মানিকছড়িতে বাড়ছে ড্রাগন চাষ

fec-image

খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়িতে সৃজিত ড্রাগন ফল বাজারজাত শুরু করেছে এখানকার বাগান মালিকেরা। প্রতি কেজি ড্রাগন ফল ৩০০-৩৫০ টাকায় কিনে নিচ্ছে ভোক্তারা। এ বছর উপজেলার প্রায় ৭ হেক্টর টিলায় ৬০-৭০ টন ফল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে কৃষি বিভাগ। ২৫০-৩০০ গ্রাম ওজনের ড্রাগনের কেজি ৩৫০ টাকা এবং ২০০-২৫০ ওজনের কেজি ৩০০ টাকায় বাজারজাত করছেন বাগান মালিকেরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় ও বাগান মালিকেরা জানান, দীর্ঘস্থায়ী ও সুস্বাদু ড্রাগন ফল চাষে উদ্ধুদ্ধ হয়েছে এখানকার ১৫/২০জন শৌখিন বাগান মালিক। এদের সৃজিত ড্রাগন প্রথমে স্থানীয় বাজারে কেনাবেচা হওয়ায় অচেনা ও সুস্বাদু ফলটি এখন মূখরোচক ফল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। ফলে গত এক বছরে প্রায় ২ হেক্টর টিলায় ড্রাগনের আবাদ বেড়েছে। উপজেলায় এবার ৬ হেক্টরের অধিক টিলা ও ১ হেক্টর সমপরিমাণ বাড়ির ছাদ ও আঙ্গিনায় ড্রাগন সৃজন করেছে মানুষ। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে এ বছর ড্রাগনের ফলন ভালো হওয়ার লক্ষণ রয়েছে। যার পরিমাণ হতে পারে ৬০-৭০ টন।

চলতি সপ্তাহের শুরু থেকে ড্রাগন গাছের ডগায় ডগায় আসা ফল পেকে লাল, লাল হয়ে লোভনীয় স্বাদে ভোক্তাদের মন কাড়তে শুরু করেছে। ৫/৬ বছরের পুরনো বাগানে ফলন ভালো হওয়ায় ২০০-২৫০ গ্রাম ওজনের কেজি-৩০০টাকা এবং ২৫০-৩০০ গ্রাম ওজনের কেজি সাড়ে ৩০০ টাকায় বাগান থেকে কিনে নিচ্ছে ক্রেতা ও পাইকারেরা।

বড়ডলু মাস্টারপাড়ার অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য গণমাধ্যমকে বলেন, আমি শখের বসে ৭/৮ টি ড্রাগন গাছ লাগিয়েছি। বয়স মাত্র ২ বছর। এ বছর গাছে প্রচুর ফলন হয়েছে। ফল পাকায় মানুষজন কিনতে আসছে। কেজি সাড়ে ৩০০ টাকা বিক্রি করছি।

শুক্রবার (১০ জুন) বিকেলে গাড়ীটানাস্থ প্রফেসর মো.মাসুদ চৌধুরীর বাগানে গিয়ে দেখা প্রায় ৪ একর টিলার সৃজিত বাগানের ৩ একর পরিমাণ জায়গাজুড়ে ৫/৬ বছরের পুরনো বাগানে ফুল-ফলে ড্রাগন গাছ ঝুলে পড়ার উপক্রম। এ সময় বাগান মালিক জানান এ বছর প্রথম কাটায় ৩ টন ফল কেজি সাড়ে ৩০০ টাকা হারে পাইকারী বিক্রি করা হয়েছে। আগামী ৩ মাসে অন্তত ৫/৬ বার ফল কাটা সম্ভব হবে। এবার লক্ষ্যমাত্রা কমপক্ষে ২০ টন।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার নাথ গণমাধ্যমকে বলেন, ক্যাকটাস জাতীয় বৃক্ষ ড্রাগন মূলত ‘বেটা কেরোটিন ও ভিটামিন সি’ সমৃদ্ধ সুস্বাদু ও উচ্চ ফলনশীল একটি ফসল। শাঁস গাঢ় গোলাপি রংয়ের দানাযুক্ত পুষ্টিসমৃদ্ধ এই ফলটি চাষাবাদ এবং বাজারজাতে বড়বিল, চেঙ্গুছড়া, কর্নেল বাগান, কুমারী, পূর্ব তিনটহরী, বরইতলী, বড়ডলু মাস্টার পাড়া,গাড়ীটানা এবং সদরের বাসাবাড়ির ছাদ ও আঙ্গিনায়ও ড্রাগন চাষ করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসিনুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, বেটা কেরোটিন ও ভিটামিন সি’ সমৃদ্ধ ড্রাগন ফল অত্যান্ত সুস্বাদু ও উচ্চ ফলনশীল ফসল। বর্তমানে উপজেলার প্রায় ৭ হেক্টর ভূমিতে ড্রাগনের চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭০ মেট্রিক টন। রোগ-বালাই কম ও পুঁজি কমের কারণে অধিক লাভবানের আশায় পাহাড়ে ড্রাগন চাষ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। আমার তৃণমূলে এসব লাভবান ও পুষ্টিগুনে সমৃদ্ধ ড্রাগন ফল চাষাবাদে নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে কাজ করছি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন