parbattanews

মানবেতর দিন কাটছে কক্সবাজারের শতোর্ধ মরিয়ম খাতুন ও রহিমা ফকিরের

1234

নিজস্ব প্রতিনিধি:

ভিক্ষাবৃত্তিকে মানুষ কখনোই ভালো চোখে দেখে না। এই ঘৃণ্য পেশা বন্ধে সরকার নানা উদ্যেগ নিয়েছে। কিছু লোক ভিক্ষাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে নিলেও অনেকে বাধ্য হয়ে নামছে এই কাজে। দু’বেলা আহার যোগাতে তারা হন্যে হয়ে ঘুরছে মানুষের দ্বারে-দ্বারে। হাত পাতছে টাকা আর খাবারের জন্য।

এমনই এক বৃদ্ধার নাম মরিয়ম খাতুন (১০৭)। বয়সের ভারে ন্যুজ্ব হয়ে কোনভাবে লাঠির উপর ভর দিয়ে ভিক্ষা করতে দেখা যায় তাকে। তার সাথে কথা বলে জানা যায়, সদর উপজেলা খরুলিয়ার নোয়াপাড়ার মৃত মো. কালুর স্ত্রী তিনি। গত ৪-৫ বছর যাবত ভিক্ষা করেই জীবন যাপন করছেন। তার ১ মেয়ে ২ ছেলে। ছেলে-মেয়েরা তাকে ছেড়ে চলে গেছে অনেক আগেই। তারা এখন নিজেদের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। তারপরও কোনভাবে মেয়ের ঘরের বারান্দায় থাকার ঠাঁই মিলেছে মরিয়মের। ওখানে থাকার জন্যও তাকে উপার্জন করতে হচ্ছে অর্থ। তাই এই বুড়োবয়সে অনেকটা বাধ্য হয়েই নেমে পড়েছেন ভিক্ষাবৃত্তিতে।

একইভাবে সদর উপজেলা ঈদগাহ ছফলদন্ডী এলাকার মৃত কালুর স্ত্রী রহিমা ফকিরও ভিক্ষাবৃত্তির কাজ করছেন। তার অভিযোগ পরিবারের লোকজনের অবহেলার কারনেই তাকে আজ ভিক্ষা করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, তিনি যেদিন ভিক্ষা করেন না সেদিন ওষুধ খেতে পারেন না।

শুধু মরিয়ম খাতুন ও রহিমা ফকির নন সমিতি পাড়ার বৃদ্ধ আলী আহম্মদসহ (১০৪) অনেকেই রয়েছে বাধ্য হয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করছেন। খবর নিয়ে জানা যায়, শতোর্ধ বৃদ্ধ কিছু ভিক্ষুক রয়েছে যাদের প্রত্যেকের জীবনের পিছনে রয়েছে করুণ এক ইতিহাস। শুধু ভিক্ষুক নয়, এই ধরনের করুণ অবস্থা চলছে অনেক বৃদ্ধাদের। এমনটাই বলছেন, সমাজের সচেতন মহল।

তারা বলছেন, এই বৃদ্ধাদের খাবারের টাকা যোগাতে রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করা খুবই অমানবিক। এসব বৃদ্ধাদের প্রয়োজন খাবার, সেবা ও থাকার ব্যবস্থা।

রামু কলেজের অধ্যাপক অজিত দাশ জানান, বয়স্ক লোকজনের সেবা যতেœর জন্য পরিবারের লোকজনকে সচেতন হতে হবে। তাদের অবহেলা করা খুবই অমানবিক কাজ। একটি মানবিক সমাজ ব্যবস্থায় এই ধরনের আচরণ মেনে নেওয়া যায়না। যেই বাবা-মা সন্তানদের অনেক কষ্টের মধ্যে বড় করেন, সেই সন্তানেরা যদি বৃদ্ধ বাবা-মাকে দেখাশোনা না করে এর চেয়ে ব্যর্থতা আর কি হতে পারে। যেসব বৃদ্ধা পারিবারিক অবহেলা ও আর্থিক সংকটের কারণে মানবেতর দিনাতিপাত করছেন তাদের পূণর্বাসন করা খুবই জরুরী। সরকারি-বেসকরারি উদ্যোগে তাদের জন্য পূণর্বাসন কেন্দ্র স্থাপন করা যেতে পারে। সেবা পাওয়ার পাশাপাশি ভালোমত খেয়ে-পরে বাঁচতে পারবে।

Exit mobile version