parbattanews

মিঠুন চাকমা হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ’র বিক্ষোভ-সমাবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক,খাগড়াছড়ি:

ইউপিডিএফ নেতা মিঠুন চাকমাকে হত্যার প্রতিবাদে ও অবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) খাগড়াছড়ি ইউনিট।

বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভরস্থ জেলা কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি চেঙ্গী স্কোয়ার আসলে পুলিশের বাধা পেয়ে ফের স্বনির্ভর-এ প্রতিবাদ সমাবেশ করে।

ইউপিডিএফ-এর খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক মাইকেল চাকমার সঞ্চালনায় ও কেন্দ্রীয় সদস্য দেবদন্ত ত্রিপুরার সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিরুপা চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জিকো ত্রিপুরা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)’র খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি তপন চাকমা প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, মিঠুন চাকমার হত্যাকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের উদীয়মান তরুণ নেতৃত্বকে ধ্বংস করার জন্য রাষ্ট্র পরিকল্পিতভাবে নব্য মুখোশ বাহিনী দিয়ে মিঠুন চাকমাকে হত্যা করেছে। বক্তারা মিঠুন চাকমা হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন, অতীতে জনগণের প্রতিরোধে শাসকগোষ্ঠীর সকল ষড়যন্ত্র ভেস্তে গেছে। বর্তমানেও জনগণ শাসকগোষ্ঠীর সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে প্রস্তুত রয়েছে।

বক্তারা মিঠুন চাকমার আদর্শকে ধারণ করে শোককে শক্তি ও চোখের পানি অগ্নিতে  পরিণত করে অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।

বক্তারা বলেন, প্রত্যেক জাতির একটি সংগ্রামী ইতিহাস আছে। যা সেই জাতির জনগণকে আন্দোলনে উৎসাহ ও অনুপ্রাণিত করে। মিঠুন চাকমা ইউপিডিএফ-এর আন্দোলন সংগ্রামে ও জাতীয় মুক্তির সংগ্রামে ঠিক তেমনি অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। চির অম্লান হয়ে থাকবে। মিঠুন চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণকে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ভাষা, ঐতিহ্য নিয়ে আত্মমর্যাদার সাথে পৃথিবীর বুকে বেঁচে থাকার জন্য লড়াই সংগ্রামে যুক্ত ছিলেন। সংগঠনের মধ্য থেকে মেধা শূন্য করে দেওয়ার জন্য মিঠুন চাকমাকে হত্যা করা হয়েছে।

বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে রুপক-দেবোত্তম-অনিমেষসহ বহু উদীয়মান নেতাকর্মীকে হত্যা করে যেমনি ইউপিডিএফ-এর আন্দোলনকে দমন করা যায়নি, মিঠুন চাকমাকে হত্যা করেও পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের ন্যায্য আন্দোলনকে দমানো যাবে না।

সমাবেশ থেকে আগামী ১৪ জানুয়ারি ঘোষিত শহীদ মিঠুন চাকমার স্মরণে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও স্মরণ সভায় অংশগ্রহণ করার জন্য জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান।

প্রসঙ্গত,গত ৩ জানুয়ারি দুপুরে খাগড়াছড়ি শহরের স্লুইস গেইট এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে পাহাড়ি আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট’র  (ইউপিডিএফ) কেন্দ্রীয় নেতা মিঠুন চাকমা নিহত হয়।

মিঠুন চাকমার হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে ৬ ও ৭ জানুয়ারি পর পর দু’দিন ইউপিডিএফ’র  সড়ক অবরোধ পালনকালে খাগড়াছড়িতে ব্যাপক গাড়ি  ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, পুলিশের সাথে সংঘর্ষ এবং আধা সামরিক বাহিনীর বিজিবির গাড়ি বহরে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।

উল্লেখ, প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ১৯ বছর পর গেল বছরের ১৫ নভেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রভাবশালী পাহাড়ি আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ ভেঙ্গে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক নামে আরো একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। বিভক্তির পর সংগঠনটির কোন নেতাকর্মী প্রথম হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন।

Exit mobile version