েক রাউন্ড গুলি করে বলে স্থানীয়রা দাবী করেছে।

আজ ঘটনাস্থল তাইন্দং পরিদর্শন করেছেন বিজিবির যামীনিপাড়া জোনের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ শোয়াইব, মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ড. মো: মাহে আলম, মাটিরাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: মাইন্ উদ্দিন খান ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো: দেলোয়ার হোসেন। তারা বাঙ্গালী নেতৃবৃন্দের সাথে পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। এবং সকলকে ধৈর্য্য সহকারে পরিস্থিতি মোকাবেলার আহবান জানান।

এসময় বাঙ্গালীরা এসকল সন্ত্রাসীদের অবিলম্ভে গ্রেফতারের দাবী জানায়। তাইন্দং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: তাজুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গত কয়েক দিনে সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ব অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা আদিবাসী দিবসকে সামনে রেখে নতুন করে চাদা আদায়ের জন্য মাঠে নেমেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

তাইন্দং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও তাইন্দং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো: সিরাজুল ইসলাম সিরাজী বলেন, সন্ত্রাসীদের চাঁদা দাবী ও গুলি বর্ষণের ঘটনায় এখানকার নিরস্ত্র বাঙ্গালীরা আজ শঙ্কিত। এদের প্রতিরোধে বাঙ্গালীরা ইতিমধ্যে একাট্টা হয়ে রাস্তায় নেমেছে। তিনি এসকল সন্ত্রাসীদের মোকাবেলায় প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এদিকে ইউনাইটেড পিপলস্ ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট- ইউপিডিএফের প্রচার ও প্রকাশনা সেলের প্রধান নিরণ চাকমা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দং ইউনিয়নের বাঙ্গালিদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির অভিযোগ করে বলা হয় বাঙ্গালীদের ভয়ে ৫টি পাহাড়ি গ্রামের আড়াই শতাধিক পরিবার ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে জঙ্গলে ও ভারত সীমান্তে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইউপিডিএফ খাগড়াছড়ি জেলা ইউনিটের সংগঠক প্রদীপন খীসা খাগড়াছড়ির সাংসদ যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরার নীরব ভূমিকার কড়া সমালোচনা করে বলেন, মাটিরাঙ্গায় পাহাড়ি তথা ত্রিপুরাদের উপর একের পর এক হামলা, নির্যাতন, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং এর ফলে তাদের চরম দুঃখ দুর্দশার পরও তিনি সেখানে যাননি, তাদের খোঁজ খবর নেননি, তাদের পক্ষ হয়ে সংসদে বা মিডিয়ায় কথা বলা তো অনেক দূরের কথা। তিনি জনগণ এসবের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানান।

 

Exit mobile version