parbattanews

মানিকছড়ি কলেজে উপবৃত্তির তালিকায় রদ-বদল: এতিম ও হত-দরিদ্ররা বঞ্চিত, শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ

000-copy

মানিকছড়ি প্রতিনিধি:

মানিকছড়ি গিরিমৈত্রী ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির তালিকা প্রস্তুতে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। গত এক সপ্তাহে দু’বার তালিকায় রদ-বদল স্বত্বেও এতিম ও হত-দরিদ্ররা এখনো বঞ্চিত। ছাত্রলীগের আবদার রক্ষায় হের-ফের!

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মানিকছড়ি গিরিমৈত্রী ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণিতে ২০১৬-১৭শিক্ষাবর্ষে উপবৃত্তির তালিকার জন্য আটশতাধিক শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪ শতাধিক আবেদন গত ২৯ সেপ্টেম্বর প্রিন্সিপালের জন্য ২০টি কোটা সংরক্ষিত রেখে বাছাই কমিটি কর্তৃক যাছাই-বাছাই শেষে ১ অক্টোবর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তা অনুমোদন করেন। ফলে নোটিশ বোর্ডে শিক্ষার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এ খবর পেয়ে কলেজ ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ তালিকায় বাদপড়া ২০ জনের একটি তালিকা নিয়ে প্রিন্সিপালের সাথে দেখা করেন। পরে প্রিন্সিপাল প্রকাশিত তালিকা নোটিশ বোর্ড থেকে সরিয়ে নেন। ফলে এ নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের এ  মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। গত ২-৩ দিন ধরে প্রিন্সিপাল কাউকে কিছু না জানিয়ে আবারও তালিকায় ব্যাপক রদ-বদল করে তা ৫ অক্টোবর প্রকাশ করেন। প্রকাশিত এ তালিকা নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা। এ তালিকার ১৬৮ জন সুবিধাভোগী (ছাত্র-৪৮, ছাত্রী-১২০) ছাত্রছাত্রীর মধ্যে ১০০ জন উপজাতি এবং মাত্র ৬৮জন বাঙ্গালী ছেলে-মেয়ের নাম থাকায় স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠে প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে।

উপজেলার অজপাড়া গা কালাপানির স্কুলপাড়ার হত-দরিদ্র পরিবারের সন্তান (রোজিনা ছন্দনাম) জানান, আমার পিতা একজন দিনমজুর। অনেক আশা নিয়ে কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম। উপবৃত্তির প্রথম তালিকায় আমার নাম ছিল। আমি ডাচ্ বাংলা ব্যাংকে হিসাব খোলেছি। কিন্তু আজ জানতে পারলাম ২য় তালিকায় আমার নাম নেই!

পিতৃহীন জনৈক শিক্ষার্থী আক্ষেপ করে বলেন, এতিম হয়েও প্রিন্সিপালের তালিকায় নাম অর্ন্তভূক্ত হলো না! অথচ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী ছাত্র নেতাদের চাপে প্রিন্সিপাল পাহাড়ী-বাঙ্গালী বিভাজন করেছে। প্রিন্সিপাল নিজের অনিয়ম ও দুর্নীতি ঢাকতে নেতাদেরকে খুশি করেছেন।

সড়ক দূর্ঘটনায় পঙ্গু  যুবলীগ নেতা রনি দাশের কন্যা শ্রাবণী দাশ বলেন, আমাদের পরিবার আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত, আমার পিতা যুবলীগ নেতাও বটে। সম্প্রকালে সড়ক দূর্ঘটনায় আমার পিতার হাত-পা ভেঙে এখন ঘরে বসা। টাকার অভাবে পায়ে সংযুক্ত রিং খুলতে পারছেনা। আবেদনে আমার পরিবারের বর্ণনা থাকা স্বত্বেও আমার নাম প্রথম তালিকা থেকে প্রিন্সিপাল নিজেই বাতিল করেছেন!

এ প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল মংচাইঞো মারমা সাংবাদিকদের জানান, গত ১ অক্টোবরের প্রকাশিত তালিকায় চাকুরীজীবি ও বৃত্তবানদের ছেলে-মেয়ের নাম অর্ন্তভূক্ত হয়েছিল বিধায় নুতন করে এ তালিকা করা হয়েছে। এছাড়া কলেজ ছাত্রলীগ নেতারা ২০ জনের জন্য সুপারিশ করায় তা রাখতে গিয়ে কিছুটা হের-ফের হতে পারে। তবে স্বচ্ছভাবে তালিকা করা চেষ্টা করেছি। তাহলে এতিম ও হত-দরিদ্ররা কেন উপবৃত্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলো, জানতে চাইলে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান!

Exit mobile version