মাটিরাঙ্গায় রেশনের দাবীতে গুচ্ছগ্রামবাসীদের জুতা মিছিল, সড়কের উপর গণ-অবস্থান

gussagram

সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার :

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার ২৪টি গুচ্ছগ্রামের ৯ হাজার ২‘শ ৬৩ কার্ডধারীর বিগত সাত মাসের বকেয়া রেশনের দাবিতে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি-ঢাকা আঞ্চলিক সড়কের উপর হাজারো ভুক্তভোগী মানুষের গণ-অবস্থান চলছে। ফলে পাহাড়ী জেলা খাগড়াছড়ির সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

আয়োজকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত সড়কের উপর গণ-অবস্থান কর্মসুচী চলবে। গুচ্ছগ্রামবাসীদের ন্যায্য অধিকার গুচ্ছগ্রামের রেশন অবিলম্বে প্রদানের দাবীতে ধারাবাহিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে পুর্ব ঘোষণা অনুযায়ী রোববার সকাল সাড়ে ১০টার বেশন বঞ্চিত কয়েক হাজার নারী-পুরুষ জুতা হাতে রেশনের দাবীতে মাটিরাঙ্গা উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। হাজারো মানুষের অংশগ্রহনে বিক্ষোভ মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক ঘুরে তবলছড়ি চত্বরে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি-ঢাকা আঞ্চলিক সড়কে গণ-অবস্থান শুরু করে।

সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মাটিরাঙ্গা তবলছড়ি চত্বরে অবস্থান কর্মসুচী চলাকালে খাগড়াছড়ির সাথে ঢাকা-চট্টগ্রাম-ফেনীসহ সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সেখানে দুইপাশে আটকা পড়ে কয়েক‘শ যাত্রীবাহি যানবাহন। এসময় জনদুর্ভোগ চরমে পৌছে। পরে জনদুর্ভোগের কথা চিন্তা করে প্রশাসন ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের অনুরোধে সড়ক অবরোধ তুলে নেয় আন্দোলনকারীরা। হাজার হাজার কার্ডধারীদের অবস্থান কর্মসুচীতে বক্তারা কোন সিদ্ধান্ত না আসলে ঘরে ফিরে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে নিরীহ মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলায় মত্ত রীটকারীদের বয়কট ও প্রতিরোধের আহবান জানিয়ে বলেন, তারা জনগনের বন্ধু না, জনগনের শত্রু।

রেশন আদায় সংগ্রাম পরিষদ’র আহবায়ক শ্রমিক নেতা মো: হাফেজ পাটোয়ারী‘র সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসুচীতে বক্তব্য রাখেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মো: ইমরান হোসেন, মো: আইয়ুব আলী, মো: তোফাজ্জল হোসেন, মো: খোরশেদ আলম, মো: আবদুল কাদের, মো: নুরুল ইসলাম নাহিদ, প্রমুখ। এতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামলীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো: শামছুল হক, তাইন্দং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: তাজুল ইসলাম প্রমুখ।

এসময় রেশন আদায় সংগ্রাম পরিষদ’র আহবায়ক মো: হাফেজ পাটোয়ারী তার বক্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, মাটিরাঙ্গায় ২৪টি অ-উপজাতিয় গুচ্ছগ্রামের ৯ হাজার ২‘শ ৬২ রেশনকার্ডধারী প্রত্যেক পরিবারকে প্রতি মাসে সরকার ৮৫ কেজি করে খাদ্যশস্য দিয়ে আসছে। নিয়ম আনুযায়ী প্রতি দুই বছর পর পর গুচ্ছগ্রামে প্রকল্প চেয়ারম্যান পরিবর্তন করা হয়। কিন্তু নতুন করে প্রকল্প চেয়ারম্যান হতে না পেরে সাবেক প্রকল্প চেয়ারম্যানদের ১২ জন হাইকোর্টে রীট মামলা দায়ের করেন। যার কারণে দীর্ঘ ৭ মাস ধরে রেশন না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে গুচ্ছগ্রামবাসীরা।

বক্তারা আদালতে রীটকারীদের আওয়ামলীগের নেতা দাবী করে বলেন, তাদের কারনে আজ এখানে আওয়ামীলীগের ইমেজ প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। সাধারন জনগণ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। তারা অভিলম্বে রীটকারী দুর্নীতিবাজদের আওয়ামীলীগ থেকে বহিস্কারেরও দাবী জানান। এ প্রসঙ্গে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বকাউল বলেন, মাটিরাঙ্গা উপজেলার ২৪ টি গুচ্ছগ্রামে নতুন প্রকল্প চেয়ারম্যান নিয়োগের পর সাবেক প্রকল্প চেয়ারম্যানদের পক্ষ থেকে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগের বিরোধীতা করে হাইকোর্টে রিট করলে আদালত অক্টোবর মাস থেকে মামলা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রেশন প্রদান স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন। ফলে রেশন বরাদ্দ ও বিতরণ বন্ধ রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন