মিজোরামে বিপুল অস্ত্র উদ্ধার: গন্তব্য পার্বত্য চট্টগ্রাম

m16_17136

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পাচারের সময় ভারতের মিজোরাম রাজ্যের দুটি গ্রামে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে আসাম রাইফেলস। উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদগুলোর মধ্যে রয়েছে, ১২টি ম্যাগাজিনসহ পাঁচটি একে-৪৭ ও তিনটি একে-৫৬ রাইফেল। ভারতের সীমান্তরক্ষী আধাসামরিক বাহিনী এই অভিযান চালিয়েছে বলে জানা গেছে। এসব উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে আসা হতে পারে বলে বলে মিজোরাম পুলিশ সন্দেহ করছে। টাইমস অভ ইন্ডিয়া।

মিজোরাম রাজ্যের সেরচিপ জেলার কেতুম ও খলেলুঙ গ্রাম থেকে শুক্রবার ভোরে এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। এ সময় মিনচুঙ্গা (৫৫) ও ভেনপুইলালা (৩০) নামে দুই মিজো ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। ঊর্ধ্বতন পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন জেলার পুলিশ প্রধান লালরিংডিকা। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী গ্রাম দু’টি মিজোরামের রাজধানী আইজল থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দক্ষিণে।

13গহ

তিনি আরো জানান, উদ্ধারকৃত আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে পাঁচটি একে-৪৭, তিনটি একে-৫৬ রাইফেলের পাশাপাশি একে সিরিজ রাইফেলের ১২টি ম্যাগাজিন পাওয়া যায়। আর অস্ত্রগুলো প্রতিবেশী বাংলাদেশে নেওয়া হচ্ছিল বলে তিনি ধারণা করছেন।

গত ছয় মাসের মধ্যে সীমান্তরক্ষী বাহিনী আসাম রাইফেলসের হাতে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা বলে জানা গেছে। এর আগে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী রাজ্যের চাম্পাই জেলা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি আটটি এম ৪রাইফেল উদ্ধার করে তারা। আসাম রাইফেলস নামে ভারতের এই সীমান্তরক্ষী বাহিনী মিয়ানমারের সঙ্গে থাকা দেশটির এক হাজার ৬৪৩কিলোমিটার সীমান্ত পাহারায় নিয়োজিত।

এর আগে ২০১৪ সালের মার্চে মিজোরাম পুলিশ বাংলাদেশগামী বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করেছে। মিজোরামের পুলিশ প্রধান অলোক কুমার ভার্মা এবং উপপ্রধান এ কে পট্টনায়করে মতে, তাদের হিসাব অনুযায়ী দুদিন অর্থাৎ ৭ এবং ৮ মার্চ মিজোরামের আইজল শহরের কাছ থেকেই তারা বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করেন। পুলিশের তালিকা অনুযায়ী তারা ৪৬টি এ কে ৪৭ বন্দুক, তিনটি লাইট মেশিনগান, সেনাবাহিনীতে ব্রাউনি নামে পরিচিত দুটি রাইফেল , প্রচুর গোলাবারুদ এবং এ কে ৪৭ ও লাইট মেশিনগানের প্রচুর তাজা গুলি তারা উদ্ধার করে।

এদিকে ২০১৪ সালের অগাস্টে দেশটির আরেক সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ চোরাকারবারীদের কাছ থেকে আটটি একে সিরিজের রাইফেল উদ্ধার করে। তখন স্থানীয় তিন চাকমার সঙ্গে দুই বাংলাদেশি চাকমাকেও গ্রেফতার করা হয়। এভাবে মিয়ানমার থেকে মিজোরাম হয়ে এসব অস্ত্রের চালান বাংলাদেশে পার্বত্য এলাকায় পাহাড়িদের মধ্যে বিবাদমান দুটি পক্ষ ইউপিডিএফ ও পাবর্ত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সদস্যদের কাছে যায় বলে ধারণা করা হয়।

পার্বত্য চট্টগ্রামের চোরাই বাজার থেকে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও অনেক বিদ্রোহী রোহিঙ্গা গোষ্ঠীর পাশাপাশি বাংলাদেশি ধর্মীয় জঙ্গিরা এসব অস্ত্র পেয়ে থাকে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

পার্বত্য চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক অস্ত্র উদ্ধারের খবর :

১. পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিচুক্তি পরবর্তীকালে সেনাবাহিনীর সবচেয়ে বড় অস্ত্র উদ্ধার অভিযান

২. পার্বত্য চট্টগ্রাম- চাঁদাবাজির অভয়ারণ্য: নিরুপায় জনগণ: অসহায় সরকার

৩. বাঘাইছড়িতে সেনাবাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ৫ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার

৪. খাগড়াছড়িতে মেশিনগান, এসএমজি, এসএলআরসহ আবারো বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী

৫. বান্দরবানের রুমায় দুইটি বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল পরিমাণ গুলিসহ জেএসএস চাঁদাবাজ আটক

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: অস্ত্র উদ্ধার, আসাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন