মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে রাখাইনে নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন রোহিঙ্গারা

fec-image

রোহিঙ্গা পরিস্থিতি দেখতে কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে এসেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলিয়েটা ভ্যালস নয়েস।

তিনি সোমবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে কক্সবাজার শহর থেকে সড়কপথে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ক্যাম্প কুতুপালংয়ে যান। আগের দিন বিকেলে তিনি ঢাকা থেকে বিমানে করে কক্সবাজারে পৌঁছান এবং সৈকত সংলগ্ন একটি পাঁচতারকা হোটেলে রাতযাপন করেন।

কুতুপালং শিবিরের চারপাশে ২০টির বেশি ক্যাম্পে ৫ বছরের বেশি সময় ধরে বাস করছে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে এ দেশে আশ্রয় নেয়া ৯ লাখ রোহিঙ্গা। সকাল সোয়া নয়টার দিকে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর গাড়ির বহর কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরে পৌঁছায়। প্রথমে তিনি ক্যাম্প-৯ এর সার্ভিস সেন্টার পরিদর্শন করেন। এরপর ক্যাম্প-৮ ডব্লিউ পরিদর্শন শেষে সেখানে ১০ থেকে ১৫ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী নারী-পুরুষের সঙ্গে কথা বলেন জুলিয়েটা ভ্যালস নয়েস।

রোহিঙ্গা নেতা কামাল হোসেন বলেন, মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের কাছে জানতে চেয়েছেন, আশ্রয় শিবিরে থাকার পরিবেশ কেমন? নিরাপত্তাব্যবস্থা কেমন? মিয়ানমারে ফিরে যেতে রোহিঙ্গারা রাজি কি না? মিয়ানমারে পরিবেশ কেমন ইত্যাদি। জবাবে কয়েকজন রোহিঙ্গা ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনী কর্তৃক বর্বর নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, গণহত্যা ও নিপীড়নের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা রাখাইনে ফিরতে রাজি। কিন্তু ফেরার আগে মিয়ানমার সরকার কর্তৃক রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীকে নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং যেখান থেকে রোহিঙ্গাদের বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে, সেখানেই পুনর্বাসন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি হস্তক্ষেপ চেয়েছেন রোহিঙ্গারা।

রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁদের বলেছেন, মর্যাদার সঙ্গে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র আগের মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। মানবিক সেবায় রোহিঙ্গাদের পাশে থাকবে দেশটি।

মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার খালিদ হোসেন। তিনি বলেন, সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশ্রয় শিবিরের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প, ত্রাণ ও চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা বলেন। কিন্তু সেখানে কী কথা হয়েছে, তা তিনি জানেন না। বিকেলে সড়কপথে কক্সবাজারে পৌঁছে বিমানযোগে ঢাকায় ফিরেছেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: নির্যাতন, মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী, রাখাইন
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন