parbattanews

মাটিরাঙ্গায় আলুর ক্ষেতে কৃষকের হাসি

দীর্ঘদিন ধরে যে জমিতে তামাকের চাষ হতো এবছর সে জমিতেই হয়েছে আলুর বাম্পার ফলন। আলু চাষে হাসতে শুরু করেছে কৃষক। শুধু আলুই নয়, আলুর পাশাপাশি একই জমিতে চাষ করা হয়েছে দেশি জাতের মিষ্টি কুমড়া। আলু আর মিষ্টি কুমড়া মিলে জমিজুড়ে যেন ফসলের হাসি। সেই সাথে হাসছে কৃষকও। বলছিলাম ২০১৭-১৮ অর্থ সালে সবজি চাষে জাতীয় পর্যায়ে তৃতীয় হওয়া সফল সবজি চাষি খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার গোমতির কৃষক সফিউল বাশার‘র আলু চাষে সাফল্যের কথা।

সম্প্রতি সরেজমিনে কৃষি ও কৃষক অধ্যুষিত গোমতির বিস্তির্ন জমি ঘুরে দেখা গেছে মাঠজুড়ে এখন আলু তোলার কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষক-কৃষাণীরা। জমি জুড়ে আলুর স্তুপ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তৃনমুল কৃষকরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন এমনটাই আশা করছেন সফল চাষি মো. সফিউল বাশার।

সেখানেই কথা হয়, সফল আলু চাষি মো. সফিউল বাসারের সাথে। তৃপ্তির হাসি হেঁসে এ কৃষক জানান, গেল কয়েক বছর ধরে তিনি একই জমিতে তামাক চাষ করলেও কৃষি বিভাগের পরামর্শে তামাক চাষ ছেড়ে সবজি চাষ শুরু করেছেন। সবজি চাষ শুরু করেই দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতিও পেয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি এবছর একই জমিতে ডায়মন্ড জাতের আলু চাষ করেছেন। আলুর পাশাপাশি দেশি জাতের মিষ্টি কুমড়ারও চাষ করেছেন তিনি।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন‘র পরামর্শ ও তত্বাবধানে ১‘শ ৬০ শতক জমিতে ১৪ মন আলুর বীজ রোপন করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, যা থেকে প্রায় ৫০০ মন আলু উৎপাদন হবে। যা প্রত্যাশার অনেক বেশি বলেও জানান এ কৃষক। প্রতিদিন তার জমিতে প্রতিদিন গড়ে ৪/৫জন শ্রমিক কাজ করতো জানান এ কৃষক। জমি তৈরি, বীজ, সার, সেচ, কীটনাশক ও আলু উত্তোলন পর্যন্ত প্রতি ৪০ শতকে ৩০ হাজার টাকা হিসেবে ১‘শ ৬০ শততে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার মতো খরচ পড়েছে। এ হিসেবে এক কেজি আলুর উৎপাদন খরচ পড়েছে ৬ টাকা । প্রতি কেজি আলু পাইকারী দরে বিক্রি হচ্ছে পৌনে ১৫ টাকা। সে হিসেবে আলু চাষে প্রায় দুই লাখ টাকারও বেশি আয় করবেন বলেও জানান কৃষক মো. সফিউল বাশার। অন্যদিকে সহকারী ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়া থেকে আরো অতিরিক্ত এ লাখ টাকা আয় হবে।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুম ভুইয়া জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। তামাকের বদলে সবজি চাষ করে এখানকার কৃষকরা সফলতা দেখাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, গুমতির কৃষক মো. সফিউল বাশার‘র সাফল্যে আলু চাষের প্রতি অন্য কৃষকদেরও আগ্রহ বেড়ে গেছে। আলুর বাম্পার ফলনে অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন মাঠপর্যায়ে কৃষকদের আলুর পরিচর্চা রোগ-বালাই দমন ও জৈব সারের প্রয়োগ নিয়ে যথেষ্ট আন্তরিক ছিলেন। তাই আলুর ভালো ফলন হয়েছে। গোমতি এলাকার মাটি আলু চাষে উপযোগী বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

Exit mobile version