মানিকছড়িতে ইউএনও’র হস্তক্ষেপে নতুন মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে শোকানুষ্ঠান পালন

fec-image

খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলায় ২ কোটি ৪৭ লাখ টাকার দৃষ্টিনন্দিত উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন ও ১৫ লাখ ৭২ হাজার টাকা ব্যয়ে সংযোগ সড়ক নির্মাণের ২ বছরেও পরও ভবন তালাবদ্ধ করে রাখার খবর সংবাদ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিষয়টি জানার পর তড়িৎ ব্যবস্থা নিয়ে আগস্টের শোকানুষ্ঠান নতুন ভবনে পালনের নির্দেশনা দিয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে। যার ফলে ১৫ আগস্ট সকালে নতুন কমপ্লেক্স ভবনে কোরআন খতম ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।

উপজেলা সদর থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দক্ষিণে গোদার পাড় এলাকায় চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক ঘেঁষা লেমুয়া খাল বা চড়ার পাড়ে এক চিলতে পতিত জমিতে ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়ণে ২কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দিত নকশায় ত্রিতল ভবন নিমার্ণে দরপত্র আহ্বান করেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

নির্ধারিত সময়ে মূল ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হলেও চিহ্নিত ভূমি মূলসড়ক থেকে ১০ থেকে ১২ ফুট নিচু হওয়ার কারণে মূল সড়কের সাথে ভবনে যাতায়াত সড়কে সরকারের অতিরিক্ত হয় আরও ১৫ লাখ ৭২ হাজার টাকা! এই বিপুল অর্থ ব্যয়ে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে পুরো কাজ শেষ করেন ঠিকাদার এস.অনন্ত এন্টারপ্রাইজ।

কিন্তু উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমিটি বিলুপ্ত থাকায় ভবনটি বুঝে নিতে এগিয়ে আসেনি মুক্তিযোদ্ধারা! দুই বছর ভবন তালাবদ্ধ থাকার বিষয়ে গত রোববার ও সোমবারে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হয় চেঙ্গী নিউজ ও পার্বত্যনিউজ পোর্টালে। এতে উপজেলা প্রশাসনের শীর্ষকর্তা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পদাধিকারে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সভাপতির দায়িত্বে থাকা রক্তিম চৌধুরী।

তিনি বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি ও অন্যান্য বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ডেকে পাঠিয়ে শোক দিবসে কোরআন খতম ও দোয়া অনুষ্ঠান নতুন কমপ্লেক্স ভবনে করার জন্য নির্দেশনা দিলে নড়েচড়ে বসেন মুক্তিযোদ্ধারা।

১৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ৯ টায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে শোক দিবসের নানা অনুষ্ঠান শেষে নতুন কমপ্লেক্স ভবনে ছুঁটে আসেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এর ভবনের মেঝে পরিস্কার পরিছন্ন শেষে কোরআন খতম ও দোয়া অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

জানতে চাইলে উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সফিউল আলম চৌধুরী বলেন, বাঙ্গালী জাতি ও মাতৃভূমি রক্ষায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে পরিবার পরিজনের মায়া ত্যাগ করে নিঃস্বার্থভাবে মুক্তিযুদ্ধে শামিল হয়েছিলাম। স্বাধীননতার ৫০ বছর পর স্বাধীনতার স্বপক্ষের সরকার আমাদেরকে নতুন প্রজন্মের কাছে স্মরণীয় -বরনীয় করে রাখতে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করে দিয়েছেন। ভবন ও সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে ২ বছর আগে! আজ ১৫ আগস্ট সকালে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে আমাদেরকে চাবি বুঝিয়ে দিয়েছে। ভবনে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় পানির অভাবে বিশাল ভবনের প্রতিটি ফ্লোরের ময়লা আবর্জনা পরিস্কার পরিছন্ন করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) ও পদাধিকারে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সভাপতি রক্তিম চৌধুরী গণমাধ্যকে বলেন, ‌‘আমি এখানে যোগদান করেছি আজ ৫ মাস। এই সময়ে একজন মুক্তিযোদ্ধাও আমাকে এ বিষয়ে কোন কিছু বলেনি। আজই আমি আপনার(সাংবাদিক) মাধ্যমে জানতে পেরে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে এলজিইডি থেকে ভবনটি বুঝে নিয়ে শোকাবহ আগস্টের কর্মসূচি পালন করার নির্দেশ দেওয়ায় তাঁরা নতুন কমপ্লেক্স ভবনে কোরআন খতম ও দোয়া অনুষ্ঠান পালন করেছে।’

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন