parbattanews

মানিকছড়িতে নানা কর্মসূচিতে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ পালিত

উপলক্ষে খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স,ব্র্যাক স্বাস্থ্য ও টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পের উদ্যোগে শিশু বিকাশ ও প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমের প্রতিটি পাড়াকেন্দ্রে পালিত হয়েছে “জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ।”

এবার জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ’র প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল “সঠিক পুষ্টিতেই, সুস্থ্য জীবন” শীর্ষক সপ্তাহ ব্যাপী বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ব্র্যাক স্বাস্থ্যের উদ্যোগে শোভাযাত্রা, কিশোরী ও মায়েদের নিয়ে উঠোন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এছাড়া টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পের পাড়াকেন্দ্রে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ০ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের জিএমপির মাধ্যমে অপুষ্টির পরিমাপ করা, ৬ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের মুয়াকের মাধ্যমে অপুষ্টি পরিমাপ করা, গর্ভবতী মহিলা, দুগ্ধদানকারী মা এবং পাড়াবাসীদের অংশ গ্রহণে সোনালী ১০০০ দিন নিয়ে আলোচনা, গর্ভবতী মহিলা, দুগ্ধদানকারী মা ও কিশোরীদের আয়রন ফলিক এসিড ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়।

পাড়াকেন্দ্রে পুষ্টি বিষয়ক ম্যাপিং তৈরি করা (চিহ্নিতকরণ) গর্ভবতী মহিলা, দুগ্ধদানকারী মা, কিশোরী, শিশু, প্রতিবন্ধী এবং ০ থেকে ২৩ মাস বয়সী শিশু ও প্রসূতি মা, নিয়ে আলোচনা, গর্ভবতী মহিলা, দুগ্ধদানকারী মা, ও পাড়াবাসীদের অংশ গ্রহণে পুষ্টি বিষয়ক উঠান বৈঠকের আয়োজন করা ও সমাপনী দিনে কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে কৈশোরকালীন পুষ্টি কার্যক্রম বিষয়ক আলোচনা সভা করা হয়।

“সঠিক পুষ্টিতেই, সুস্থ জীবন” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে উপজেলার ওসমান পল্লী মডেল পাড়াকেন্দ্রের পাড়াকর্মী, মোসা. রাবেয়া আক্তার বলেন, “জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ” পালন করতে গিয়ে পাড়াবাসী ব্যাপক সচেতন হয়েছেন। আমাদের প্রকল্প থেকে পাড়াকেন্দ্র পর্যায় জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহের তাৎপর্য্য তুলে ধরে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করি। প্রতিটি পাড়াকেন্দ্র শিশু সুরক্ষা ও শিশুদের অধিকার রক্ষা এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে আসছি। শিশুরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ তাই, শিশুদের সুরক্ষা ও অধিকার নিশ্চিতে আমাদের আরও কাজ করে এগিয়ে যেতে হবে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পের স্থাপিত পাড়াকেন্দ্রসমূহে পাড়াকেন্দ্র জরিপকৃত ও আওতাভুক্ত জনগোষ্ঠীকে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এগিয়ে নেয়ার জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পের বিশাল এই কর্মীবাহিনী।

জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ সম্পর্কে টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পের উপজেলা প্রকল্প ব্যবস্থাপক, মো. ফরিদুল আলম জানান, ” উপজেলার ১৯৩টি পাড়াকেন্দ্রের আওতাভুক্ত পরিবারের নারী ও কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে বিশেষ উঠান বৈঠক পরিচালনা করা হয়। উঠান বৈঠকে নারী ও শিশুদের পুষ্টিহীনতা রোধে করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।

পুষ্টিহীনতায় ভুগলে শিশুর নানা ধরনের অসুখ-বিসুখ হয়ে থাকে। তিনি আরো জানান,জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহের প্রতিটি দিবসে এবং সমাপনীতেও আমাদের সমাপনী কার্যক্রমে এ সবার প্রতি আহ্বান শাক-সবজি, ফলমূলসহ সুষম খাবার, তেল, চিনি, লবণ কম খাওয়া, সঠিক পুষ্টির জন্য শিশুর জন্মের এক ঘন্টার মধ্যে শাল দুধ খাওয়ানো। ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মাত্র মায়ের বুকের দুধ এবং ৬ মাস বয়স পূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি ঘরে তৈরি সুষম পরিপূরক খাবার খাওয়ানো। কিশোর-কিশোরীদের ফাস্ট ফুড বাদ দিয়ে পুষ্টিকর খাবারে উৎসাহিত করাসহ গর্ভবতী ও প্রসূতিদের স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি বাড়তি খাবারে নজর দেওয়ার বিষয়ে ধারণা দেওয়া হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রতন খীসা বলেন, জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ উপলক্ষে আমরা স্বাস্থ্যকর্মী, স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ব্র্যাক স্বাস্থ্যকর্মী ও সবচেয়ে বেশি জনবল থাকা পাড়াকর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে তৃণমূলে উঠোন বৈঠক, সভা ও পাড়ায় পাড়ায় পাড়াকেন্দ্রে নারী,কিশোরীদের নিয়ে নানা ধরণের কর্মসূচিতে দিবসটি পালিত হয়েছে।

Exit mobile version