মানিকছড়িতে সেনাবাহিনীর ওপর কাঠ পাচারকারীর হামলার ঘটনায় মামলা

মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধিঃ

মানিকছড়ির আন্তঃসড়কে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ কাঠ পাচার অপ্রতিরোধ্য হয়ে পড়ায় তা রোধ করতে সেনাবাহিনী সম্প্রতি তৎপর হয়ে ওঠে। গত দু’দিনে পৃথক অভিযানে ৯শ ঘটফুট চোরাই কাঠ আটক করতে গিয়ে পাচারকারীর বাঁধার মুখে পড়ে সেনাবাহিনী! ফলে এ নিয়ে ১১ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে সেনাবাহিনী।

ফরেস্ট ও সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গেছে, মানিকছড়ির আন্তঃসড়ক দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রভাবশালী কাঠ ব্যবসায়ীর একটি সংঘবদ্ধ চক্র অবৈধভাবে কাঠ পাচার করে আসছে। পার্বত্যাঞ্চলের বনজ সম্পদ রক্ষায় সেনাবাহিনীর একাধিক অভিযানে ও তা দমেনি! গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার পৃথক অভিযানে মানিকছড়ি সাব জোনের সেনাবাহিনী ৯শ ঘনফুট কাঠ আটক করতে গিয়ে বাঁধার মূখে পড়তে হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাতে সেনাবাহিনীর দল চোরাই কাঠ বোঝাই ট্রাকের পিছু নিলে ট্রাক চালক গাড়ীর গতি বাড়িয়ে পালাতে থাকে এবং এক পর্যায়ে ৪৫০ঘনফুট কাঠসহ ট্রাক চ্রটমেট্রো-ট ১১-৪১৩১ আটক হয়। পরদিন আবার সেই ট্রাকেই অবৈধভাবে কাঠ বোঝাই করে রওয়ানা দিলে গোপন সংবাদে সেনাবাহিনী গাড়ীর পিছু নয় এতে ব্যবসায়ীরা সেনাবাহিনীর গাড়ীকে লক্ষ্য করে একাধিকবার কাঠের গুঁড়ি ফেলে বাঁধা সৃষ্টি করে।

এক পর্যায়ে ফটিকছড়ির ভূজপুর এলাকায় গিয়ে ট্রাকটি রাস্তার পার্শ্বের গর্তে পড়ে যায়। পরে গাড়ীটি আটক করে ৪৫০ঘনফুট গোল কাঠসহ ভূজপুর থানায় দেয়া হয়। ফলে এ নিয়ে গাড়ীটানা ও নারায়ণ হাট বনবিভাগে পৃথক দু’টি এবং ফটিকছড়ির ভূজপুর থানায় সরকারী কাজে বাঁধা ও সেনা সদস্যদের হত্যা চেষ্টার অভিযোগ এনে সেনাবাহিনীর মানিকছড়ি ক্যাম্পের ওয়ারেন্ট অফিসার মো. গোলাম মোস্তফা স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. শফিকুল ইসলাম ও ট্রাক চালকসহ ১১ জনকে আসামী করে ১২ জুলাই ভূজপুর থানায় মামলা নং ৭, ধারা ১৮৬/৩৫৩ দ.বিধিসহ ১৯২৭ সালের বন আইনের ৪২ ধারায় মামলা রজু করেন। ভূজপুর থানার ও.সি মো. কবির হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন । গাড়ীটানা বন বিভাগের রেঞ্জার ননী গোপাল দাস বলেন, নিজস্ব জনবল কম থাকায় আন্তঃসড়কে নিয়মিত চোরাই কাঠ জব্দ করা কঠিন, ফলে সেনাবাহিনীর টহলে যেসব কাঠ আটক হচ্ছে বনবিভাগ তা বন আইনে মামলা রজু করছে।

এ প্রসঙ্গে সিন্দুকছড়ি জোন কমান্ডার লে.কর্নেল রাব্বি আহসান গতকাল রবিবার বলেন, পারমিট বিহীন কাঠ পাচার রোধে সেনাবাহিনী বন সম্পদ রক্ষায় ভূমিকা রাখছে, কিন্তু অবৈধ কাঠ পাচারকারী দল সেনাবাহিনীর গাড়ীকে লক্ষ্য করে হামলার চেষ্টা অত্যন্ত দুঃখজনক, যার কারণে সেনা সদস্য বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। তিনি আরো বলেন, আইন মেনে ব্যবসা করতে কোন বাঁধা নেই।