parbattanews

মাটিরাঙ্গায় পাহাড় কাটার ফলে ভাঙ্গনের মুখে একটি পরিবার : ব্যবস্থা নেয়ার দাবী স্থানীয়দের

26.05.2014_Matiranga Pahar Kata Pic

মুজিবুর রহমান ভুইয়া :

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলাধীন বেলছড়ি ইউনিয়নের পুর্ব খেদাছড়া এলাকায় প্রভাবশালী কর্তৃক পাহাড় কাটার ফলে ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে একটি পরিবার। মাটিরাঙ্গা-গোমতি ব্যস্ত সড়কের পাশে প্রকাশ্যে পাহাড় কাটছেন স্থানীয় এ প্রভাবশালী। পাহাড় কাটার কারণে ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে একটি শ্রমজীবি পরিবার। যেকোন সময়ে ভেঙ্গে পড়তে পারে একটি বসত ঘর।

আজ বিকালে সরেজমিনে ঘুরে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে প্রতিদিন ৪/৫ জন শ্রমিক সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাহাড়টি কেটেছেন প্রশাসনের কোন ধরনের বাঁধা ছাড়াই। অব্যাহভাবে পাহাড়া কাটার ফলে বসতঘর ভাঙ্গনের মুখে পড়া ছাড়াও ও হুমকির মুখে পড়েছে সেখানকার নির্মল পরিবেশ।

জানা গেছে, সাবেক মেম্বার স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা মো: ফরিদ মিয়া কোম্পানী দ্বিতীয় পক্ষের ছোট ছেলের বসবাস করতে বাড়ি নির্মাণের জন্য বেলছড়ির পুর্ব খেদাছড়া এলাকায় স্থানীয় প্রশাসন বা পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন ধরনের অনুমোদন ছাড়াই প্রায় পঞ্চাশ ফুটেরও বেশী উচ্চতার পাহাড়টি অব্যাহতভাবে কেটে চলেছেন। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এভাবে পাহাড় কাটার কারণে হুমকির মুখে পড়েছে প্রথম পক্ষের ছেলে মোশারফ হোসেন এর বসবাস করা একটি মাটির ঘর। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দিনমজুর মোশারফ হোসেনকে অন্যত্র গিয়ে বসবাসের জন্য বলে আসছেন পিতা মো: ফরিদ মিয়া কোম্পানী। কিন্তু মোশাররফ হোসেন অন্যত্র ঘর সড়িয়ে না নেয়ার কারণে তাকে উচ্ছেদ করতেই পরিকল্পিতভাবে পাহাড় কাটা শুরু করেন মো: ফরিদ মিয়া কোম্পানী।

কার অনুমতি নিয়ে পাহাড় কাটছে এমন প্রশ্নে মো: ফরিদ মিয়া কোম্পানী বলেন, আমি পাহাড় কাটছি তা মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা চেয়ারম্যান দেখেছেন। কিন্তু তারা কেউ কিছু বলেননি। আমি পাহাড় কাটলে আপনাদের সমস্যা কি এমন প্রশ্নও করেন মো: ফরিদ মিয়া কোম্পানী । আমি ছেলের জন্য বাড়ি বানাবো তাই আমার টিলা আমি কাটছি এমন কথা জানিয়ে প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা এরকম করে অনেকেই কাটে। প্রয়োজনে আমার জেল-ফাসি হবে এমন দম্বোক্তি করেন মো: ফরিদ মিয়া কোম্পানী।

ঘটনাস্থল থেকে মাটিরাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান মো: তাজুল ইসলাম তাজু‘র কাছে তার মুঠোফোনে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি কয়েক মিনিটের ব্যবধানে ঘটনাস্থলে যান। তিনি পাহাড় কাটায় বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, একটি পরিবারকে ক্ষতিগ্রস্থ করে নিজের বাড়ি নির্মানের জন্য পাহাড় কাটা সমর্থন যোগ্য নয়। এসময় তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন, এখানে পাহাড় কাটার বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। তিনি এ বিষয়ে তার ক্ষোভের কথা জানিয়ে বলেন, তিনি যা করছেন তা শুধু অপরাধই নয় রীতিমতো অমানবিকও।

পাহাড় কাটার বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ড. মোহাম্মদ মাহে আলম বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবহিত নই। অনুমতি ছাড়া কোনো সংস্থা ও ব্যক্তি পাহাড় কাটতে পারে না উল্লেখ করে বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে জড়িত ব্যাক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এবিষয়ে জানার জন্য বেলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো: আহসান উল্যাহ‘র মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্ঠা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় সচেতন মহল এবিষয়ে মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেছেন, স্থানীয়ভাবে তাকে পাহাড় কাটতে নিষেধ করা হলেও সে কারো কোন কথা শুনেনি। উল্টো সে তার ক্ষমতা জাহির করে পাহাড় কাটা অব্যাহত রেখেছে।

Exit mobile version