মাটিরাঙ্গা সহিংসতায় বিজিবির বক্তব্য গ্রহণ

fec-image

পার্বত্য খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার গাজীনগরে জনৈক চান মিয়ার টিলাভুমি থেকে কাঁঠাল গাছ কাটা ও পরিবহনকে কেন্দ্র করে একই পরিবারের তিনজনসহ ৫ জন নিহতের ঘটনায় খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থলে উপস্থিত পাঁচ বিজিবি সদস্যের বক্তব্য গ্রহণ করেছে।

মঙ্গলবার (১০ মার্চ) বিকালের দিকে তাদের বক্তব্য গ্রহণ করে তদন্ত কমিটির প্রধান ও খাগড়াছড়ি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার রেজাউল করিমসহ অন্য সদস্যরা।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে মঙ্গলবার বিকাল সোয়া ৪টা থেকে টানা সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বিজিবির হাবিলদার মো. ইসাহাক আলী, ল্যান্স নায়ক মো. আবু সাঈদ, নায়েক মো. সুমন মিয়া, সিপাহী গোলাম রব্বানী ও মো. সোহেল রানার বক্তব্য গ্রহণ করে তদন্ত কমিটি।

বিজিবি সদস্যদের বক্তব্য গ্রহণ শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় মাটিরাঙ্গা সহিংসতায় জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ও খাগড়াছড়ি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার রেজাউল করিম সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান, তদন্ত কাজ চুড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। বুধবার সকালে মৃত ব্যক্তিদের সুরতহাল রিপোর্ট সংগ্রহ শেষে বুধবার (১১ মার্চ) বিকেলে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।

এসময় তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মেহেদী হাসান ও সহকারী বন সংরক্ষক মোহাম্মদ হোসেন ছাড়াও মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিভীষণ কান্তি দাশ ও মাটিরাঙ্গা থানার অফিসার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শামসুদ্দিন ভুইয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ঘটনার পরদিন গেল ৪ মার্চ ঘটনার কারণ উদঘাটনে খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার মোহাম্মদ রেজাউল করিমকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক। তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও বিজিবির বক্তব্য না পাওয়ায় কমিটির আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময় তিন কার্যদিবস বাড়ানো হয়।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (৩ মার্চ) জনৈক চান মিয়ার বাগানের চার টুকরা কাঠাল গাছ পরিবহনকালে মাটিরাঙ্গার গাজিনগরে বিজিবি বাঁধা প্রদান করে। একসময় গাছগুলো বিজিবি নিজেদের ক্যাম্পে নিয়ে যেতে চাইলে উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে বিজিবি এলোপাথারী গুলি করে।

এসময় ঘটনাস্থলেও মারা যান মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি মো. সাহাব মিয়া প্রকাশ মুছা মিয়া ও তার ছেলে মো. আকবর আলী। এ সময় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বিজিবি সদস্য শাওন খান, সাহাব মিয়ার আরেক ছেলে আহাম্মদ আলী, মো. মফিজ মিয়া এবং তার ছেলে মো. হানিফ মিয়াকে মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানেই মারা যান সাহাব মিয়ার ছেলে আহাম্মদ আলী ও বিজিবি সদস্য শাওন খান।

এদিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান আহাম্মদ আলীর শ্বশুর মো. মফিজ মিয়া। এ ঘটনায় গুরিবিদ্ধ মো. মফিজ মিয়ার ছেলে মো. হানিফ মিয়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন