মো. ইমরান হোসেন, মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধিঃ
মানিকছড়ির কালাপানির আদম আলীর স্ত্রী আনোয়ারা বেগম ২০১২ সালে সন্তান প্রসবকালে মৃত্যুবরণ করলেও বেঁচে যায় শিশু জাহাঙ্গীর হোসেন। পরবর্তীতে নিকট আত্মীয়দের যত্নে বেড়ে উঠে জাহাঙ্গীর। কিন্তু ঘরে সৎ মা বলে কথা। নিয়মিত অত্যাচার ও নির্যাতন সইতে না পেরে গতকাল শুক্রবার বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে জাহাঙ্গীর (১২)!
জানা গেছে, ২০১২ সালে সন্তান প্রসবকালে আনোয়ারা বেগম মারা যাওয়ার পর শিশু জাহাঙ্গীরকে নিকট আত্মীয়রা লালন পালন করে। পরবর্তীতে পিতা আদম আলী ফাতেমা বেগম নামক মহিলাকে বিয়ে করে। এদিকে জাহাঙ্গীর তার চাচা, জেঠাদের কাছে বড় হতে থাকে। ৫/৬বছর হওয়ার পর তার সৎ মা ফাতেমা বেগম ছেলেটিকে ঘরে তুলে নেয়। ধীরে ধীরে শুরু হয় তাকে দিয়ে ঘরের কাজ কর্ম করানো। নিয়মিত খাদ্য ও কিংবা চিকিৎসা, শিক্ষা তার কপালে জুটেনি। অব্যাহত নির্যাতন সইতে না পেরে গতকাল শুক্রবার বিকালে শিশু জাহাঙ্গীর বিষপান করে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
এ খবর জানতে পেরে আত্মীয়রা তাকে দ্রুত মানিকছড়ি হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসক ডা. মহিউদ্দিন জানান, ছেলেটি অধিক মাত্রায় বিষপান করেছে। বর্তমানে তার চিকিৎসা চলছে। এখনো আশংকামুক্ত নয়। হাসপাতালে অসুস্থ জাহাঙ্গীর এক নিকট আত্মীয় কান্নাজড়িত কণ্ঠে এ প্রতিবেদককে জানান সৎ মায়ের নির্যাতনের বিভৎস চিত্র। পিতা সামান্য কলা ব্যবসায়ী, সকালে ঘর থেকে বেড়িয়ে গিয়ে গভীর রাতে ঘরে ফিরে আসে।
এ সুযোগে সৎ মা তাকে দিয়ে গরু, ছাগল চড়ানোসহ নানাবিধ কাজ কর্ম করালেও ঠিকমত খাবার না দিয়ে অত্যাচার চালাত। প্রতিবাদ করলে মারধরসহ অমানবিক নির্যাতন করতে দ্বিধাবোধ করত না। নিরুপায় হয়ে সে ঘরে রক্ষিত বিষের বোতল থেকে বিষপান করে মরতে চেয়েছিল। ভাগ্যক্রমে আত্মীয়রা যথাসময়ে দেখে ফেলায় হাসপাতালে নিয়ে আসে।