parbattanews

মানিকছড়িতে ন্যাপ এগ্রো পোট্রির বর্জ্যে পরিবেশ দূষণ

মানিকছড়ি প্রতিনিধিঃ
খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম সড়ক সংলগ্ন মানিকছড়ির গবামারার বিশাল এলাকা জুড়ে গড়ে উঠেছে নাপ এগ্রো লিমিটেড। পোল্ট্রি শিল্প কেন্দ্রিক এ প্রতিষ্ঠানে নিয়ম- নীতির তোয়াক্কা না করেই অবাধে উন্মুক্ত জায়গায় ফার্মের মরা মুরগী ও বর্জ্যগুলো পুড়ানোর কারণে জনপদ দূষিত হচ্ছে প্রতিক্ষণে! স্থানীয়রা এর প্রভাব থেকে
প্রতিকার পাচ্ছেনা বলে অভিযোগ রয়েছে।

সরজমিনে দেখা গেছে,মানিকছড়ি উপজেলার গবামারা এলাকায় খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ঘেঁষে ৫ একর টিলা ভূমির ওপর গত ২০১৪ সালে গড়ে উঠে নাপ এগ্রো লিমিটেড নামে একটি পোল্ট্রি শিল্প।

চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী আলহাজ্ব পেয়ার মোহাম্মদ নামের এক ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানটি মালিক হলেও মূলত এখানকার হর্তাকর্তা ম্যানাজার মো. রেজাউল করিম। বিশাল এলাকা জুড়ে এ প্রতিষ্ঠানটির স্থাপনা নির্মাণকালে উপজাতি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কর্তৃক বাধা প্রদান করা হলে কিছু দিন নির্মাণ কাজ থমকে ছিল।

পরে মালিক স্থানীয় একটি চক্রের সহায়তায় ওই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সাথে গোপনে সমঝোতায় আবদ্ধ হয়।
বিষয়টি কোন পক্ষই স্বীকার না করলেও অভিযোগ রয়েছে প্রতি বছর এ ফার্ম থেকে ৩ গ্রুপ পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা প্রতি মাসে ৩ লক্ষ টাকা চাঁদা নিচ্ছে।

তবে ফার্ম কর্তৃপক্ষ নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই দেদারসে এ প্রতিষ্ঠানে (পোল্ট্রি ফার্ম ) উৎপাদন চালাচ্ছে! শুরু থেকেই এ ফার্মের ৪টি শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত সেডে প্রায় ১৫ হাজার মুরগী নিয়মিত ডিম দিচ্ছেে। এতে ফার্মের বর্জ্য এবং মরা মুরগীসহ যাবতীয় আর্বজনা স্থায়ী শোধনাগারে রেখে ধ্বংস কিংবা মাটিচাপার উদ্যোগ না নিয়ে খোলা জায়গায় প্রতিদিন তা পুড়িয়ে পরিবেশ দূষিত করছে!

এতে ফার্ম সংলগ্ন শতাধিক পরিবারের ছেলে-মেয়ে, বয়োবৃদ্ধরা দূর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। স্থানীয়রা এ
বিষয়ে একাধিকবার ফার্মের মালিকের সাথে কথা বলতে চাইলেও ম্যানাজার সে সুযোগ টুকু দেয়নি! ফলে
বছরের পর বছর দূষিত হচ্ছে এখানকার পরিবেশে। ওদের ছেলে-মেয়ে এবং বয়োবৃদ্ধরা শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ
রোগে ভুগছে প্রতিক্ষণ!

ফার্মের ৫০ পাশে বসবাসকারী মো. সোলেমান, মো. কামাল হোসেনসহ ৮/১০জন যুবক ও বয়োবৃদ্ধ অভিযোগ করে বলেন, এ ফার্মে পোড়ানো বর্জ্য ও মরা মুরগীর পোড়া গন্ধে ২-৪ কিলোমিটার এলাকা দূর্গন্ধে একাকার হয়ে যায়। আমরা বহুবার এ বিষয়টি জনপ্রতিনিধিদের নজরে দিয়েছি।

ফার্মের ম্যানেজারের সাথে কথা বলেছি, কিন্তু প্রতিকার পাইনি! সবাই বলে, লোকজনের অল্প ক্ষতির কারণে
মালিক কোটি টাকার ব্যবসা বন্ধ করে দেবে না কী? এভাবে নিয়মিত ফার্মের দূর্গন্ধে এখানকার ঘরে ঘরে
ছেলে-মেয়ে ও বয়োবৃদ্ধরা এখন শ্বাসকষ্টে ভুগছে! আমরা এর প্রতিকার চাই।

সরেজমিনে গতকাল মানিকছড়িতে কর্মরত স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকের সাংবাদিকরা ফার্মে গেলেও
ম্যানেজার মো. রেজাউল করিম তাঁদেরকে গেইটের ভিতরে ঢুকতে দেয়নি! ফলে ম্যানেজারকে বাইরে
ডেকে এনে ফার্মের পরিবেশ সর্ম্পকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নতুন প্রতিষ্ঠান হয়েছে এখনো মরা মুরগী ও যাবতীয় বর্জ্য পরিশোধনের স্থায়ী সেড নির্মাণ সম্ভব হয়নি। তবে বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এভাবে প্রতিদিন বর্জ্য পুড়ানোর কারণে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে কী না ? জানতে চাইলে ম্যানেজার বলেন, এতে পরিবেশের কিছু হবে না! মালিকের মুঠোফোন নাম্বার চাইলে তিনি বলেন, মালিক এখানকার কারো সাথে কথা বলে না । আমার কাছে তাঁর মোবাইল নাম্বার ও নেই।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার যুথিকা সরকার বলেন, বিষয়টি সর্ম্পকে কেউ আমাকে জানায়নি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Exit mobile version