মালয়েশিয়াগামী ট্রলার ডুবি, ১৫ রোহিঙ্গার মৃতদেহ উদ্ধার
সাগরপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে বঙ্গোপসাগরের সেন্টমার্টিনের অদূরে ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১১ জন রোহিঙ্গা নারী এবং ৪ জন শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৭০ জনকে। মোট জীবিত এবং মৃত উদ্ধার সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৮৫ জন।
মঙ্গলবার(১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে ১৫ জনের লাশ উদ্ধার ও ৭০জন মানুষকে উদ্ধার করা হয়। ট্রলার ডুবির ঘটনায় এখনো অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ট্রলার ডুবিতে নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগ রোহিঙ্গা। তাদেরকে সেন্টমার্টিন জেটিঘাটে নিয়ে আসা হয়েছে। স্থানীয় সংবাদকর্মী আবদুল মালেক জানান, এ পর্যন্ত ১৫ জনের মৃতদেহ দেখা যাচ্ছে। জীবিত উদ্ধারকারীদের বিভিন্ন সহযোগিতা ও প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছে সাধ্যমত সবাই।
জানা যায়, সোমবার রাতে টেকনাফ উপকূল দিয়ে দুটি ট্রলার মালয়েশিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাতটার দিকে সাগরের পাথরের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে একটি ট্রলার ডুবে যায়। এতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
উদ্ধারকৃতরা জানায়, তাদের সাথে ১‘শ ৫০জন যাত্রী ছিল বলে জীবিতরা জানান। উদ্ধারকৃত এসব রোহিঙ্গা নারী, শিশু ও পুরুষেরা উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পের বলে জানা গেছে।
কোস্টগার্ডের অপর একটি আভিযানিক দল ডুবে যাওয়া ট্রলারটি উদ্ধার এবং সাগরে জীবিত বা মৃতদেহ উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে। তাই মৃতদেহ বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা রয়েছে।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ ট্রলারডুবির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ডুবে যাওয়া ট্রলারের বেশিরভাগই রোহিঙ্গা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ কোস্টগার্ড পূর্বজোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লে: কমান্ডার শুভাশিস দাস জানান, এখনো পর্যন্ত ১৫জন মৃত এবং ৭০জনকে জীবিত উদ্ধার করে সেন্টমার্টিনে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
মানব পাচারের জন্য রোহিঙ্গা মজুদের সংবাদ পেয়ে টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশের নেতৃত্বে পুলিশের শক্তিশালী কয়েকটি দল উপকূলীয় এলাকায় সাড়াঁশি অভিযান শুরু করেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৪ জন দালালকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে মানব পাচার দমনে সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা জোর প্রচারণা চালালেও টেকনাফ সদরের লম্বরী, হাবিরছড়া, মিঠাপানিরছড়া, বাহারছড়ার নোয়াখালী পাড়া, জুম্মাপাড়া, কচ্চপিয়া, বাঘঘোনা বাজারসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে চিহ্নিত কতিপয় প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতা ও প্রশাসনের কতিপয় ব্যক্তির সাথে সখ্যাতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রহস্যজনকভাবে মানব পাচারের উৎসব চালাচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানান।