parbattanews

মানবিকতা ও সম্প্রীতির টুকরো মরুদ্যান যেন রাঙামাটির জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অফিস

nsi 1

স্টাফ রিপোর্টার:

দুইদিনের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় যখন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি জ্বলছে, হামলা, পাল্টা হামলা, গুলি, টিয়ার শেলের আওয়াজে কেঁপে কেঁপে উঠেছে শহরের নিস্তব্ধ পাহাড়। আহত মানুষের চিৎকারে ভারি হয়ে উঠেছে হাসপাতালের করিডোর। বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসীদের চোখে যখন জিঘাংসার আগুন ঠিকরে বেরুচ্ছে, আশঙ্কা, আতঙ্ক আর গুজবে শঙ্কিত জনজীবন।  ঠিক তখনই রাঙামাটি জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার অফিস যেন সম্প্রীতি, আশ্রয় ও ভরসাস্থলের মরুদ্যানে পরিণত হয়েছে।

ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার শিকার হয়ে সাধারণ ও নিরীহ মানুষ বিশেষ করে নারী ও শিশুরা যখন জান বাঁচাতে, আশ্রয়ের খোঁজে এদিক ওদিক ছুটছিল, পালাচ্ছিল তাদেরই কেউ কেউ উপায়হীন হয়ে ঢুকে পড়ে রাঙামাটির জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার অফিসে। পরবর্তীকালে দাঙ্গা প্রবণ ও আশ্রয়হীন নারী পুরুষের একটি অংশ এখানে আসে আশ্রয়ের সন্ধানে। দাঙ্গার শিকার অনেকেও আসে। এদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। স্বল্প সংখ্যক পুরুষও রয়েছে এখানে। আশ্রয়গ্রহণকারীর সংখ্যা প্রায় ৪০ জন। তাদের মধ্যে ১৬ জন নারী, ১৫ জন শিশু ও বাকিরা পুরুষ।  এদের মধ্যে ৭ দিন বয়সী সদ্য ভুমিষ্ঠ শিশু ও প্রসুতি মাতাও রয়েছেন। রয়েছে মুসলিম, হিন্দু ও বৌদ্ধ; বাঙালী ও চাকমা সম্প্রদায়ের মানুষ। দেখে মনে হয় মুক্তিযুদ্ধের এক টুকরো শরণার্থি ক্যাম্প।

জাতি, ধর্ম বির্বিশেষে সকল ভেদাভেদ ভুলে তারা এক ছাদের নিচে আশ্রয় নিয়েছে সম্প্রীতির উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। এর মাধ্যমেই প্রমাণিত হয় পাহাড়ের সাধারণ উপজাতি- বাঙালীর মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে কাতিপয় মতলববাজ ও নিয়োগী।

জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃপক্ষ আশ্রয়প্রার্থিদের তাদের কার্যালয়ের পার্শ্ববর্তী একটি ভবনে থাকা, খাওয়া ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছেন। বর্তমানে তারা সেখানে অবস্থান করছেন।

এ ব্যাপারে তিন পার্বত্য জেলার প্রধান ও যুগ্ম পরিচালক ফেরদৌস আহমেদ খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সম্পূর্ণ মানবিক বিবেচনায় আমরা তাদের সেখানে আশ্রয় দিয়েছি।

 

Exit mobile version